CM Khumulung News : কমিউনিস্ট রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন কি ত্রিপুরার মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহা ? যেদিকে তাকাচ্ছেন সেদিকেই আজকাল উনার নজরে পড়ছে কমিউনিস্ট ? স্বদলীয় গোষ্ঠী কোন্দল কিংবা শরিক দলের সন্ত্রাস, সব কিছুতেই উনি কমিউনিস্ট দের উপস্থিতি খুঁজে নিচ্ছেন , কেন ?
এই প্রশ্নই এখন উঠছে আম জনতার মনে।
সরকার উনার, ক্ষমতা উনার । এডিসি পরিচালক তিপ্রা মথা ও উনার দলের সাথেই শরিক। আবার সেই এডিসি তে সরিকের হাতেই মার খাচ্ছে বিজেপি। অথচ মুখ্যমন্ত্রি সেখানে ও দেখতে পাচ্ছেন কমিউনিস্ট দের।
এডিসি তে শান্তি স্থাপনে ব্যর্থ বিজেপি, ব্যর্থ তিপ্রা মথা এবং ব্যর্থ প্রশাসন। কিন্তু সব কিছুর দায় গিয়ে বর্তাচ্ছে কমিউনিস্ট দের উপর। কেন আজ এই প্রসঙ্গ উঠে এলো তা বুঝতে হলে আগে জানতে হবে খুমলুঙ্গে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী করা একটি মন্তব্য , যাকে ঘিরে এতগুলো প্রশ্ন উঠছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, কিছু লোক আজো কমিউনিস্ট এর মানসিকতা পোষণ করে। তারাই এই সন্ত্রাস চালাচ্ছে।
ত্রিপুরা রাজ্যে ক্ষমতা সীন সরকারের শরিক দল তিপ্রা মথার সমর্থকেরা একের পর এক হামলা হুজ্জুতি চালিয়ে সম্প্রতি রাজ্যের এডিসি এলাকা গুলিতে শান্তির বাতাবরং নষ্ট করে চলেছে। তারই পাল্টা দিতে গিয়ে বিজেপি দলও একাধিক জায়গায় মথার পার্টী অফিস জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। উভয়েই উভয়ের দিকে অভিযোগ এর তির শানাচ্ছে। এই ঘটনাবলী নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কে বারংবার প্রশ্ন করলে উনি বলছেন যে এসব সুস্থ রাজনীতির পরিচয় নয়, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন প্রশাসন। কিন্তু একই সঙ্গে উনি দোষারোপ করছেন কমিউনিস্ট দের ।
খুম্লুঙ্গে গত কাল আবারো বিজেপি মথার সংঘর্ষে উত্তাপ ছড়ায়। পার্টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়া সহ বিজেপি কর্মীর বাড়িতে ঢুকে হামলা হুজ্জুতি চালানো হয়। আক্রান্ত পরিবার ও নিজের মুখেই ঘটনা বিস্তারে জানিয়েছেন। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী অবস্থা খতিয়ে দেখতে গেলে , আক্রান্ত পরিবার গোটা ঘটনা জানিয়ে তিপ্রা মথা আশ্রিত দুর্বৃত্ত দের দিকে নিশানা দেগেছেন।
স্পষ্ট ভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে এই বিবাদ বিজেপি ও মথা দুই পক্ষের আভ্যন্তরীণ কোন্দল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বারংবার এই ঘটনা গুলোর জন্যে কমিউনিস্ট দের প্রসঙ্গ তুলে আনছেন। উনার মতে আজো বহু মানুষ কমিউনিস্ট দের মানসিকতা ধরে রেখেছে। যে কারণে তারা এধরণের হামলা হুজ্জুতির ঘটনা ঘটাচ্ছে। কিন্তু, যারা এই সন্ত্রাস মূলক কার্যকলাপের সাথে জড়িত তারা প্রকৃত অর্থে মথা কিংবা বিজেপিরই লোক। বর্তমানে শাসক এবং তার শরিক দলের অঙ্গ হিসেবেই এরা কাজ করছে।
সব কিছু জেনেও আজ অব্দি তিপ্রা মথার বিরুদ্ধে শাসক বিজেপি কে কোনো ধরণের কড়া হুঁশিয়ারি বার্তা দিতে দেখা যায়নি। একে অপর কে আঘাত প্রত্যাঘাত করতে মরিয়া মথা বিজেপি। যেখানে উভয়েই রাজ্যে ক্ষমতাসীন সরকারে আছে। মথা দলের দুজন প্রতিনিধি মন্ত্রী সভার আসনে অব্দি আছেন। কিন্তু তাদের মধ্যেকার সংঘর্ষ এখন যেন বিরোধী শিবির গুলি কেও হাড় মানাচ্ছে। এর পরেও মথার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী কেনো কোনো কড়া পদক্ষেপ নেই ?
বিবাদ ও করবেন আবার একই সাথে সংসার ও করবেন ? মানুষ কে কি বার্তা দিতে চান রাজ্য সরকার ? এদিকে গোটা ঘটনার মোড় ঘোড়াতে এবং সংঘর্ষে লিপ্ত দের আড়াল করতে গিয়ে কমিউনিস্ট দের কেই কি আবারো বলির পাঠা বানানোর চেষ্টা চলছে ?
মানুষ ২৫ বছরের বাম শাসন, ৫ বছরের জোট শাসন দেখছে। তবে বিজেপি মথা জোটের এই শাসন কাল একেবারেই অন্য ধাচের বলেই ধারণা করছেন শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ। সন্ত্রাস আগেও ছিল, বর্তমানে ও আছে। পাল্টেছে কেবল কায়দা। তবে শাসক গোষ্ঠীর সাথে শরিক হয়ে খোদ শাসকের বিরুদ্ধেই এহেন যুদ্ধ ঘোষণা করার মতো বিরল চিত্র এ রাজ্যে প্রথম। এতো কিছুর পর বিজেপি মথার জোট ভেঙ্গে রাজ্যে শান্তি পুনঃস্থাপনের সুযোগ থাকলেও রাজ্য সরকার তা কেন করছে না, সেটাই প্রশ্ন।
রাজ্যে সুশাসন কায়েম এবং শান্তি ফেরানোই যদি রাজ্য সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্য হয় তবে এসমস্ত ঘটনার জন্যে বারবার কমিউনিস্ট দের দায়ী না করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়াটাই এই মুহূর্তে সময়ের দাবী।



