খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Tuesday, 24 June 2025 - 01:46 AM
মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫ - ০১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

Pradyot Bikram Manikya Deb Barma : প্রদ্যুৎ কিশোর মানিক্যের হুঁশিয়ারি ভারতের সীমান্ত রাজ্যগুলোর জন্য ঘনিয়ে আসছে বিপদ?

Pradyot Bikram Manikya Deb Barma
1 minute read

Pradyot Bikram Manikya Deb Barma : ত্রিপুরার রাজ পরিবারের বর্তমান উত্তরাধিকারী ও রাজনীতিবিদ প্রদ্যুৎ কিশোর মানিক্য সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক, বিশেষ করে বাংলাদেশের রাজনীতি ভারতের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা এখনই উপলব্ধি করা দরকার। তিনি বলেন, অতীতে যখন চীন ভারতকে আক্রমণ করেছিল, তখন ভারত টিকটক নিষিদ্ধ করেছিল। আবার কেউ যদি ভারতকে চ্যালেঞ্জ করে, ভারত তখন সেই দেশের সিনেমা বা সেলেব্রিটিদের বয়কট করে। কিন্তু এভাবে সমস্যার সমাধান হয় না।

মহারাজা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে যদি ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার পরিবর্তে এমন কোনো সরকার আসে যারা ভারতবিরোধী নীতি অনুসরণ করে, তাহলে ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর, বিশেষ করে ত্রিপুরার ওপর প্রভাব পড়বে। কারণ ত্রিপুরা, মেঘালয়সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো বাংলাদেশের খুব কাছাকাছি। তিনি বলেন, বিএনপি, মোহাম্মদ ইউনুস বা অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তি যদি ক্ষমতায় আসে, এবং তারা ভারত-বিরোধী মনোভাব নিয়ে এগোয়, তাহলে ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল, বিশেষ করে ত্রিপুরা, সরাসরি প্রভাবিত হবে। কারণ ত্রিপুরা বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে।

বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তান মিলে সম্প্রতি একটি বৈঠক করেছে। এই দেশগুলো কখনোই ভারতের প্রকৃত বন্ধু নয়। তারা ভবিষ্যত নিয়ে প্ল্যানিং করছে। যদি এই দেশগুলোর মধ্যে ভবিষ্যতের কোনো পরিকল্পনা তৈরি হয়, ভারতকেও উচিত এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া। তিনি আরও বলেন চট্টগ্রাম, কুমিল্লা এগুলো ভারতের ছিল। বাংলাদেশে তিপ্রাসা, চাকমা, গারো, হিন্দু ও বাঙালি খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠী আছে, যারা ঐতিহাসিকভাবে ভারতের সঙ্গে সাংস্কৃতিকভাবে সম্পর্কিত। তবে এখন তারা বাংলাদেশে থাকলেও, তাদের ভারতীয় শিকড় অস্বীকার করা যায় না।

তিনি আরও বলেন, সীমান্ত এলাকায় কিছু বাংলাদেশি পরিবার চাকমাঘাটে গোপনে প্রবেশ করছে। দিনের বেলায় সেনারা থাকায় তারা আসে না, কিন্তু রাতের বেলায় লুকিয়ে ঢুকে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি আসাম রাইফেলস ও বিএসএফ-এর সক্রিয় উপস্থিতির দাবি জানিয়েছেন এবং সীমান্তে যৌথ পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠনের আহ্বান জানান। মহারাজা বলেন, যদি আমরা নিজেদের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ হিসেবে বিভক্ত থাকি, তাহলে বাইরের শক্তি আমাদের দুর্বল করে দিতে পারবে। অন্য দেশ আমাদের দেশ হাসিল করতে বেশি সময় বাকি থাকবে না। তাই অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়।

এই বার্তায় তিনি ভারতীয় সমাজের জাতিগত ও ধর্মীয় বিভাজনের বিরুদ্ধে সজাগ হতে বলেন এবং ঐক্যের ডাক দেন।

তিপ্রাল্যান্ড প্রসঙ্গে
সবশেষে তিনি বলেন, ত্রিপুরার মানুষ যদি তাদের জমির অধিকার পায়, তাহলে যেমন মুঘলরা পারেনি, ব্রিটিশরাও পারেনি, তেমনই বাংলাদেশীরাও পারবেন না। কেউ তিপ্রাসাদের ভূমি দখল করতে পারবে না।

তিনি বলেন, জীবনে রাজনীতির থেকেও বড় কিছু আছে — সেটা হচ্ছে নিজের বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ।” এটি একটি আবেগঘন, কিন্তু গভীর রাজনৈতিক বার্তা। তিনি বোঝাতে চান, স্বার্থপর রাজনীতি নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদী ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখনই সক্রিয় সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।

তাই আমাদের এখনই এই সমস্ত বিষয় নিয়ে ভাবা উচিত।

তাঁর এই বক্তব্য শুধুমাত্র ত্রিপুরা নয়, বরং সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তা, রাজনীতি ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি নিয়ে এক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। তিনি যে বিষয়গুলোর ওপর জোর দিয়েছেন, তা এখন থেকেই ভারত সরকারের মনোযোগ প্রাপ্য বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

For All Latest Updates

ভিডিও