Cpim Tripura News : সংসদে মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্প (মনরেগা) সংশোধন করে ‘ভিবিজি রামজি’ নামে একটি নতুন বিল আনার প্রস্তাব ঘিরে দেশজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, এই নতুন বিল ও প্রকল্পের আড়ালে খেটে খাওয়া রেগা শ্রমিকদের অধিকার ও রোজগারে সরাসরি কোপ বসাতে চাইছে কেন্দ্র সরকার। সেই অভিযোগকে সামনে রেখেই এবার আন্দোলনের পথে নামল ত্রিপুরা খেত মজুর ইউনিয়ন।
শুক্রবার এই নয়া বিল প্রত্যাহারের দাবিতে আগরতলার রাজপথে এক সুবিশাল মিছিল ও সভার আয়োজন করে সংগঠনটি। সিটি সেন্টার সংলগ্ন এলাকায় মূল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল ও সভায় বিপুল সংখ্যক ক্ষেতমজুর ও কৃষিশ্রমিকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। আন্দোলনকারীদের হাতে ছিল প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার, যেখানে নয়া বিলকে ‘শ্রমিক বিরোধী’ ও ‘গরিব বিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়।
সভায় সংগঠনের সম্পাদক শ্যামল দে তীব্র ভাষায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “এই সরকার চায় না গরিব মানুষ কাজ করে পয়সা রোজগার করুক। নতুন বিলে বলা হয়েছে কৃষি মরশুমে মনরেগার কাজ করা যাবে না। এটা একেবারেই অযৌক্তিক ও অবাস্তব।” তাঁর মতে, কৃষি মরশুমে কাজ বন্ধ রাখলে কীভাবে শ্রমদিবস সৃষ্টি হবে এবং লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করবে, তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা সরকারের কাছে নেই।
শ্যামল দে আরও অভিযোগ করেন, এই ধরনের ‘আজগুবি’ নিয়ম চাপিয়ে দিয়ে দেশের দরিদ্র মানুষের উপর আর্থিক আঘাত নামিয়ে আনতে চাইছে সরকার। তিনি বলেন, “ভারতের লক্ষ কোটি গরিব মানুষ কাজ করে রোজগার করবে না—এমন চিন্তাভাবনা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিপন্থী।” তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে, মনরেগা শুধুমাত্র একটি প্রকল্প নয়, বরং গ্রামীণ দরিদ্র মানুষের বাঁচার অধিকার।
এদিনের সভা থেকে জানানো হয়, এই বিলের বিরুদ্ধে ক্ষেত মজুর ইউনিয়ন, সারা ভারত কৃষি শ্রমিক সংগঠন এবং দেশের বিভিন্ন শ্রমিক ও সংঘর্ষ কমিটি একযোগে আন্দোলনে নামছে। ১৯ ডিসেম্বর দিনটিকে ‘প্রতিবাদ দিবস’ হিসেবে পালন করার ডাক দেওয়া হয়।
শ্যামল দে তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করেন, “এই জনবিরোধী ও জনস্বার্থবিরোধী বিল শুধু বক্তব্য দিয়ে রুখে দেওয়া যাবে না। এর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।” তিনি রাজ্য ও দেশের সকল স্তরের মানুষ, বিশেষ করে শ্রমজীবী ও দেশপ্রেমিক নাগরিকদের এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
সভা শেষে আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দেন, দাবি মানা না হলে আগামী দিনে আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে।



