Tripura Girl Sneha Debnath : ৭ দিন যাবত নিখোঁজ ত্রিপুরার দক্ষিন জেলার বাসিন্দা পেশায় প্রাক্তন আর্মি জওয়ান প্রীতিশ দেবনাথ এর মেয়ে স্নেহা দেবনাথ। দিল্লী তে কর্ম সুত্রে বাবা মায়ের সাথে থাকতেন স্নেহা। দিল্লীর আত্মারাম কলেজের ছাত্রী ছিলেন। ৭ই জুলাই বান্ধবী পিটুনিয়া কে দিল্লীর সাড়াই রহিল্লা রেল স্টেশনে ছাড়তে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেড় হয়ে যমুনা নদীর সিগনেচার ব্রিজ এ গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় স্নেহা। এফআইআর হলেও পাওয়া যায়নি তার হদিশ। অবশেষে মা বাবা আত্মিয় পরিজন সকলকে স্তম্ভিত করে দিয়ে উদ্ধার হল নিখোঁজ স্নেহার নিথর দেহ।
দিনটা ছিল ৭ই জুলাই। সকালে মা বাবা কে বলে যায় স্নেহা, সে তার বান্ধবী পিটুনিয়া কে রেল স্টেশনে ছাড়তে যাচ্ছে। সেই মোতাবেক একটি ক্যাব বুকিং করে রেল স্টেশনের উদ্দেশ্যে রউনা হয় স্নেহা। ক্যাব টি তাকে সিগনেচার ব্রিজ এ ছেড়ে দিয়ে ফিরে যায়। এর পর থেকেই মোবাইল বন্ধ স্নেহার। তার মা বাবা ফোনে মেয়েকে না পেয়ে পিটুনিয়া কে ফোন করলে পিটুনিয়া জানায় স্নেহা সেদিন স্টেশনেই পৌছায় নি। সাথে সাথে উত্তর দিল্লীর মেহেরুলী স্টেশনে একটি এফআইআর দায়ের করেন স্নেহার বাবা মা।
শুরু হয় তল্লাশি। তবে অনেকটা দেরিতে। পরিবারের অভিযোগ পুলিশ প্রথম অবস্থায় বিষয় টিকে গুরুত্ব দেয়নি। পরে চাপে পরে কিছুটা তল্লাশি প্রক্রিয়া চালু হয়। তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায় সিগনেচার ব্রিজ এলাকায় যে কটি সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল প্রায় সবকটিই বন্ধ থাকার কারণে স্নেহা কে খুঁজে বেড় করা আরও মুশকিল হয়ে পরে। কিছু কিছু সূত্রের দাবী ঐ এলাকায় প্রায় ৬০ টি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু সব গুলোই নাকি নষ্ট। যা নিয়ে এক প্রকার সন্দেহ ডানা বেঁধেছে।
এদিকে ঘটনার পর পরই সামাজিক মাধ্যমে ত্রিপুরার তরুনী স্নেহার নিখোঁজ হবার ঘটনা চাউর হতেই তা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং রবিবার সিএমও অফিস এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় পুলিশ কে। অতঃপর এদিনই রাতের বেলায় দিল্লী স্থিত যমুনা নদী তে ভেসে উঠে স্নেহার দেহ। যা উদ্ধার করে আনা হয়। পুলিশের দাবী এটি আত্মহত্যার ঘটনা। যদিও এই নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠছে।
৭ দিন আগে আত্মহত্যা করলেও ৭ দিন পর স্নেহার দেহ ভেসে উঠে, অথচ তার দেহে কোনো ধরণের পচন ধরেনি যা অত্যন্ত অস্বাভাবিক বিষয়। একই সাথে এতগুলো সিসি ক্যামেরা বন্ধ, পুলিশ তদন্ত আদৌ করেছে কিনা সেটা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। স্নেহার পরিবার পরিজন এর দাবী সে আত্মহত্যা করতে পারেনা, তার এধরণের ঘটনা ঘটাবার মতো কোনো কারণই নেই। তাকে কে বা কারা হত্যা করে জমুনায় ফেলে দিয়েছে, এমনটাই দাবী করছেন পরিবার।
যদিও স্নেহার দেহ ময়নাতদন্তের জন্যে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে রিপোর্ট না আসা অব্দি তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাচ্ছে না। তবে এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয় । দিল্লী বর্তমান সময়ে দেশের একটি অন্যতম অপরাধের কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মহিলাদের জন্যে যে দিল্লীর মতো একটি জায়গা কতটা নিরাপত্তা হীন তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
দিল্লী তে কেজরিওয়াল সরকারের পর বিজেপির নয়া সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও অপরাধের ক্ষেত্রে লাগাম টেনে ধরতে পারছেনা এই নয়া সরকারও। যেখানে গোটা দেশ এর আইন কানুন সুনির্দিষ্ট করণ হয় সেই রাজ্যেই আইনের শাসন চূড়ান্ত ব্যর্থ , এর চাইতে লজ্জার বিষয় আর কি হতে পারে ?
স্নেহা দেবনাথ এর মৃত্যুর পেছনে আসল রহস্য কি তা যাতে উন্মোচিত হয় এমনটাই চাইছেন ত্রিপুরার আপামর সাধারণ জনগণ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও যাতে বিষয় টি একেবারে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের মধ্যে দিয়ে সত্য উন্মোচিত হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখেন এমনটাও সামাজিক মাধ্যমে জানিয়ছেন সকলে। দেখার বিষয় স্নেহা দেবনাথ এর মৃত্যুর পেছনে আসল রহস্য উন্মোচন হয় কিনা।