Sudip Roy Barman : ত্রিপুরা রাজনীতিতে ফের উত্তেজনা! কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের মন্তব্য ঘিরে আজ সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আগরতলার সরকারি আবাসন চত্বর। অভিযোগ, বিজেপি জনজাতি মোর্চার শতাধিক কর্মী চড়াও হন সুদীপ রায় বর্মণের সরকারি বাসভবনে। গেইট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে চলে ব্যাপক ভাঙচুর।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার আমবাসা টাউন হলে আয়োজিত কংগ্রেসের আদিবাসী সম্মেলন থেকে। সেখানে বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ বিজেপির জনজাতি নীতি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন। বলেন, “বিজেপির নেতারা আদিবাসীদের গায়ে প্রস্রাব করে।” এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদে পথে নামে বিজেপি জনজাতি মোর্চা।এবং এর পরেই সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। সকাল সাতটা নাগাদ মোর্চার সদস্যরা জমায়েত হন সুদীপ রায় বর্মণের সরকারি হোস্টেলের সামনে। প্রথমে স্লোগান, পরে তালা ভেঙে প্রবেশ। নিরাপত্তারক্ষীদের বাধা উপেক্ষা করে বসার ঘরে চেয়ারে ভাঙচুর চালানো হয়। ছোড়া হয় ইট-পাটকেল।
বিজেপি জনজাতি মোর্চার অভিযোগ, ওই মন্তব্যে আমাদের অপমান করা হয়েছে। জনজাতিদের সম্মান রক্ষায় আমরা প্রতিবাদ করতেই এসেছি। তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবো।” তবে এই বিক্ষোভের পরও শান্ত ও সংযত ছিলেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তড়িঘড়ি মোতায়েন করা হয় পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী। ঘণ্টা দুয়েক পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন বলেন,
“আমি জনজাতিদের উন্নয়নের পক্ষেই কাজ করি। আজকের বিক্ষোভে আমার কোনও ক্ষোভ নেই। কিন্তু বিজেপির একাংশ জনজাতিদের প্রতি ঘৃণাবশত আচরণ করছে — এই সত্য আমি তুলে ধরেছি। মধ্যপ্রদেশে এক বিজেপি নেতা প্রকাশ্যে এক জনজাতি ব্যক্তির গায়ে প্রস্রাব করেছেন। আমি সেটাই বলেছি, বানিয়ে কিছু বলিনি।”
সুদীপ রায় বর্মণের দাবি, বিজেপি আদতে সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির প্রতি সহানুভূতিশীল নয়। দলীয়ভাবে এসসি, এসটি, ও ওবিসিদের প্রতি যে মানসিকতা, তা প্রকাশ পাচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। ত্রিপুরাও তার ব্যতিক্রম নয়।
এই ঘটনাটি শুধু একটি মন্তব্য ঘিরে নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়-সমতলের জনজাতি ইস্যুতে বিজেপি ও কংগ্রেসের দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ। আদিবাসীদের মন জয় করতে হলে কেবল মন্তব্য নয়, নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট করতেই হবে।”
রাজনৈতিক প্রতিবাদ হতেই পারে, কিন্তু ভাঙচুর ও হিংসা বরদাস্ত করা যায় না। অন্যদিকে বিজেপি জনজাতি মোর্চা জানিয়েছে, সুদীপ রায় বর্মণ যদি জনসম্মুখে ক্ষমা না চান, তাহলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবে।
ত্রিপুরা রাজনীতি দাঁড়িয়েছে এক নতুন মোড়ের মুখে। নজর এখন রাজ্য প্রশাসনের পদক্ষেপের দিকে।