Paritosh Sarkar : নেশাসক্তি এবং মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার যে কিভাবে সমাজের প্রতিটি স্তরে প্রভাব ফেলছে, তার এক মর্মান্তিক উদাহরণ হয়ে উঠেছে ত্রিপুরার এই সাম্প্রতিক ঘটনা। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী পরিতোষ সরকারের বাড়ি থেকে ১৭৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার হওয়ায় গোটা রাজ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
মধুপুর থানার ওসির দেবজিত চ্যাটার্জির নেতৃত্বে পুলিশ এবং টি এস আর বাহিনীর যৌথ অভিযানে এই বিপুল পরিমাণ গাঁজা উদ্ধার হয় ত্রিপুরার কোনাবন সীতাখলা এলাকায়। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, রবিবার সকালে অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে ধরা হয় পরিতোষ সরকারকে। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এই সংগীতশিল্পী গাঁজা পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে নজর রাখছিল পুলিশ প্রশাসন।
নেশার ব্যবসা শুধু ব্যক্তিগত ধ্বংসের কারণ নয়, বরং সমাজের গোড়ায় আঘাত হানে। একদিকে যখন সংগীত সমাজে শান্তি, সৌন্দর্য এবং সংস্কৃতির বার্তা ছড়ায়, তখন একজন শিল্পীর এ ধরনের কর্মকাণ্ড গভীর হতাশা তৈরি করে। একটি প্রতিভাধর শিল্পীর জীবনের এই মর্মান্তিক অধঃপতন কেবল তার নিজের নয়, বরং সমাজের তরুণ প্রজন্মের কাছেও ভুল বার্তা দেয়।
নেশা একটি নীরব ঘাতক। এটি ধীরে ধীরে ব্যক্তি, পরিবার এবং সমাজকে গ্রাস করে। বিশেষ করে আজকের দিনে যুবসমাজ যখন নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, তখন মাদকদ্রব্য তাদের পথভ্রষ্ট করছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি।
মধুপুর থানার এই সাফল্য শুধু একটি অপরাধ দমন নয়, বরং সমাজের কাছে একটি সতর্ক বার্তা। প্রশাসনের এই তৎপরতা প্রশংসনীয় এবং ভবিষ্যতেও এরকম কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা দরকার, যাতে মাদকদ্রব্যের অবাধ প্রবাহ বন্ধ করা যায়।
আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত মাদকবিরোধী সচেতনতা গড়ে তোলা—পরিবার, স্কুল, সমাজ এবং সংস্কৃতির অঙ্গনে। একজন শিল্পীর উচিত তাঁর খ্যাতিকে সমাজের কল্যাণে কাজে লাগানো, নেশার ব্যবসায় নয়।
ত্রিপুরার সংগীতজগতে এই ঘটনা যে দাগ রেখে গেল, তা হয়তো সহজে মুছবে না। তবে এই ঘটনার পর যেন আর কোনও প্রতিভা নেশার অন্ধকারে হারিয়ে না যায়—সেই আশাই সমাজের।