Neermahal tourist spot latest update
পর্যটক হিসেবে আপনার একটি বেশ পছন্দের জায়গায় গিয়ে যদি সেখানে প্রবেশই না করতে পারেন , কিংবা যদি বলা হয় যে ঐ স্থান টি বন্ধ রয়েছে তবে আপনার কতটা খারাপ লাগতে পারে ভাবুন ? জীবন কখনো না কখনো এমন অভিজ্ঞতা হয়তো হয়েছে আপনাদেরও। তবে এধরণের অভিজ্ঞতা কোনোভাবেই রোজকার বিষয় হতে পারে না। কেননা যদি কোনো সমস্যা থাকেও তবুও তা সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু বর্তমানে রাজ্য ত্রিপুরায় এমনই একটি প্রসিদ্ধ পর্যটন স্থল রীতিমতো স্তব্ধ অবস্থায় পরে আছে দীর্ঘ ১৫ দিন যাবত।
ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম জল মহল বলে পরিচিত উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার মেলাঘরের রুদ্র সাগরে নির্মিত নীরমহল। জলের একেবারে মাঝামাঝি অবস্থান করায় এর নাম হয়েছে নীরমহল। বিভিন্ন ইঞ্জিন চালিত বোট কিংবা বৈঠা চালিত নৌকো দিয়ে প্রতিদিনই এপার থেকে ওপারে শতাধিক পর্যটকের যাতায়াত চলে এই প্রসিদ্ধ পর্যটন কেন্দ্রে। শুধু রাজ্যের নয়। বহিঃরাজ্য এমনকি সুদূর বাংলাদেশ সহ অন্যান্য বিদেশ থেকেও যখনই পর্যটকেরা ত্রিপুরায় আসেন তারা একবার হলেও এই প্রাসাদটি কে চোখের দেখা দেখতে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন। তবে বর্ষার মরশুম শুরু হতেই এ বছর নীরমহল পর্যটকদের ব্যাপক আশাহত হয়ে ফিরতে হচ্ছে রুদ্র সাগরের এপার থেকেই।
উল্লেখ্য, বিগত ১৫ দিন আগে থেকেই রুদ্রসাগরের গোটা হ্রদ জুড়ে অসংখ্য শ্যাওলা ও জলজ উদ্ভিদ , কচুরিপানা ইত্যাদির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে কোনো জলজ যান এগোতে পারছে না মহলের দিকে। কিছু কিছু জায়গা খালি দেখালেও মহলের সন্নিকটে প্রায় ১০ মিটারের মতো জায়গা পুরোপুরি ভাবে আবৃত কচুরিপানায়। আর সেকারনেই কোনো যাত্রীবাহী বোট কিংবা নৌকো ওপারে যাচ্ছেনা যাত্রী নিয়ে।
এই ঘটনা কিছুদিন আগে প্রকাশ্যে আসতেই সরকারের পক্ষ থেকে এই গোটা জলাশয় কে পরিস্কার ও কচুরিপানা মুক্ত করতে প্রয়াস চালানো হয়েছে। তবে দীর্ঘ ১৫ দিনের ও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও হাল ফেরেনি রুদ্র সাগরের। আজো বহু পর্যটক কে দেখা গেল হতাশাগ্রস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে। অনেকেই রাজ্যের কিংবা বহিঃ রাজ্যের পর্যটক রয়েছেন যারা এই বিষয়ে অবগত নন। আর সে কারণেই এভাবে ফিরে যাওয়া।
এদিকে বাংলাদেশ থেকে আগত এক জুটি কে ও দেখা গেল নীরমহল দেখতে এসে গোটা পরিস্থিতি দেখার পর মর্মাহত হতে। উনারা এক প্রকার আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, তারা অনেক আশা নিয়ে এই প্রাচীন প্রাসাদ টিকে এক নজর দেখার জন্যে এসেছিলেন। কিন্তু তা আর হল না।
এদিকে রুদ্র সাগরের এপারে যে কজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের বিভিন্ন স্টল কিংবা দোকান সাজিয়ে বসেছেন তাদের ও ব্যবসা একেবারে লাটে উঠেছে। কেননা পর্যটকদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় তাদের ও রুজি রুটিতে ভাটা পড়ছে।
সার্বিক পরিস্থিতি বিচার করে দেখা যায় রাজ্যের এক অন্যতম পর্যটন স্থল বিগত কয়েক দিনে নিজের মহিমা অনেকাংশেই হাড়িয়ে ফেলেছে। আর এই পর্যটন স্থলের উপর নির্ভর করে যারা দু পয়সা রোজগার করেন তাদের ও যেন মুখে অন্ন জোগাতে বেজায় কষ্ট করতে হচ্ছে। সেদিকে নজর রেখেও অন্তত সরকারের উচিৎ এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করা। তবে আদৌ সরকার কর্তৃপক্ষ এই প্রাচীন পর্যটন স্থলের মহিমা ফেরাতে কতটা প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সেটা নিয়েই সন্দেহ দেখা যাচ্ছে পর্যটকদের মধ্যে।