Cow smugglers captured
পশ্চিমবঙ্গ কে অনুসরণ করেই এগোচ্ছে ত্রিপুরা। গরু পাচার কাণ্ডে পশ্চিমবঙ্গের তাবড় তাবড় নেতারা আজ হাজতে। ত্রিপুরায় অবশ্য তাবড় নেতা কিংবা মূল মাস্টার মাইন্ড কে ধরপাকড় করতে না পারলেও ছোট খাটো পাচারকারীদের কে ঠিকই জ্বালে তুলছে পুলিশ কিংবা সীমান্ত রক্ষীরা। শুধু পাচারের ক্ষেত্রেই নয়, নেশা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ও অবশ্য এই সফলতা পাচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু সেটাই কি যথেষ্ট ?
উল্লেখ্য, কুমারঘাটের নামি দামি গরু পাচারকারী বাছু মিয়া বহুদিন ধরেই পুলিশের টার্গেটে থাকলেও তাঁকে ধরতে পারা আর সম্ভব হচ্ছেনা। এদিকে সে দেদার চালিয়ে যাচ্ছে তার গরু পাচার এর অবৈধ বানিজ্য। রাজ্য থেকে বহিঃরাজ্য মিজোরাম এমনকি বাংলাদেশে ও ব্যাপক হারে গরু পাচার করে চলেছে বাছু মিয়া। এবার এমনই এক পাচার কাণ্ড ভেস্তে গেল বিএসএফ কর্মীদের প্রয়াসে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতেও বছু মিয়া দশটি গরু বাংলাদেশে পাচারের ছক কষেছিল। এদিন রাত আনুমানিক সোয়া আটটা নাগাদ উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগর মহকুমাধীন মালাকার বস্তি বিওপির বিএসএফ জওয়ানরা ভারত বাংলা সীমান্ত থেকে TR05F-1797 নম্বরের গরু বোঝাই একটি বলেরো গাড়ির পিছনে ধাওয়া করলে বলেরো গাড়িটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে বিএসএফ জওয়ানরা অনায়াসেই গাড়িটি আটক করতে সক্ষম হয়। সাথে গাড়িতে থাকা গরু সহ দুই অন্তরাষ্ট্রীয় গবাদিপশু পাচারকারীকে আটক করে। তৎক্ষণাৎ স্থানীয় কিছু মহিলা গবাদিপশু পাচারকারীর পক্ষ নিয়ে বিএসএফ জওয়ানদের সাথে ঝামেলা পাকাতে থাকে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে খবর যায় ধর্মনগর থানায়। অবশেষে ধর্মনগর থানার পুলিশ এর সহযোগিতায় বিএসএফ জওয়ানরা গরু বোঝাই গাড়ি সহ দুই পাচারকারীকে তাদের বিওপিতে নিয়ে যায়। বাছু মিয়ার নির্দেশেই এই পাচার হতে যাচ্ছিলো বলে খবর।
পরবর্তীতে সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে শুক্রবার দুপুর দেড়টা নাগাদ গরু সহ বলেরো গাড়ি ও দুই পাচারকারীকে ধর্মনগর থানার হাতে সমঝে দেয় বিএসএফ জওয়ানরা । ধর্মনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হিমাদ্রী সরকার জানান ছোট বড় মিলে মোট দশটি গরু উদ্ধার হয়েছে সেই বোলেরো গাড়ি থেকে। যে দুজন কে আটক করা হয়েছে তাদের নাম লিয়াকত আলি এবং ইসলাম উদ্দিন। ধৃতদের বাড়ি ধর্মনগরের সাকাইবাড়ি এলাকায় বলে জানা গেছে। ধৃতরা পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানায়,গরু গুলি কুমারঘাটের বছু মিয়ার এবং এগুলি বাংলাদেশ পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। স্থানীয় থানায় এ নিয়ে একটি মামলা রুজু হয়েছে। শনিবার ধৃতদের ধর্মনগর জেলা ও দায়রা আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান পুলিশ। সাথে গরু গুলি গো-শালায় পাঠানো হবে বলেও জানায় পুলিশ।
উল্লেখ্য, রাজ্য থেকে অহরহ বাংলাদেশে গরু পাচার হয়ে আসছে দীর্ঘদিন যাবত । অনেক ক্ষেত্রে বার্মিজ গরু ও বাংলাদেশ পাচার হচ্ছে। এক্ষেত্রে দামছড়া থানার বুক চিড়ে রাজ্যকে করিডোর করে অনায়াসেই বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে গরুগুলি। এর মূল মাস্টার মাইন্ড বছু মিয়ার নামে অন্তরাষ্ট্রীয় গবাদিপশু পাচারের অভিযোগ থাকলেও রাজ্য পুলিশ তার বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সাহস দেখায় নি। এর পেছনে কোনো বড় রাজনৈতিক মাথা রয়েছে কি না সেই নিয়ে বিশাল সন্দেহ দানা বাধতে শুরু করে দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।