Gautam Adani scandal
মার্কিন ডলার ঘুষ নেওয়ায় অভিযুক্ত আদানি, মোদীর সহযোগিতা রয়েছে দাবী রাহুলের
ভারতের অন্যতম ধনী ব্যবসায়ী আদানির বিরুদ্ধে এবার আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা হয়েছে। ২২০০ কোটি মার্কিন ডলার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগেই নাকি এই মামলা। আদানির বিরুদ্ধে আমেরিকায় গ্রেপ্তারির পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
নতুন করে বিপাকে পড়তে চলেছেন আদানি গ্রুপ অফ কম্পানিজ এর চেয়ারম্যান গৌতম আদানি। সম্প্রতি হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের জেরে একবার চাপের সম্মুখীন হয়েছিলেন। এবার তার চাইতে ও বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে আদানি দের জন্যে। আর এবারের ধাক্কায় সোজা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা হয়েছে ভারতের এই অন্যতম ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।
দেশের অন্যতম ধনী ব্যক্তির বিরুদ্ধে এবার নাকি বড়সড় কেলেঙ্কারির অভিযোগ আনা হয়েছে সুদূর আমেরিকার আদালতে। অভিযোগ, ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের বরাত পেতে নাকি ভারত সরকারের আধিকারিকদের ২৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন গৌতম আদানি আর এর সাথে জড়িয়ে রয়েছেন উনার ভাইপো সাগর ও । ভারতীয় মুদ্রায় এই অর্থরাশি প্রায় ২২০০ কোটি টাকারও বেশি।
অভিযোগ, ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের বরাত পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল আদানি গোষ্ঠী । আর তাই তারা ভারত সরকারের আধিকারিকদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। ওই প্রকল্পের বরাত পেলে আগামী ২০ বছরে প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার লাভের আশা ছিল আদানি গোষ্ঠীর। তাই ভারতীয় আধিকারিকদের ঘুষ দেওয়া হয়েছে। আর এই অভিযোগ মুলেই আদানি , তার ভাইপো সাগর সহ আরও ৭ জন এর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে আদালতে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে , ভারতীয় সরকারি আধিকারিকদের ২৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব তো বটেই এমনকি মার্কিন বিনিয়োগকারী ও ব্যাঙ্কের কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে আদানি ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে। তাতে প্রভাবিত হয়ে আদানিদের সংস্থায় প্রচুর বিনিয়োগ করেছিলেন মার্কিন বিনিয়োগকারীরা। অঙ্কটা প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এর মতো হবে। এতে করে আদানি গ্রিন নামক সংস্থাও বিপুলভাবে লাভবান হয়েছে।
এই অভিযোগের জেরে মামলা হবার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই তার পাশাপাশি বিশ্বের একাধিক দেশে আদানিদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ধস নামতে পারে শেয়ার বাজারেও। সদ্যই হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের ধাক্কা সামলাতে হয়েছে আদানি গোষ্ঠীকে। এবার নয়া ধাক্কা এল খোদ মার্কিন প্রশাসনের তরফে। এর প্রভাব যে সরাসরি ভারতীয় অর্থ নীতিতে ও পড়বে তাতে সন্দেহ নেই।
তবে এই গোটা ঘটনার পেছনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ করতে শুরু করেছেন বিরোধী শিবির প্রধান রাহুল গান্ধী। এর আগে কয়লা কেলেঙ্কারি ও হিন্ডেন বারগ রিপোর্ট সামনে আসাতে ও সরব হয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। নেমেছেন পথে, করেছিলেন আন্দোলন । কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আদানি কে সোজা পথে রেহাই পাইয়ে দিয়েছেন মোদী সরকার। এবারে ও রাহুলের বক্তব্য, কোনো তদন্ত হবে না, গ্রেফতারি ও হবে না। কারণ আদানি কে সহযোগিতা করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উনি আরও বলেন, এ দেশে মুখ্যমন্ত্রীরা গ্রেপ্তার হন, আদানি কেন নন? আসলে প্রধানমন্ত্রীও ওঁর সাথে জড়িত।” মোদিকে খোঁচা দিয়ে রাহুল বললেন, “প্রধানমন্ত্রী আসলে এক হ্যায় তো সেফ হ্যায় মন্ত্রে বিশ্বাসী। ১০-১৫ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীরা গ্রেপ্তার হন, অথচ ২০০০ কোটির দুর্নীতিতে আদানির কিছু হয় না।”
এবার দেখার বিষয় আদানির বিরুদ্ধে মার্কিন আদালতে দায়ের মামলা ও কি বিরোধী দের চক্রান্ত বলেই চালিয়ে দেবেন মোদী সরকার ? নাকি এর পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করবেন ?