Shreya Ghoshal Concert pass
এন্ট্রি পাস শেষ, শ্রেয়া ঘোষাল কনসার্ট শুরুর আগেই তুলকালাম কাণ্ড আগরতলায়
ভারতের কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী শ্রেয়া ঘোষাল আসছেন আগামী ১৪ই ডিসেম্বর। আস্তাবল ময়দানে হতে চলেছে লাইভ কনসার্ট। আর সেই কনসার্ট এ যোগ দিতে জোর কদমে চলছে পাস সংগ্রহ। কিন্তু অবশেষে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে পাস এর বদলে উৎসুক জনতার ভাগ্যে জুটেছে হয়রানি।
দেশের এতো বড় সঙ্গীত শিল্পী আসবেন আর তাতে লক্ষাধিক অনুগামীর ভিড় হবে না সেটা ভাবাই যায়না। সেই অনুযায়ীই পর্যটন দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী ও গত পরশু সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন পর্যাপ্ত পরিমাণে আনা হয়েছে পাস। কিন্তু মন্ত্রীর কথায় আর বাস্তবে পাওয়া গেল না মিল।
১১ই ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় পাশ বিলি। সকাল ১০টা থেকে রাজবাড়ি লাগোয়া ডাইরেক্টরেট অফিসের সামনে দীর্ঘ লাইন। বিকেল ৪ টা পর্যন্ত পাস ইস্যু করার সময় নির্ধারিত হয়। সেই অনুযায়ী পাস সংগ্রহ কোর্টে আসেন অগণিত মানুষ। ছেলে মেয়ে , যুবক যুবতী, প্রাপ্ত বয়স্ক , পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে সকলের ই উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। কিন্তু প্রথম দিনেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অবশেষে টিকিট ছাড়াই ঘরে ফিরতে হল বহু মানুষ কে। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল ১২ তারিখে ও । ৫ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অবশেষে দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হল আজ আর টিকিট নেই, কাল আসুন।
আর এই কথা সোনা মাত্রই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন অনুগামীরা।
দিনভর নিজেদের সমস্ত কাজ কম্ম বাদ দিয়ে কনসার্ট এর টিকিট নিতে এসে অবশেষে এমন হয়রানীর শিকার হয়ে ক্ষুব্ধ জনতা রীতিমতো ক্ষোভ উগড়ে দিলেন এদিন। ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বেশ কিছু ফ্লেক্স পোস্টার ও । আগামী কাল এলেও কি টিকিট পাবেন তারা ? হয়তো পাবেন না । আশাহত হয়ে এমনটাই বলে গেলেন টিকিট নিতে এসে ফিরে যাওয়া ভুক্তভুগিরা। উপরন্তু, পাস বিলির সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে কেবলমাত্র রাজধানী আগরতলা তেই। যে কারণে রাজ্যের মফরশল এলাকায় যারা বসবাস করছেন তাদের জন্যে এই কনসার্টে যোগ দেওয়ার পাস সংগ্রহ করা কঠিন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশিরভাগ ই পাস সংগ্রহ করতে পারেন নি।
বিভিন্ন সূত্রে খবর শ্রেয়া ঘোষাল এর লাইভ কনসার্ট বাবদ কোটি টাকা খর্চা করছে রাজ্যের পর্যটন দপ্তর। আস্তাবল ময়দান জুড়ে এদিন থাকবে কোলাহল , উৎসুক জনতার ভিড়। প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার লোকের ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন আস্তাবল ময়দানের বাইরে ও থাকবে উপচে পরা ভিড়। অনেকেই ভেতরে ঢোকার সুযোগ নাও পেতে পারেন। কিন্তু তবুও পাস সংগ্রহ করতে মরিয়া হয়ে লাইনে দারাচ্ছেন মানুষ। অতঃপর যদি পাস নেই শুনে তাদের খালি হাতে ফিরতে হয় তবে স্বাভাবিক অর্থেই এদের মানসিক স্থিতি বিগড়োবে। এমনকি সামাজিক মাধ্যমে এই দুদিনের ঘটনা গুলো দেখার পর লোকজন এই গোটা কর্মসূচী কেই সময় নষ্ট বলে আখ্যা দিয়েছেন। অনেকে রাজধানী তে থেকেও পাস সংগ্রহ করেন নি। এতো বড় একটা অনুষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজ্য পর্যটন দপ্তরের বেশ কিছু খামতি ও গাফিলতি ধরা পড়ছে বারংবার।
এমন হলে সুদূর ভবিষ্যতে সরকারি ভাবে আয়োজিত এধরণের প্রোগ্রামে এই উৎসুক মানুষ গুলো কে আর খুঁজে পাওয়া নাও যেতে পারে। সুতরাং পাস এর পরিমাণ নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে তা দপ্তরের একটা উল্লেখযোগ্য খামতি যা অবশ্যই পূরণ করা প্রয়োজন । এছাড়া ও বিগত দিনে এধরণের অনুষ্ঠানে একাধিক অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই বিষয় গুলোর দিকেও নজরদারি বৃদ্ধি প্রয়োজন। ততসঙ্গে আগামী কালের মধ্যেই পর্যাপ্ত পরিমাণে পাস মজুদ রাখা অত্যাবশ্যক। এবার এই সমস্যা সমাধানে দপ্তর কি ভূমিকা গ্রহন করেন আগামী ২৪ ঘণ্টায় সেটাই দেখার বিষয়।