Kamalpur CPIM : বিহার নির্বাচন এর ফলাফল ঘোষণা হতেই ত্রিপুরা রাজ্যে আবারো মাথা চারা দিয়ে উঠেছে দুষ্কৃতীরা। দিকে দিকে আক্রান্ত বিরোধী দলীয় পার্টি অফিস ও কর্মী সমর্থকদের দোকান পাঠ। এখনি যদি এই অবস্থা হয় তবে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের পর কি অবস্থা হবে তা ভেবেই আতঙ্কে আছেন ত্রিপুরার শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ।
উল্লেখ্য , শুক্রবার ছিল বিহার নির্বাচনের ভোট গণনা। ব্যাপক জন সমর্থন নিয়ে বিহারে জয়লাভ করে বিজেপি। সেই আনন্দ উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পরে ত্রিপুরা রাজ্যেও । দিকে দিকে আয়োজিত হয় শুভেচ্ছা রেলি। কিন্তু একই সাথে ত্রিপুরা রাজ্যের ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় আক্রমণের শিকার হয় বিরোধী দলীয় পার্টি অফিস গুলো।
এন ডি এ জোটের বিপুল জয়ের পর এদিন ত্রিপুরার বাগবাসা, প্রতাপগড় সহ কমলপুরে ও সিপিআইএম এর কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনা সামনে এসেছে।
শুক্রবার রাতে কমলপুর সি পি আই এম মানিকভান্ডার মহকুমা কার্যালয়ে অগ্নি সংযোগ ঘটায় দুষ্কৃতীরা। শুধু তাই নয়, বাজারে এক দর্জি তথা সি পি আই (এম )সমর্থক মোহনলাল দে ‘র দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
এই ঘটনার নেপথ্যে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতী কারীরা রয়েছে বলেই অভিযোগ করছে বামেরা। শনিবার সকালে ধলাই জেলা সম্পাদক অঞ্জন দাস, মহকুমা সম্পাদক অমর ভট্টাচাৰ্য, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সুলেমান আলী, উপজাতি নেতা বদরভূম হালাম সহ প্রতিনিধি দল ভস্মীভূত পার্টি অফিস টি পরিদর্শন করেন। অতপর এই অগ্নি সংযোগ এর ঘটনা প্রত্যক্ষ করে জেলা সম্পাদক অঞ্জন দাস বিজেপি কে তীব্র ভাষায় ভতসর্ণা করেন এদিন।
তিনি অভিযোগ করেছেন জে বিহারের নির্বাচনী ফলাফলের খবর প্রকাশের পরপরই কমলপুর মানিক ভাণ্ডার বাজারে প্রথমেই একাংশ দুষ্কৃতী চাঁদাবাজি শুরু করে দেয় আনন্দ উল্লাস করার জন্য। এই সূত্র ধরেই বাজারের এক দর্জি ব্যবসায়ীর দোকান ভাঙচুর করাহয়।
রাত প্রায় ১০ টার পর থেকেই মানিক ভাণ্ডার বাজার সহ কমল্পুরের বিভিন্ন এলাকায় দুর্বৃত্তরা তাণ্ডব চালাতে শুরু করে। তার মধ্যে অন্যতম ঘটনা মানিক ভাণ্ডার সিপিআইএম মহকুমা অফিস ভাংচুরের ঘটনা।
এর আগেও ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হবার পর বহুবার এই পার্টি অফিস আক্রান্ত হয়েছে। এদিন বিহার নির্বাচনে এনডিএ র জয় কে ঘিরে কিছু অসাধু বিজেপি কর্মীরা আবারো এই পার্টি অফিস কে নিশানা দেগে আগুন লাগায়। যাতে পার্টি অফিসে থাকা বহু জরুরী নথি পত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
জনগণের অর্থ দিয়েই অফিস টিকে মেরামত করে জনগণের স্বার্থে আবারো সাংগঠনিক কাজ পরিচালনা শুরু করেছিল বামেরা। কিন্তু বিজেপি দুর্বৃত্তরা আবারো এই অফিস নষ্ট করে দিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন অঞ্জন দাস। সিপিআইএম জনগণের পার্টি। জনগণ এর অর্থেই এই অফিস ঘর তৈরি হয়েছে। জনগণ চেয়েছে বলেই বারবার আক্রমণের পরেও এই পার্টি অফিস কে মেরামত করে সাংগঠনিক কাজ জারি রেখছেন বামেরা। কিন্তু এর পরেও কেন বারবার এই আক্রমণ ? এই ঘটনার তীব্র ধিক্কার জানিয়েছেন কমল্পুরের বাম কর্মীরা।
সিপিআইএম দুর্নীতির টাকা, কর্পোরেট এর টাকা, ইলেক্টোরাল বন্ড এর টাকা স্পর্শ করে না। সম্পূর্ণ ভাবে জনগণের টাকা দিয়ে চলে পার্টি। তাই জনগণের জন্যেই কাজ করে দল। তাই জনগণের প্রতি বিজেপি সরকার এর সাড়ে ৭ বছরের স্বৈরাচারী শাসন এর অবসান ঘটাতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন বাম নেতৃত্ব।
এদিকে বিহারে বিজেপির জয় নিয়ে আনন্দ উল্লাশ করতে গিয়ে গতকাল ৪ বরজলা বিধানসভা কেন্দ্রের মণ্ডল এর এক নেতা প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন যে বামেদের মেরে নাকি তাদের পিঠের চামড়া তুলে দেওয়া হবে। জীবন যৌবন নিয়ে সঙ্কটে পড়তে হবে। তবে কি দিকে দিকে বামেদের পার্টি অফিস আক্রমণ এর ঘটনার পেছনে বিজেপি কর্মীদের সংযোগ থাকার অভিযোগ কে শিলমোহর দিচ্ছে মণ্ডল নেতার এই বক্তব্য ? বিজেপি শিবির যদিও চুপ। কেউ কেউ বলছেন সিপিআইএম এর পার্টি অফিস নাকি তাদের কর্মীরাই ভাঙ্গছে। যদিও সত্যতা কি তা রাজ্যের শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ জানেন।
তবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যে কোনো রাজনৈতিক দলেরই রাজনীতি করার অধিকার কেড়ে নেওয়া কিংবা পার্টি অফিস ভাঙচুর , অগ্নি সংযোগ করার মতো ঘটনা সম্পুন ভাবেই অনৈতিক, অগনতান্ত্রিক ও সংবিধান বিরোধী। যদিও রাজ্য প্রশাসন যে এসমস্ত ঘটনার পেছনে জড়িত দের কাউকেই ধর পাকর করতে তৎপরতা দেখাবে না সেটাও বাস্তব।
বিহার নির্বাচনের ফলাফল দেখার পরেই যদি রাজ্যে এই অবস্থা হয় তবে আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম রাজ্যের নির্বাচন রয়েছে এবং ২০২৮ এ রয়েছে ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন। তখন রাজ্যের অবস্থা কি হবে, সেটা ভেবেই আতঙ্কে আছেন এখন রাজ্যের একটা বিশাল অংশের মানুষ।



