Jatrapur Ganja News : যেমন কথা, তেমনই কাজ—আগেই দেওয়া হুঁশিয়ারি কার্যকর করে ফের একবার গাঁজা বিরোধী অভিযান চালাল যাত্রাপুর থানার পুলিশ। রবিবার ভোরে যাত্রাপুর থানাধীন উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ গাঁজা চাষ ধ্বংস করা হয়। অভিযানে প্রায় ৭ হাজার ফলন্ত গাঁজা গাছ কেটে সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকাল প্রায় সাড়ে ছ’টা নাগাদ যাত্রাপুর থানার ওসি সিতি কণ্ঠ বর্ধনের নেতৃত্বে এই অভিযান শুরু হয়। অভিযানে যাত্রাপুর থানার পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি ১১ নম্বর টিএসআর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরাও অংশ নেন। প্রায় ২০ জনের একটি সুসজ্জিত দল দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে গভীর জঙ্গলে পৌঁছায়।
যাত্রাপুর থানা থেকে আনুমানিক ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জগতরামপুর এলাকার দক্ষিণ তৈছমা কলোনির ঘন জঙ্গলে গাঁজা চাষের গোপন তথ্য পায় পুলিশ। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই দ্রুত অভিযান চালানো হয়। অভিযানে প্রায় ছয় থেকে সাতটি আলাদা প্লটে গাঁজা চাষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। প্রতিটি প্লটেই বড় আকারে গাঁজা গাছ বেড়ে উঠেছিল, যেগুলি কেটে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে যাত্রাপুর থানার ওসি জানান, “আজ সকাল সাড়ে সাতটা থেকে ন’টা পর্যন্ত আমরা এই অভিযান চালাই। আমাদের কাছে অবৈধ গাঁজা চাষের নির্ভরযোগ্য তথ্য ছিল। সেই অনুযায়ী আমরা জগৎরামপুর ভিলেজের অন্তর্গত সাউথ কুচামা এলাকার গভীর জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে প্রায় ছয় থেকে সাত হাজার গাঁজা গাছ কেটে ধ্বংস করেছি। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ চাষ ছিল।”
তিনি আরও জানান, এই চাষের সঙ্গে যারা যুক্ত রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি মৌসুমে যাত্রাপুর থানাধীন এলাকায় এই নিয়ে মোট ১৫ দফা গাঁজা বাগান ও নার্সারির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ উদ্যোগে লাগাতার অভিযান চলবে বলেও স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে।
অবৈধ মাদক চাষ বন্ধ করতে প্রশাসন যে কঠোর অবস্থানে রয়েছে, এই অভিযান তারই এক স্পষ্ট দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
যাত্রাপুর থানাধীন এলাকায় ধারাবাহিক গাঁজা বিরোধী অভিযানের মাধ্যমে পুলিশ প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে অবৈধ মাদক চাষের বিরুদ্ধে তারা কোনো রকম আপস করবে না।
যৌথ বাহিনীর সক্রিয় তৎপরতায় একের পর এক গাঁজা বাগান ধ্বংস হওয়ায় মাদক চক্রের ওপর বড়সড় চাপ সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের এই কঠোর অবস্থান ভবিষ্যতে মাদক চাষ ও পাচার রোধে কার্যকর ভূমিকা নেবে বলে আশা করা যায়। পাশাপাশি স্থানীয় মানুষদের সচেতনতা ও সহযোগিতা থাকলে এই ধরনের অপরাধ নির্মূলে আরও দ্রুত সাফল্য আসবে—এমনটাই মনে করছে প্রশাসন।



