Tipra Motha Joining : বিজেপি ছেড়ে তিপ্রা মথায় যোগদানের ঘটনায় আবারও উত্তাল ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহল। পুরনো কর্মীদের অবহেলা ও দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের যথাযথ মূল্য না পাওয়ার অভিযোগ তুলে দলত্যাগের পথ বেছে নিলেন ৪৯-ছাউমনু বিধানসভার বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী মায়াবতি চাকমা।
বুধবার প্রদ্যুত মানিক্যের উপস্থিতিতে নিজ বাসভবনেই তিপ্রা মথার পতাকা হাতে তুলে নেন তিনি। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন বিজেপি কর্মীও নতুন করে তিপ্রা মথার দলে নাম লেখান।
মায়াবতি চাকমা জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মহিলা মোর্চার সভাপতি ও মণ্ডল কমিটির সদস্য হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করলেও, দল তাঁকে বা অন্যান্য পুরনো কর্মীদের কোনো মর্যাদা দেয়নি। তাঁর ভাষায়, “বহু বছর হাড়ভাঙা খাটুনি করেও কোনো মূল্য পেলাম না। শুধু আমি নই, মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে পুরনো কর্মীদের কেউ গুরুত্ব দেয় না। জনগণের জন্য কাজ করতে গিয়ে বারবার উপেক্ষিত হয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, জনগণের সমস্যা—পথঘাট, জলসংকট, মৌলিক উন্নয়ন—নিয়ে বারবার কথা তুললেও সেগুলি সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেয়নি বিজেপি নেতৃত্ব। গ্রামের মানুষজনও একই দুরবস্থার মধ্যে রয়েছে বলে উল্লেখ করে মায়াবতি জানালেন, এই হতাশা থেকেই তিনি শেষমেশ তিপ্রা মথার হাত ধরার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রদ্যুত মানিক্যের উপস্থিতিতে দলে যোগ দিয়ে মায়াবতি জানান, আগামী দিনে এডিসিতে তিপ্রা মথার সরকার গঠনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখতে চান। জনগণের উন্নয়ন ও স্বার্থরক্ষাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
তিপ্রা মথার নেতৃবৃন্দ এই যোগদানকে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে দেখছেন। তাঁদের দাবি, ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে—বিজেপির অভ্যন্তরে অসন্তোষ বাড়ছে এবং সেই সুযোগেই তারা আরও শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
বিজেপি এখনো এই দলত্যাগ ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ছাউমনু সহ উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে এমন দলবদল শাসকদলের জন্য চিন্তার কারণ হতে পারে।
মায়াবতি চাকমা ও তাঁর সঙ্গীদের তিপ্রা মথায় যোগদান ত্রিপুরার রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পুরনো কর্মীদের অবমূল্যায়ন ও উন্নয়নমূলক কাজের স্থবিরতা—এই দুই অভিযোগই বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত বহন করছে।
অন্যদিকে তিপ্রা মথা এই সুযোগকে শক্তি বৃদ্ধির সম্ভাবনা হিসেবে দেখছে। ফলে এই দলবদল শুধু ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, ভবিষ্যতের এডিসি রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।



