Jitendra Choudhary : ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা প্রায়শই বলেন, “যশস্বী প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদে ও নীতিতে বিকশিত হচ্ছে ভারত এবং তৎসঙ্গে ত্রিপুরাও।” কিন্তু রাজ্যের বাস্তব চিত্র কিছুটা ভিন্ন ভাষায় কথা বলছে। কড়ইমুড়া অঞ্চলে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও ডাকাতির ঘটনাই যেন সেই কথার স্পষ্ট প্রতিবিম্ব। গত ১৭ই জুন, বামপন্থী কর্মী মোশাররফ হোসেনের বাড়িতে দিনে-দুপুরে সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের দ্বারা একটি পরিকল্পিত ডাকাতির ঘটনা ঘটে। আগ্নেয়াস্ত্রের প্রকাশ্যে মহড়া এবং সহিংস তাণ্ডবের এই ঘটনায় এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হলেও, এখনো পর্যন্ত অপরাধীরা অধরা।
মঙ্গলবার, ঘটনার পরিদর্শনে এসে বিরোধী দলনেতা জীতেন্দ্র চৌধুরী বলেন,
“এই ধরনের ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে ত্রিপুরার ‘বিকাশ’ আসলে কতটা ভয়াবহ ও অগণতান্ত্রিক পথে পরিচালিত হচ্ছে। শাসক দলের জনপ্রতিনিধির এলাকাতেই এ ধরনের বর্বরোচিত ঘটনা প্রমাণ করে, এর পেছনে রাজনৈতিক মদত আছে।
তার সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে সহ বাম নেতৃত্বের অন্যান্য সদস্যরা। তাদের মতে, পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং শাসক দলের প্রভাব-প্রতিপত্তির ফলে অপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এই ঘটনা আবারও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
ত্রিপুরায় বিজেপি শাসনের অন্যতম সমালোচিত দিক হলো পুলিশ ও প্রশাসনের কার্যকলাপে পক্ষপাতিত্ব। রাজনৈতিক অপরাধে অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়া, কিংবা থানায় অভিযোগ গ্রহণ না করার ঘটনা বহুবার সংবাদে উঠে এসেছে। বার বার অভিযোগ উঠে আসে বিজেপি সরকার তাদের চাহিদা, সংস্কৃতি ও নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করছে। বহু জায়গায় জমি অধিগ্রহণ, উন্নয়নের নামে উচ্ছেদ, ও ভাষাগত অধিকার খর্বের অভিযোগ ও উঠেছে।
বিজেপি ‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার’-এর নাম করে উন্নয়নের বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিলেও, মুল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার দুরবস্থা, এবং গ্রামীণ এলাকার অব্যবস্থাপনা প্রকৃত চিত্র উন্মোচন করে দিচ্ছে। ত্রিপুরায় গণতন্ত্র এখন কেবল নির্বাচনী পোস্টারে সীমাবদ্ধ। ময়দানে যা চলছে তা ক্ষমতার জবরদস্তি।