Tripura Kathaliya News : ত্রিপুরার কাঠালিয়া ব্লকের অন্তর্গত কালী কৃষ্ণনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে মঙ্গলবার ৮ দফা দাবিকে সামনে রেখে এক প্রতিনিধি দল ডেপুটেশন জমা দেয় পঞ্চায়েত সচিবের কাছে। ত্রিপুরা ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকার শাখা কমিটির পক্ষ থেকে এই প্রতিনিধি দল পেশ করেন প্রেমানন্দ মজুমদার, স্বপন শীল, মমিন মিয়া ও নাসির মিয়া প্রমুখ। এই সময় পঞ্চায়েত মাঠে সংগঠনের প্রায় ১৫ জন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ডেপুটেশন প্রদান শেষে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সংবাদকর্মীদের জানান, দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর ধরে পঞ্চায়েত এলাকার সাদাটিলা, হিম্মতপুর, রাজেন্দ্রসহ একাধিক সীমান্ত গ্রামে গ্রামীণ রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে এলাকাবাসী চরম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়াও কৃষ্ণনগর পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে চোখের চশমার অভাব দেখা দিচ্ছে। রেগার কাজও নিয়মিতভাবে হচ্ছে না, যা সাধারণ মানুষের জীবিকাকে প্রভাবিত করছে।
দাবিসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
1)এলাকার একাধিক ভগ্ন রাস্তার দ্রুত সংস্কার।
2)রাস্তার মেটিং ও কার্পেটিং-এর প্রয়োজনীয়তা।
3)বিভিন্ন পাড়ায় জনগণের স্বার্থে উন্নয়নমূলক কাজের ত্বরান্বিত প্রয়াস।
4)কালিশনগর বাজারে একটি কমিউনিটি হল নির্মাণ।
5)বেকার যুবকদের স্বার্থে একটি মার্কেট স্টল নির্মাণের দাবি।
পঞ্চায়েত সচিব প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতের আওতাধীন কিছু দাবিকে বিবেচনার বিষয় হিসেবে ভাবা হচ্ছে এবং ব্লক স্তরে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দাবিগুলি নিয়ে ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে যে, জনগণের স্বার্থে পেশকৃত দাবিগুলি প্রশাসনিক স্তরে যথাযথ গুরুত্ব পাবে।
প্রসঙ্গত, সরকার যেখানে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে শোভাযাত্রা ও অনুষ্ঠান উদযাপন করতে, সেখানে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে চোখ পরীক্ষার মতো ন্যূনতম পরিষেবাও অনুপস্থিত। রেগার কাজ নিয়মিত না হওয়ায় সাধারণ শ্রমজীবী মানুষেরা উপার্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অথচ সরকারি পরিসংখ্যানে দেখানো হচ্ছে কর্মসংস্থানের গল্প।
প্রতিনিধিরা অভিযোগ করেন, পঞ্চায়েত ও ব্লক স্তরে জনসংযোগ কার্যত নেই। সমস্যা জানানো হলেও কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। এর ফলে জনমানসে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। পঞ্চায়েত সচিব প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন, কয়েকটি দাবি বিবেচনা করে দেখা হবে এবং ব্লক স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বারবার রাস্তার অবস্থা নিয়ে প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শুধু কাগজে রিপোর্ট পাঠানো ও কথার প্রতিশ্রুতি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে চলেছে সরকার ও পঞ্চায়েত।
অনেকেই মনে করছেন, এই ধরনের অবহেলা ও অযোগ্যতার বিরুদ্ধে গণআন্দোলন আরও জোরালো হওয়া উচিত। প্রতিনিধি দলের দাবি, “এটা আর শুধু রাস্তার বা বাজারের কথা নয়—এটা মানুষের মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন।