Congress Press Meet : ভারতের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিরোধী দলনেতা শ্রী রাহুল গান্ধী এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেছেন, দেশের গণতন্ত্র আজ গভীর সংকটে। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, বর্তমান বিজেপি সরকার জনগণের ভোটে নয়, বরং “ভোট চুরির মাধ্যমে” ক্ষমতায় এসেছে। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতায় এবং প্রশাসনিক সংস্থাগুলোর অপব্যবহার করে বিজেপি বেআইনি উপায়ে সরকার গঠন করেছে।
এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই জানান বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন। এদিন তিনি আরও জানান,
এই প্রেক্ষাপটে কংগ্রেস পার্টি আগামী নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে নয়াদিল্লির রামলীলা ময়দানে এক ঐতিহাসিক গণসমাবেশের আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সমাবেশ থেকে কংগ্রেস প্রায় পাঁচ কোটিরও বেশি নাগরিকের স্বাক্ষর সহ রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দেবে, যেখানে ভোট চুরির অভিযোগ ও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার প্রশ্ন তুলে ধরা হবে।
রাহুল গান্ধী বলেন, “যে সরকার ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসে, তাদের গণতান্ত্রিক বৈধতা নেই। গণতন্ত্রকে বাঁচানো এখন প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব।” তিনি আরও জানান, কংগ্রেস অহিংস ও শান্তিপূর্ণ পথে লড়াই চালিয়ে যাবে, যাতে তপশিলী জাতি, ওবিসি, আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের ভোটাধিকার রক্ষা করা যায়।
তিনি বিশেষভাবে তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন, “গণতন্ত্রকে বাঁচানোর দায়িত্ব এখন তোমাদের কাঁধে। ভয় নয়, সত্যের পক্ষে দাঁড়াও।”
রাহুল গান্ধীর এই অবস্থানকে সমর্থন জানিয়ে কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “দেশের বর্তমান অবস্থা সত্যিই উদ্বেগজনক। নির্বাচন কমিশন, ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্সের মতো সংস্থাগুলো আজ বিজেপির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। সংবিধান যেখানে সবার জন্য সমান, সেখানে এখন দেখা যাচ্ছে, বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে আইন ব্যবস্থাকেই ব্যবহার করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “১৫০ জন বিরোধী সাংসদকে বহিষ্কার করে নির্বাচন কমিশনের আইন পরিবর্তন করা হয়েছে, যাতে কমিশনের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে বিচারিক পদক্ষেপ নেওয়া না যায়। এটা গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত।”
সুদীপ রায় বর্মন দাবি করেন, এই সরকার দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিচ্ছে, এবং ইলেকশন কমিশনকে পুতুলে পরিণত করেছে। তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্য থেকে ২ লক্ষ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই স্বাক্ষর অভিযানে যোগ দিয়েছেন। এটা প্রমাণ করে— মানুষ আর এই অন্যায় মেনে নিতে রাজি নয়।”
কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছে, রামলীলা ময়দানের সেই ঐতিহাসিক সভা থেকে রাহুল গান্ধী ও দলের প্রতিনিধিরা রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি জমা দেবেন। সেখানে দাবি জানানো হবে, ভোটার তালিকার জালিয়াতি বন্ধ করতে হবে, নির্বাচনী ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে হবে, এবং ভোট চোরদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
রাহুল গান্ধী ও সুদীপ রায় বর্মনের বার্তা এক— “গণতন্ত্র আজ বিপন্ন, কিন্তু জনগণের ঐক্যই তার পুনর্জন্ম ঘটাবে।” কংগ্রেস বিশ্বাস করে, সত্য ও সংবিধানের শক্তিতে অন্ধকার ভেদ করে নতুন আলোর সকাল আসবেই। গণতন্ত্রের পক্ষে এই লড়াই কেবল কংগ্রেসের নয়, এটি সমগ্র ভারতের মানুষের লড়াই।



