খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Thursday, 27 November 2025 - 01:25 AM
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫ - ০১:২৫ পূর্বাহ্ণ

NLFT Ranjit Debbarma : জঙ্গি নেতার কাছে কেন মাথা নত করলো প্রশাসন? জানতে চায় জনগণ

NLFT Ranjit Debbarma
1 minute read

NLFT Ranjit Debbarma : জেল খাটা জঙ্গি নেতা রঞ্জিত দেববর্মা ত্রিপুরা সিভিল সোসাইটির নামে বনধ ডেকেছিল বৃহস্পতিবার। ত্রিপুরা সিভিল সোসাইটির নামে এই বনধ ডাকা হলেও আসলে রাজ্যবাসী প্রত্যক্ষ করেছে এটা ছিল সরকারের শরিক দল তিপ্রা মথার বনধ। পরিকল্পনা মাফিক সকাল থেকেই রাজধানী সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মথা কর্মী সমর্থকরা বন্ধের সমর্থনে একাধিক জনবর্জিত কার্যকলাপ সংঘটিত করেছে।

সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে রাজধানীর উত্তর গেইট এলাকায় পুলিশের সামনে চিকিৎসক সহ অন্যান্য সরকারি/বেসরকারি কর্মচারীর বাইকের চাবি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা। জঙ্গি নেতা রঞ্জিত দেববর্মা এবং পশ্চিম জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের উপস্থিতিতেই সকাল থেকে শহরের বুকে তাণ্ডব লীলা সংঘটিত করেছে তিপ্রা মথার কিছু উশৃংখল যুবক।

ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় এই চিত্রগুলো যত ভাইরাল হয়েছে ততই রাজ্য জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। শুধু আগরতলার উত্তর গেইট নয় “হামসে বড়া কন হে” মনোভাব নিয়ে সারা রাজ্যেই তাণ্ডব চালিয়েছে মথার কর্মী সমর্থকরা। কোথাও আটকে দিয়েছে যাত্রীবাহী রেল কোথাও আটকে দিয়েছে জরুরী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত অ্যাম্বুলেন্স। সকাল থেকেই মথা কর্মী সমর্থকদের একের পর এক নিন্দনীয় কার্যকলাপে রাজ্যের জনগণ যখন হতবাক তখনো অজানা কারণে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে পুলিশ প্রশাসন।

যে দাবিগুলি নিয়ে এই বনধ ডাকা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম ছিল অবৈধভাবে ত্রিপুরায় বসবাসকারী বাংলাদেশীদের বিতাড়িত করতে হবে। কিন্তু দেখা গেছে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে বন্ধ আহ্বানকারী রঞ্জিত দেববর্মার নিজের বাংলাদেশী আই কার্ড। সময় যত গড়িয়েছে ততই মানুষ বলতে শুরু করেছে জঙ্গি নেতা রঞ্জিত দেববর্মার কাছে মাথা নত করেছে ত্রিপুরা সরকার।

এর মধ্যেই বিরোধী দল সিপিআইএম এবং কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়াও দেখতে পেয়েছে রাজ্যের জনগণ। বিরোধী নেতৃত্বের বক্তব্য এক সংসারে থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে ডাকা বনধ আসলে জনজাতিদের বোকা বানানোর নতুন কৌশল। এই বনধের কারণে সাধারণ মানুষ দারুনভাবে সমস্যার সম্মুখীন হলেও রহস্যজনক কারণে স্বরাষ্ট্র দপ্তর পুলিশ প্রশাসন সবাই ছিল কাঠ পুতুলের ভূমিকায়।

বিরোধী দলের তরফে যদি বনধ ডাকা হতো তবে মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ বিরোধী কর্মী সমর্থকদের গ্রেপ্তার করে রাস্তা পরিষ্কার করে দিত। শাসক দলের নেতাকর্মীরা বনধের বিরোধিতা করে নেমে যেত রাস্তায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার এমন কোন কিছুই লক্ষ্য করা যায়নি।

