Tripura Electricity Department : ত্রিপুরায় বিদ্যুৎ নিগমের আউটসোর্সিং কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরেই নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বহু বছর ধরে একই সংস্থার অধীনে কাজ করলেও তাঁদের বেতন ভাতা এবং অন্যান্য প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতির প্রতিবাদে ও ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সোমবার টাউনহলের সামনে থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন কর্মীরা। পরবর্তীতে তাঁরা বিদ্যুৎ দপ্তরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)-র নিকট এক ডেপুটেশন জমা দেন।
অভিযোগ, গত পাঁচ বছর ধরে ত্রিপুরা স্টেট ইলেকট্রিসিটি কর্পোরেশন লিমিটেডের সহযোগী সংস্থা ভিশন প্লাস-এর অধীনে প্রায় ৬০০ জন কর্মী বিভিন্ন পদে নিযুক্ত আছেন। তাঁদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে প্রতিবছর বেতন বৃদ্ধি করা হবে। কিন্তু আজও সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। ন্যূনতম বেতনে সংসার চালাতে গিয়ে দারুণ সংকটে পড়তে হচ্ছে শ্রমিকদের।
শুধু তাই নয়, গত ছয় মাস ধরে তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন কর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কর্মীদের জানানো হয়, বিদ্যুৎ দপ্তরের তরফেই বকেয়া বেতন মেটানো হয়নি। ফলে দফতর ও সংস্থার টানাপোড়েনের মধ্যে পড়েই বিপাকে পড়েছেন এঁরা।
এক কর্মীর কথায়, “আমরা প্রতিদিন মাঠে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কাজ করি। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আমাদের ভূমিকা অপরিহার্য। অথচ ন্যায্য প্রাপ্য বেতন থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। পরিবার চালানোই এখন দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
এই অবস্থায় আউটসোর্সিং কর্মীরা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. চাকরির নিয়মিতকরণ।
২. প্রতি মাসে নিয়মিত ও সময়মতো বেতন প্রদান।
৩. কর্মীদের জন্য ইপিএফ, ইএসআই ও মেডিকেল ছুটির ব্যবস্থা।
৪. কাজের প্রয়োজনে নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ।
৫. বিদ্যুৎ দপ্তরের অধীনে দীর্ঘদিন কর্মরতদের স্থায়ীভাবে স্বীকৃতি প্রদান।
কর্মীরা মনে করছেন, তাঁদের ন্যায্য দাবি পূরণ হলে কেবল আর্থিক সুরক্ষা নয়, কাজের ক্ষেত্রেও নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হবে। অন্যথায় ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে তাঁরা বাধ্য হবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এই ঘটনায় সাধারণ মানুষেরও কৌতূহল তৈরি হয়েছে। কারণ বিদ্যুৎ পরিষেবা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে যাঁরা প্রতিনিয়ত পরিশ্রম করছেন, তাঁদেরই যদি ন্যায্য প্রাপ্য না মেলে, তবে তার প্রভাব সাধারণ পরিষেবাতেও পড়তে পারে।
এখন দেখার বিষয়, বিদ্যুৎ দপ্তর কর্মীদের দাবি কতটা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে এবং সমস্যার সমাধানে কী পদক্ষেপ নেয়।