লাঞ্চ ব্র্যাকে সিগারেট ফুঁকতে ব্যস্ততা স্কুল পড়ুয়া দের মধ্যে

বিশ্রামগঞ্জ : ত্রিপুরার আনাচে কানাচে , পাহাড় থেকে সমতল সবত্রই যেন নেশার রমরমা বানিজ্য চলছে। স্কুল থেকে কলেজ মাঠ ঘাট কিংবা বাড়ি ঘর সর্বত্রই নেশার করাল গ্রাসে আসতে পিষ্টে জড়িয়ে পড়েছে বর্তমান যুব সমাজ।
নেশা কে জীবনের পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে একাংশ যুবকেরা। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ত্রিপুরাকে নেশা মুক্ত করতে চেয়েছিলেন । তাই ডাক দিয়েছিলেন “ নেশা মুক্ত ত্রিপুরা চাই “। কিন্তু বাস্তবে তা একেবারে উল্টে নেশা যুক্ত অবস্থায় পরিণত হয়েছে আমাদের এই ছোট্ট পার্বত্য ত্রিপুরা।
হিরোইন , ড্রাগস , ফেন্সিডিল , এস কফ এই সব কিছুই আপনারা আপনাদের হাতের কাছে পেয়ে যাচ্ছেন + কারণ ত্রিপুরা এখন নেশা যুক্ত ত্রিপুরা। রাষ্ট্র বাদী নেতাদের দৌলতে আমরা এই সুন্দর রাজ্য উপহার পেয়েছি। এই সব কথাগুলো বলার পেছনে রয়েছে এক নিন্দনীয় ঘটনা , যা আমরা আজকের আলোচনার মধ্যে দিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে চলেছি।

স্কুল পড়ুয়া ছাত্রেরা লাঞ্চ ব্রেকের নাম করে স্কুল থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে এসে নেশা করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়লো। ঘটনার চিত্রটি উঠে আসে মঙ্গলবার দুপুর প্রায় দের টা নাগাদ সিপাহিজলা অভয়ারণ্যের মূল ফটকের সামনে থেকে। বিস্রামগঞ্জ স্থিত রাজ্য সরকারের বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পাধীন বিশ্রামগঞ্জ দ্বাদশ শ্রেনী বিদ্যালয় এর কিছু ছাত্র কে হাতেনাতে ধরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায় লাঞ্চ ব্রেকে তারা বিস্রামগঞ্জ থেকে ১৫ কিমি দুরত্ব অতিক্রম করে এখানে এসেছে এবং বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ক্রমেই নাকি তারা এখানে এসেছে।
তাদের বক্তব্য শোনার পর স্বাভাবিক ভাবেই যাচাই করার নিরিখে সাংবাদিকরা সেই বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে যান এবং সেখান কার প্রধান শিক্ষক চিরকুমার দেববর্মা কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি গোটা ঘটনার বিষয়ে অবগত নন বলেই জানান।
একটা বিদ্যালয় থেকে পঠন পাঠন চলাকালীন সময়ে গোটা তিনেক ছাত্র বেড়িয়ে যায়। অথচ স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো খবর ই নেই। প্রধান শিক্ষকের দাবী উনি গোটা বিষয় খোঁজ খবর নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।
সকালে একটি ছাত্র কিংবা ছাত্রী বাড়ি থেকে স্কুলে এলে তার সমস্ত দায়িত্বভার থাকে স্কুল কর্তৃপক্ষের উপর। এই সময় তার সঙ্গে যদি কোন ধরনের অঘটন ঘটে তার জন্য সম্পুর্ন দায়বদ্ধতা স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের। এই দায় কোনও ভাবেই এড়াতে পারে না প্রধান শিক্ষক। অথচ বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে বিশ্রামগঞ্জ স্কুল থেকে প্রায় ১৫ কিমি দুরত্বে অবস্থিত সিপাহীজলা অভয়ারণ্যের মূল ফটকে দাঁড়িয়ে চার ছাত্রের নেশা গ্রহন করার ঘটনার সম্পর্কে কোনও সদোত্তর দিতে পারেনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিরকুমার দেব্বর্মা।
একদিকে রাজ্যে CBSE পরিচালিত বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয় গুলির ছাত্রছাত্রীদের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলের চূড়ান্ত ব্যর্থতার খবর রাজ্যবাসীর কাছে নতুন কিছু নয়। এখন আবার স্কুল চলাকালীন সময়ে স্কুল থেকে দূর দূরান্তে গিয়ে এই ভাবে নেশা গ্রহনের ঘটনা রীতিমতো প্রশ্ন তুলছে বিদ্যালয়ের পঠন পাঠন নিয়ে। চিন্তার ভাজ অভিভাবকদের কপালে।
অন্যদিকে আজকের এই ঘটনা আবারো প্রমাণ করে দিচ্ছে যে রাজ্যের প্রতিটা কোণায় কোণায় পৌঁছে গেছে মাদক ও নেশা সামগ্রীর বিষ। যা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কে গোঁড়া থেকে পঙ্গু বানিয়ে গোটা রাজ্যের ভবিষ্যৎ বিনষ্ট করতে ধীরে ধীরে কাজ করছে। এই বিষ যে আগামী দিনে আপনার ঘরেও ছড়িয়ে পর্বে না তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে ? সুতরাং সরকারের প্রতিশ্রুতি নয়, বর্তমানে প্রতিটা নাগরিক , অভিভাবক এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষ কে একত্রিত হয়ে এই নেশার বিরুদ্ধে সরব হতে হবে। তা নাহলে এভাবেই তিলে তিলে শেষ হয়ে যাবে আগামী ভবিষ্যৎ ।

Leave A Reply