দেখা গেছে পশ্চিম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব নাথ, সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবপ্রসাদ রায়, পূর্ব আগরতলা থানার ওসি সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা সাধারণ মানুষকেই কার্যত হুমকি-ধমকি দিয়ে তাদের চলাচলের রাস্তা পরিবর্তন করে দিয়েছেন। ত্রিপুরা সরকারের মন্ত্রী থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা পর্যন্ত উত্তর গেট রাস্তা দিয়ে মহাকরণে পৌঁছতে পারেনি।

রঞ্জিত দেববর্মার সাগরেদদের উশৃংখলতাকে একপ্রকার মান্যতা দিয়েই অন্য পথে মহাকরণে এবং গোর্খাবস্তি এলাকায় অবস্থিত সরকারি দপ্তর গুলিতে পৌঁছেছেন মন্ত্রী এবং একাংশ সরকারি কর্মচারী। একদিকে রাস্তায় জ্বলছে টায়ার অন্যদিকে চলছে তিপ্রা মথার কর্মী সমর্থকদের স্লোগান। এই দুইয়ের মাঝে পুলিশ কর্মীদের একেবারে অসহায় মেরুদণ্ডহীন মনে হয়েছে।

দুপুরের দিকে জঙ্গিনেতা রঞ্জিত দেববর্মা ভাইফোঁটার কথা বলে শহর থেকে বনধ প্রত্যাহার করলেও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় জারি ছিল অবরোধ কর্মসূচি। এখানেও সচেতন মহল প্রশ্ন তুলেছে ভাইফোঁটা কি শুধু শহরেই হয় ? আসলে এটা জঙ্গি নেতার কৌশলী চাল।

এদিকে সন্ধ্যা গড়াতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে সামনে এসেছে বনধ আহবানকারীদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ। কমলপুর সালেমায় বিডিও অভিজিৎ মজুমদার, ইঞ্জিনিয়ার অনিমেষ সাহাকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছে তিপ্রা মথা আশ্রিত দুষ্কৃতিকারীরা। জঙ্গি নেতা রঞ্জিত দেববর্মার সাগরেদদের আক্রমণে আহত হয়েছেন ধলাই জেলার শান্তির বাজারের আরও বেশ কয়েকজন সাধারণ নাগরিক।

সকালে জঙ্গি নেতার ডাকা বনধের কাছে ত্রিপুরা সরকার রহস্যজনক কারণে মাথা নত করলেও সন্ধ্যায় এই ঘটনা সামনে আসার পর সামাজিক মাধ্যমে তীব্রভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাক্তার মানিক সাহা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বর্তমান সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব, প্রদেশ বিজেপি সভাপতি তথা রাজ্যসভা সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা সহ শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা।

যদিও সচেতন নাগরিকদের বক্তব্য পুলিশ প্রশাসন যদি সকাল থেকেই কঠোর হাতে ব্যবস্থা নিতো তবে সন্ধ্যা রাতে এ ধরনের ঘটনা করার সাহস পেত না জঙ্গি নেতার সাগরেদরা। বর্তমানে সে যে পদেই থাকুক না কেন আসলে সে জঙ্গি নেতা। তার রক্তে মিশে আছে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ।

সুতরাং তাকে যত প্রশ্রয় দেওয়া হবে ততই ঘাড়ে চেপে বসবে। আর হয়েছেও তাই। সকালে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে আর সন্ধ্যার পর মিলেছে রেজাল্ট। তাই এ সকল সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে শক্ত হাতে মোকাবেলা করার দাবি জানাচ্ছে সচেতন নাগরিকরা।

শুধুমাত্র সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিয়ে দায়িত্ব খালাস করলেই চলবে না। ত্রিপুরার সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশ বিরাজমান রাখার জন্য সময়উপযোগী পদক্ষেপ প্রয়োজন বলেই মনে করছেন সচেতন মহল।

For All Latest Updates

ভিডিও