Dharmanagar Prasenjit Sarkar : ডেলিভারি কর্মী প্রসেনজিৎ সরকার মৃত্যু কাণ্ডে অবশেষে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেল ধর্মনগর পুলিশ। ঘটনার মূল তিন অভিযুক্তকে আসাম রাজ্যের শ্রীভূমি জেলার রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে গভীর রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। এই গ্রেপ্তারের ফলে দীর্ঘ কয়েকদিন ধরে চলা তদন্তে গতি এল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারের পর অভিযুক্তদের প্রথমে চুড়াইবাড়ি থানায় আনা হলেও পরিস্থিতির গুরুত্ব ও ক্রমবর্ধমান জনরোষের কথা মাথায় রেখে তাদের সেখানে না রেখে সরাসরি জেলা দায়রা আদালতে তোলা হয়। নিরাপত্তাজনিত কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
আদালত চত্বরে এদিন ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ধর্মনগরের যুবসমাজের একাংশ এবং বিভিন্ন ডেলিভারি সংস্থার কর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আদালত ও সংলগ্ন এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন উত্তর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
এই মামলার শুনানি গ্রহণ করেন সিজিএম দেবলীনা কিলিকদার। গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তদের নাম সুস্মিতা ভট্টাচার্য, সঙ্গীতা ভট্টাচার্য এবং সৌরভ ভট্টাচার্য। সূত্রের খবর, জনরোষের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আদালত অভিযুক্তদের সরাসরি জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিতে পারে।
উল্লেখ্য, ডেলিভারি সংক্রান্ত একটি বিবাদকে কেন্দ্র করে প্রসেনজিৎ সরকারের সঙ্গে অভিযুক্তদের বচসা ও মারধরের অভিযোগ ওঠে। এর কিছু সময় পরেই তাঁর রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে ধর্মনগর ও আশপাশের এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর থেকেই দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবিতে পথে নামেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। ধর্মনগরে ন্যায়বিচারের দাবিতে সংঘটিত হিংসাত্মক ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে সবাইকে সংযত থাকার অনুরোধ জানানো হয়। প্রশাসন ও আইনের উপর আস্থা রেখে তদন্ত প্রক্রিয়াকে সহযোগিতা করার আহ্বানও জানিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
ডেলিভারি কর্মী প্রসেনজিৎ সরকার মৃত্যু কাণ্ডে তিন মূল অভিযুক্তের গ্রেপ্তার নিঃসন্দেহে তদন্তের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। তবে এই ঘটনার মাধ্যমে সমাজে নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার এবং কর্মরত মানুষের সম্মান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠে এসেছে। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও প্রতিবাদ দেখিয়ে দিয়েছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হলে বিচার প্রক্রিয়ায় গতি আনা সম্ভব। এখন সকলের দৃষ্টি আদালতের রায়ের দিকে। প্রশাসন ও আইনের উপর আস্থা রেখে শান্তিপূর্ণভাবে ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করাই এই মুহূর্তে সমাজের কাছে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।



