খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Sunday, 21 December 2025 - 02:23 AM
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ - ০২:২৩ পূর্বাহ্ণ

Sudip Roy Barman : নিজ এলাকাতেই বাধার মুখে সুদীপ রায় বর্মণ! মেঝেতে বসেই সম্পন্ন করলেন প্রতিনিধি সম্মেলন

Sudip Roy Barman
1 minute read

Sudip Roy Barman : নিজ বিধানসভা এলাকায় প্রতিনিধি সম্মেলন করতে গিয়েও বাধার মুখে পড়লেন আগরতলা-৬ কেন্দ্রের কংগ্রেস MLA সুদীপ রায় বর্মণ। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী কৃষ্ণনগর নোয়াগাঁওয়ে ব্লক কংগ্রেসের উদ্যোগে একটি প্রতিনিধি সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় এক ব্যক্তির জোত জমি ব্যবহার করে সেখানে প্যান্ডেল তৈরির প্রস্তুতিও শুরু হয়। কিন্তু অভিযোগ, স্থানীয় শাসকদলীয় কিছু কর্মী ডেকোরেটরদের ভয় দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় এবং এলাকা ছাড়তে বাধ্য করে।

বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়েই সম্মেলন করেন সুদীপ রায় বর্মণ। কোনো প্যান্ডেল নেই, মাইক নেই, চেয়ারেরও ব্যবস্থা নেই—এমন পরিস্থিতিতেই স্থানীয় কর্মীদের সঙ্গে মাটিতে বসে সভা সারেন তিনি। তার দাবি, এ ধরনের ঘটনা গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আঘাত এবং সু-শাসনের দাবির সঙ্গে তা বেমানান।

সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে সুদীপ রায় বর্মণ ঐতিহাসিক উদাহরণ তুলে ধরে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বক্তব্যের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, দেশভাগের সময় ধর্মের ভিত্তিতে যেভাবে বিভেদ তৈরি হয়েছিল, বর্তমানেও একই ধরনের বিভাজনমূলক রাজনীতি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার বক্তব্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার লড়াইয়ে যে বিপুল সংখ্যক মুসলমান শহীদ হয়েছিলেন, তাদের অবদানের কথা ভুলিয়ে দিয়ে ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, জাতীয় টেলিভিশন বিতর্কে ধর্মীয় বিভাজনকে উসকে দেওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি করা হয়, যাতে ভোটের আগে সাধারণ মানুষ আবেগপ্রবণ হয়ে যায় এবং জীবনের বাস্তব সমস্যা—চাকরি, পানি, মূল্যবৃদ্ধি—সবই আড়ালে পড়ে যায়।

সুদীপ রায় বর্মণ দাবি করেন, সাধারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের ওপর বাড়তি কর বসানো হয়েছে, ফলে গরিব ও মধ্যবিত্তের পকেট থেকেই সরকার লাভ তুলছে। অন্যদিকে নির্বাচনের ঠিক আগে নানা আর্থিক অনুদান দিয়ে মানুষকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়, যা তিনি “দলীয় স্বার্থে অর্থশক্তির ব্যবহার” বলে অভিহিত করেন।

সভায় তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়ার ঘটনাও তুলে ধরেন। তার অভিযোগ, ব্লক কংগ্রেস বন্ধের দিনে স্কুলে অনুষ্ঠান করতে চাইলেও প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। অথচ শাসকদলীয় কোনো সংগঠন চাইলে সহজেই অনুমতি পেয়ে যায়। এ বিষয়ে তিনি শিক্ষা দফতরের কর্মকর্তাদের কাছে প্রশ্ন তুললেও সন্তোষজনক উত্তর পাননি বলেই দাবি করেন।

সুদীপের বক্তব্য অনুযায়ী, এসব ঘটনা থেকে প্রমাণিত যে প্রশাসনের ওপর রাজনৈতিক চাপ রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, যারা সু-শাসনের কথা বলেন, তারা বিষয়টিতে নজর দেবেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ যেন নিয়মে পরিণত না হয় তা নিশ্চিত করবেন।

বক্তৃতার শেষাংশে তিনি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার কথাও তুলে ধরেন। তার দাবি, বর্তমানে ভারত বিপুল পরিমাণ বিদেশি ঋণের বোঝায় জর্জরিত, এবং প্রত্যেক নাগরিক মাথাপিছু প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা ঋণের ভার বইছে। নতুন জন্ম নেওয়া শিশুও যেন জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই এই ঋণভার নিয়ে পৃথিবীতে আসছে—এই তুলনা টেনে তিনি পরিস্থিতির গভীরতা ব্যাখ্যা করেন।

বাধা, ভয়, হুমকি—সবকিছু উপেক্ষা করে মাটিতে বসে সম্মেলন করার সিদ্ধান্তকে সুদীপ রায় বর্মণ গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেন। তার কথায়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা যতই বাড়ুক, প্রশাসনের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা এবং গণতন্ত্রের পরিসর সুরক্ষিত রাখা।

For All Latest Updates

ভিডিও