One North East : ত্রিপুরার জনজাতি রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিলেন তিপরা মথার প্রাক্তন সুপ্রিমো ও বর্তমান এমডিসি প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। বুধবার আগরতলায় তিপরা মথার বিশাল জনসমাবেশে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলি জনজাতি সমাজকে কখনওই তাদের প্রাপ্য মর্যাদা দেয় না। তাঁর দাবি, বহু আঞ্চলিক দল স্বার্থের বশে জাতীয় দলের সঙ্গে হাত মিলালেও পরে পরিকল্পিতভাবে তাদের রাজনৈতিকভাবে বিলীন করে দেওয়া হয়।
প্রদ্যোত জানান, আগরতলায় এই জনসমাবেশ আয়োজন করতে গিয়ে নানা প্রশাসনিক জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। তাঁর কথা, “অন্য দলগুলো সহজেই সভা করতে পারে, কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে আলাদা বাধা তৈরি করা হয়।” তবুও উত্তর–পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষের উপস্থিতি তাঁকে উৎসাহিত করেছে বলে জানান।
জনজাতি সমাজের সংগ্রামী মনোভাবের প্রশংসা করে প্রদ্যোত বলেন, “আজ তাঁদের হাতে অর্থ না থাকলেও আত্মবিশ্বাস ও লড়াই করার শক্তি আছে।” তাঁর দাবি, ‘নর্থ ইস্ট মঞ্চ’ বর্তমানে জনজাতিদের জন্য এক শক্তিশালী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম, যা ভবিষ্যতে বৃহত্তর স্বশাসনের দাবিকে আরও দৃঢ় করবে। তিনি আবারও বলেন, সময় এলেই গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে।
এই প্রেক্ষিতেই আইপিএফটি-র উদ্দেশে তিনি স্পষ্ট বার্তা দেন—তিপরা মথার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ লড়াই ছাড়া জনজাতি স্বার্থ রক্ষা সম্ভব নয়। তাঁর মন্তব্য, “একলা লড়াই করলে শিবসেনা, অসম গণ পরিষদ, বোডোল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট বা আরও অনেক আঞ্চলিক দলের মতো হারিয়ে যেতে হবে। একমাত্র ঐক্যই বাঁচাতে পারে জনজাতি রাজনীতিকে।”
সভামঞ্চ থেকেই তিনি জনজাতি সংগঠন ও বিভিন্ন গ্রামের প্রতিনিধিদের নর্থ ইস্ট মঞ্চের পতাকাতলে এক হওয়ার আহ্বান জানান। তাঁর মতে, অধিকার আদায়ের সংগ্রামে এখন দরকার সমবেত কণ্ঠ, কারণ “একতাই শক্তি”—আর সেই শক্তিকেই তিনি আগামী দিনের মূল অস্ত্র হিসেবে দেখছেন।
তিপরা মথার সমাবেশে প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের বক্তব্য উত্তর–পূর্বের জনজাতি রাজনীতিতে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। জাতীয় দলের প্রভাব ও আঞ্চলিক দলের সংকটের প্রেক্ষিতে তিনি জনজাতি স্বার্থ রক্ষায় একক প্ল্যাটফর্মের ওপর জোর দিয়েছেন। তাঁর আহ্বান—ভাগে নয়, শক্তিশালী ভবিষ্যতের জন্য একত্র লড়াইতেই প্রকৃত অধিকার আদায় সম্ভব।



