খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Saturday, 11 October 2025 - 06:50 PM
শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫ - ০৬:৫০ অপরাহ্ণ

TECA Press Meet Agartala : ত্রিপুরায় স্মার্ট মিটার বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল বিদ্যুৎ গ্রাহকরা, সর্বভারতীয় কর্মসূচিতে যোগ

TECA Press Meet Agartala
1 minute read

TECA Press Meet Agartala : বিদ্যুৎ গ্রাহকের অনুমতি ছাড়া স্মার্ট মিটার বসানো সম্পূর্ণ ভাবে বেআইনি। গ্রাহকেরা যদি চান তাহলে একটি ফর্ম এর মাধ্যমেই তাদের স্মার্ট মিটার টি খুলে নেওয়ার আবেদন জানাতে পারেন। রাজ্যের ১০ লক্ষাধিক বিদ্যুৎ ভোক্তাদের জন্যে এই জরুরী বার্তা দিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন এবার ত্রিপুরা ইলেক্ট্রিসিটি কঞ্জিউমার এসোসিয়েশান।

বিদ্যুৎ সরবরাহকারি টিএনজিসিএল কে বেসরকারি সংস্থার কাছে বিকিয়ে দিতে যার পর নাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। আদানি আম্বানি দের স্বার্থ পূর্তির আড়ালে সাধারণ ভোক্তাদের কাছ থেকে দ্বিগুণ হারে বিদ্যুৎ মাশুল ধার্য করা হচ্ছে। এই সমস্ত অভিযোগ তুলেই সাংবাদিক বৈঠক করে ভোক্তাদের কাছে বিশেষ কিছু বার্তা রেখছেন টিইসিএ।

স্মার্ট মিটার প্রত্যাহার, বিদ্যুৎ পরিষেবার বেসরকারীকরণ রোধসহ ৭ দফা দাবিকে সামনে রেখে সর্বভারতীয় স্তরে একজোট হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশনগুলি। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে গণস্বাক্ষর সম্বলিত এক স্মারকলিপি পেশ করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ত্রিপুরা রাজ্যেও এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন (TECA)।


আগরতলায় আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে TECA-র নেতৃবৃন্দ স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে একাধিক যুক্তি ও তথ্য তুলে ধরে বলেন, “স্মার্ট মিটার মূলত একটি প্রিপেইড ব্যবস্থা, যা বিদ্যুৎকে মৌলিক পরিষেবা না রেখে পণ্য হিসেবে তুলে ধরছে। এতে কর্পোরেট সংস্থাগুলোর লাভ হচ্ছে, আর সাধারণ গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।” এই স্মার্ট মিটার শুধুমাত্র মিটার নয়, এটি অর্থ কামাইয়ের একটি ডিজিটাল মেশিন।


স্মার্ট মিটার বসানোর মাধ্যমে আদানি, টাটা, টরেন্ট প্রমুখ সংস্থাকে মুনাফার সুযোগ করে দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। রাজ্যে টিএসইসিএল-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, গ্রাহকদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে ভয় দেখিয়ে, কখনও আবার বাড়ির মালিক অনুপস্থিত থাকাকালীন জোর করে স্মার্ট মিটার বসিয়ে দিচ্ছে তারা।
TECA আরও দাবি করেছেন, দেশে বহু রাজ্যে জনগণের আন্দোলনের চাপে স্মার্ট মিটার স্থাপন আপাতত বন্ধ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারও জনগণের বিরোধিতার মুখে এই প্রকল্প স্থগিত করেছে। সেই দৃষ্টান্ত সামনে রেখে ত্রিপুরাতেও এই প্রকল্প বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে তারা। আর শুধু টাই নয়। কোনো গ্রাহক যদি না চান তবে স্মার্ট মিটার বসাতে পারেন না বিদ্যুৎ সংস্থা। এমন কোনো আইনি বিধি নিষেধ আজো চালু হয়নি।


বিদ্যুৎ পরিষেবার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ — যেমন ট্রান্সফর্মার মেরামত, বিলিং, ও মিটার রিডিং — ইতিমধ্যেই বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। যাতে আশঙ্কা বাড়ছে যে “স্মার্ট মিটার প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের বিদ্যুৎ খাতকে পুরোপুরি কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। প্রসঙ্গত, ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত টিএসইসিএল লাভজনক সংস্থা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে নিয়োগে অবহেলা ও প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে এটি অলাভজনক হয়ে পড়েছে ।
স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে তাদের এই আন্দোলন আরও বিস্তৃত করা সহ ভোক্তাদের কে এই অতিমাত্রিক বিদ্যুৎ বিল এর হাত থেকে নিস্তার দিতে সংস্থাটি দুটি ধরণের আবেদনপত্র তৈরি করেছে—


১. স্মার্ট মিটার না বসানোর জন্য অনুরোধপত্র,
২. যাদের বাড়িতে জোর করে স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে তা খুলে নেওয়ার অনুরোধপত্র।
এই আবেদনপত্র গ্রাহকদের মধ্যে বিলি করে স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসে জমা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন।
তাছারা উল্লেখ্য বিষয়, ৮ই জুলাই বিদ্যুৎ মন্ত্রী খোদ জানিয়েছেন যে যদি কোনো ব্যক্তি চান তাহলে এক যোগে তার বাড়িতে স্মার্ট মিটার ও নর্মাল মিটার বসাতে পারেন। দুটো তেই একই পরিমাণ বিল আসবে বলে দাবী উনার। যদি এমনটাই হয় তবে স্মার্ট মিটার এর প্রয়োজনীয় তাই বা কি , প্রশ্ন তুলেছেন সংস্থার নেতৃত্বরা।
উল্লেখযোগ্য বিষয়, স্মার্ট মিটার কেবল মাত্র কেন্দ্র সরকারের একটি প্রকল্প। কোনোভাবেই কোন গ্রাহক স্মার্ট মিটার লাগাতে বাধ্য নন। সুতরাং আপনি যদি স্মার্ট মিটার বয়কট করতে চান, কিংবা স্মার্ট মিটার খুলে নিতে চান এবং পুরনো নর্মাল মিটারে ফিরে যেতে চান তাহলে টিইসিই প্রদত্ত ফর্ম ফিল আপ করে নিকটস্থ বিদ্যুৎ অফিসে জমা দিতে পারেন।

For All Latest Updates

ভিডিও