Tripura Congress News : ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর ১৩৬তম জন্মজয়ন্তী ও শিশু দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। দিনের শুরুতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিধায়ক গোপালচন্দ্র রায় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি আশীষ কুমার সাহা। এরপর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন উপস্থিত নেতৃত্বরা। অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন সহ কংগ্রেসের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব ও কর্মী-সমর্থকেরা।
পতাকা উত্তোলনের পর কংগ্রেস ভবনে নেহেরুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন কার্যকর্তারা। পরে দলীয় নেতারা যান গান্ধীঘাটে অবস্থিত জহরলাল নেহেরুর শহীদ বেদীতে, যেখানে তাঁরা সম্মিলিতভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আশীষ সাহা বলেন, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেহেরুর অবদান আজও ভারতের ইতিহাসে অমর। তিনি উল্লেখ করেন, নেহেরুর জন্মদিন সারাদেশে শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয় কারণ তাঁর জীবদ্দশায় শিশুদের প্রতি যে গভীর স্নেহ ও মমত্ববোধ ছিল, তা আজও প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে। নেহেরু শিশুদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাতা হিসেবে দেখতেন এবং তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও মানবিক বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। আশীষ সাহা জানান, স্বাধীনোত্তর ভারতের আধুনিক গঠনে নেহেরুর নীতি, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, পঞ্চশীল নীতি এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমানে দেশের কিছু শক্তি ইতিহাস বিকৃতি ও জাতীয় বীরদের অবদানের গুরুত্ব খাটো করার চেষ্টা করছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে নেহেরুর ভূমিকা, তাঁর কারাবরণ এবং দেশকে আধুনিক রাষ্ট্রে রূপান্তরের স্বপ্ন—এসবই ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি দেশজুড়ে সংবিধানকে দুর্বল করার চক্রান্ত নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ডক্টর বি.আর. আম্বেদকর রচিত সংবিধানকে বিপন্ন করার যে প্রবণতা দেখা দিচ্ছে, তা গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আশীষ সাহা বলেন, দেশের মনীষীদের সম্পর্কে ভুল ধারণা সৃষ্টি, বিভাজন উসকে দেওয়া এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ির ইতিহাস তৈরি করার যে অপপ্রয়াস চলছে, তার বিরুদ্ধে কংগ্রেস কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নেহেরুর মানবিক মূল্যবোধ, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও উদার রাজনৈতিক চেতনার আদর্শ অনুসরণ করে প্রতিটি নাগরিককে দেশের গণতান্ত্রিক সুরক্ষার শপথ নিতে হবে বলেও তিনি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠান জুড়ে ছিল শ্রদ্ধা, স্মৃতি ও দেশপ্রেমের আবহ। নেহেরুর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে কংগ্রেসের এই উদ্যোগ জাতীয় নেতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি বর্তমান প্রজন্মকে তাঁর আদর্শে উদ্বুদ্ধ করার একটি প্রচেষ্টা—এমনটাই জানান উপস্থিত নেতৃত্বরা।



