NCC PS Agartala News : ত্রিপুরা রাজ্যে কানায় কানায় ভরে আছে নেশা কারবারি, মানব পাচারকারী এবং অস্ত্র পাচারকারী দের মতো সমাজ দ্রোহীরা। যারা কিনা সমাজে নিরন্তর অপরাধ মূলক ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। এমনই এক অস্ত্র পাচারকারী প্রায় দেড় বছর পর পুলিশের সামনে এসে নিজেই ধরা দিয়েছে এবং আত্ম সমর্পণ করেছে। তার নাম শচীন রায়। বাড়ি আগরতলা ভিআইপি রোড সংলগ্ন গোয়ালা বস্তি এলাকায়।
ঘটনার বিবরন একেবারে শুরু থেকে শুরু করা যাক। উল্লেখ্য, গত বছর জুলাই মাসের ২৩ তারিখ উক্ত এলাকায় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালাবার অভিযোগ উঠে এই শচীন এর বিরুদ্ধে। এর পরপই সে পালিয়ে যায়। গোয়ালা বস্তি এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পুলিশে খবর দেন। এরপর এনসিসি থানার পুলিশ এসে শচীন এর খোঁজ করে তাকে না পেয়ে তার বাবা কে তুলে নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, সেদিন হাই কোর্ট সংলগ্ন ঐ এলাকায় শচীন রায় এক ব্যক্তির কাছে ড্রাগস বিক্রি করছিলো । সেই সময় তাকে ধরে ফেলে এলাকার কিছু যুবক। তখনই তাদের মধ্যে প্রথমে মৌখিক বিবাদ ও পরে হাতাহাতি শুরু হয়। অবশেষে, শচীন রায় তার বাড়ি থেকে একটি পিস্তল এনে ধুমাধুম দুই থেকে তিন রাউন্ড গুলি চালায়। নিশানা চুকে যাওয়ায় ঐ গুলি কাউকে ক্ষতি করতে পারেনি। নতুবা এদিন খুনাখুনি কাণ্ড ঘটে যেতে পারতো। এর পরেই শচীন নিরুদ্দেশ হয়ে যায়।
পরবর্তীতে পুলিশ এসে তার বাড়িতে তল্লাশি চালায় এবং তার বাবাকে তুলে নিয়ে যায়। এই ঘটনার বেশ কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পরও পুলিশ শচীনকে গ্রেফতার করতে পারছিল না । তখন লিচুবাগান সাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দারা সকলে মিলে প্রতিবাদে সামিল হন এবং এক ডেপুটেশান প্রদান করেন এনসিসি থানায়। কিন্তু তারপরেও কোন লাভ হয়নি । শচীনকে পুলিশ ধরতে পারেনি। সেই সঙ্গে তার কাছে থাকা অস্ত্রটিও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
এই নিয়ে অবশেষে পত্র পত্রিকায় ও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় । কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছিলো না। অবশেষে ১৮ই নভেম্বর ঘটে গেল এক আশ্চর্যয়ের ঘটনা। যে শচীন পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেরাচ্ছিল এবার সে নিজেই এসে আত্ম সমর্পণ করেছে। সেদিন আদালতে তাকে পাঁচদিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠায়। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চালালে ও মুখ খোলেনি সে।
অবশেষে বুধবার তাকে পুনরায় আদালতে তোলা হলে আদালত আরও তিন দিনের জন্য তাকে পুলিশ রিমান্ডে পাঠায়। পুলিশ সূত্রে খবর শচীনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে চায় এই অস্ত্র তার কাছে কোথা থেকে এসেছিল। দুদিন আগে বিহার এর এক যুবক অস্ত্র পাচার করতে গিয়ে আমতলী বাইপাস এলাকায় ধরা পরে। সেই যুবকের সাথে শচীন এর কোনো যোগ সূত্র আছে কিনা সেটাও জানার চেষ্টা করে পুলিশ।
এখন দেখার এই তিন দিনে পুলিশ শচীনের মুখ থেকে সকল রহস্য বেড় করতে পারে কিনা। অন্যদিকে যে পিস্তল টি দিয়ে সে গুলি চালিয়েছিল সেই অস্ত্র টি ও উদ্ধার হয়নি। সেটিও উদ্ধার হয় কিনা সেদিকেও তাকিয়ে আছেন গোয়ালা বস্তি বাসী। অন্যদিকে তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, শচীন কে আর ঐ এলাকায় ঢুকতে দেবেন না তারা। তাকে যেন আইনানুগ ভাবে কঠিন সাঁজা দেওয়া হয় এমনটাই দাবী তাদের।



