খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Wednesday, 16 July 2025 - 07:50 AM
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫ - ০৭:৫০ পূর্বাহ্ণ

Tripura Cpim : প্রযুক্তির নামে পকেট কাটা চলছে!” – বিদ্যুৎ, জল ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে রাজ্যে তীব্র রাজনৈতিক উত্তাপ

Tripura Cpim
1 minute read

Tripura Cpim : স্মার্ট মিটার বসানো নিয়ে বেশ কয়েকদিন যাবতীয় ত্রিপুরায় তৈরি হয়েছে উত্তাল পরিস্থিতি । দেখা যাচ্ছে একেক সময় লাগামহীন বিদ্যুৎ বিল আসছে অনেকেরই। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধীদল গুলিও এবার মাঠে নেমেছে এই স্মার্ট মিটার বসানোর বিরুদ্ধে।

বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি, স্মার্ট মিটার বসানো, পাইপলাইন ও সিএনজি গ্যাসের দরবৃদ্ধি এবং জলের মাশুল বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে বিরোধী দল সিপিআইএম তীব্র প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছে।

সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের প্রাক্তন বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে এবং বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী বিজেপি সরকারকে “জনস্বার্থবিরোধী, ব্যবসায়িক সরকার” বলে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন।

প্রাক্তন বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে এক স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বলেন —
“আমরা স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে নই, কিন্তু জনগণের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে যদি প্রযুক্তি চাপিয়ে দেওয়া হয়, তবে সেটা জনগণের সর্বনাশ ডেকে আনবে।”

তিনি আরও বলেন –

“এই স্মার্ট মিটার নষ্ট হলে সাধারণ পরিবার ৭-৮ হাজার টাকা খরচ করে নতুন মিটার কিনতে পারবে না। তার দায় কে নেবে? সরকার কি দায়িত্ব নিচ্ছে, না সেই দায় চাপবে গরিব গ্রাহকের ঘাড়ে?”

এছাড়াও তিনি স্মার্ট মিটারে সম্ভাব্য প্রযুক্তিগত ত্রুটি, ভুল বিলিং, এবং গ্রাহক সুরক্ষার ঘাটতি নিয়েও গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

ত্রিপুরা বিদ্যুৎ রপ্তানি করত, আজ তা আমদানি করতে হয়!
সিপিআইএম পলিটব্যুরো সদস্য ও বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন —

“বিগত সময়ে ত্রিপুরা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুৎ সরবরাহ হত। আজ সামান্য বৃষ্টিতেই রাজ্যে সপ্তাহব্যাপী বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা যায়। এটা ‘ট্রিপল ইঞ্জিন’ সরকার চালনার ফল।”

তিনি আরও দাবি করেন –

“এই সরকার গত সাড়ে সাত বছরে এক ওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা পর্যন্ত করতে পারেনি। কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে শুধু ফ্লেক্স, ব্যানার আর বিজ্ঞাপন প্রচারে।”

সিপিআইএম আশঙ্কা প্রকাশ করছে যে স্মার্ট মিটার প্রকল্প আসলে সরকারি পরিষেবাকে গোপনে বেসরকারিকরণের পথে ঠেলে দেওয়ার প্রাথমিক ধাপ।

“বিদ্যুৎ মাশুল হঠাৎ ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা হয়ে যাচ্ছে! এর কি কোন ব্যাখ্যা আছে? অথচ মন্ত্রী একটাও বাস্তবসম্মত উত্তর দিতে পারলেন না।

ত্রিপুরা সরকার বিদ্যুতের পাশাপাশি জলের মাশুলও বৃদ্ধি করেছে, যা নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
সিপিআইএমের মতে, “এ এক ‘ডাবল আক্রমণ’, জনজীবন চূড়ান্তভাবে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।”

বিরোধীদের অভিযোগ, সরকার বলছে গ্যাসের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে, তাই এখানে দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তব হল –

“ত্রিপুরা নিজেই প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন করে। তাই আন্তর্জাতিক বাজারের দামবৃদ্ধির যুক্তি খাটে না। এটা জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার সমান,” — সাফ কথা জিতেন্দ্র চৌধুরীর।

সোমবার বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ বিজেপি পার্টি অফিসে দীর্ঘ সাংবাদিক সম্মেলন করেন।
সিপিআইএমের অভিযোগ,

“মন্ত্রী সরকারি বিষয়ের ব্যাখ্যা না দিয়ে দলীয় প্রেক্ষাপটে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন, যা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির লঙ্ঘন।”

মানুষের পকেটেই কি সব চাপ?
ত্রিপুরার সাধারণ মানুষ আজ প্রশ্ন তুলছে –

কেন প্রযুক্তির নামে অতিরিক্ত মাশুল চাপানো হচ্ছে?

বিদ্যুৎ পরিষেবা কেন এত বেহাল?

সব কিছুর দাম বাড়লেও আয় বাড়ছে না কেন?

এই দিন সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক রতন দাস-ও।

তারা জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে বিদ্যুৎ নিগম অফিসের সামনে শান্তিপূর্ণ ধরনা ও প্রতিবাদ শুরু করবে সিপিআইএম।
কারণ একটাই—বিদ্যুৎ, স্মার্ট মিটার আর গ্যাসের দাম এত বেড়ে গেছে, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন।

সিপিআইএম-এর হুঁশিয়ারি, সরকার যদি এই সিদ্ধান্ত থেকে না সরে, তাহলে প্রতিবাদ আরও জোরদার হবে।

For All Latest Updates

ভিডিও