Cherry Gold : চেরি গোল্ডের চাষে লক্ষাধিক উপার্জন

কৃষি কিংবা চাষ বাসের কথা বললেই প্রথমে যা আমাদের মাথায় আসে তা হচ্ছে ধান, গম, শাক সবজি ইত্যাদি ফসল। কিন্তু উপার্জনের দিক থেকে কৃষি ক্ষেত্রে এর বাইরে ও অনেক কিছুরই সংযোজন ঘটেছে। তার মধ্যে ত্রিপুরার কৃষি ক্ষেত্র গুলিতে চোখ ফেললে দেখা যায় প্রধান ফসল হিসেবে ধান , শাক সবজি চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ ও একটা বিশেষ জায়গা ধরে আছে।
বিশাল গড় মহকুমার পূর্ব লক্ষ্মী বিল নামক জায়গাটি বরাবরই কৃষি কাজ এবং বিশেষ ভাবে ফুল চাষের ক্ষেত্রে একটি সুনাম অর্জন করেছে বিগত কয়েক দশকে। পূর্ব পুরুষের আমল থেকে চলে আসা এই কৃষি পন্থা আজো ধরে রেখেছেন এখানকার বর্তমান প্রজন্ম। ফুল চাষে বিশেষ উপার্জন ও লাভ করছেন কৃষকেরা। যে সমস্ত ফুল এখানে চাষ বাস হয়ে থাকে তার মধ্যে গাঁদা ফুল প্রধান। এছাড়া গোলাপ, অর্কিড , ডালিয়া ইত্যাদি ফুলের ও চাষ হয়ে থাকে। তবে এদের পাশাপাশি গাঁদা ফুলেরই একটি প্রজাতি , যার নাম চেরি গোল্ড , এই ফুলের চাষ ইতি লগ্নে অনেকটাই বেড়েছে।

চেরি গোল্ড

সাদা এবং হলুদ বর্ণের এই ফুল এর উৎস স্থল পূর্ব ও দক্ষিন চিন , জাপান এবং কোরিয়া তে। কিন্তু বর্তমানে প্রায় সব দেশেই এই ফুল এর উৎপাদন হচ্ছে। ভারতে এই ফুলের বিশেষ চাহিদা রয়েছে। বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে যেহেতু ফুলের প্রয়োজনীয়তা পড়ে তাই সাধারণ হলদে গাঁদা ফুলের সাথে এই চেরি গোল্ড ফুলটি ও বিশেষ ভাবে ব্যবহার্য করে তোলা হয়েছে। ফুলের মালায় এই ফুলের ব্যবহার বেশি।

 

চাষের মরশুম ও চাষ বাসের প্রক্রিয়া

সাড়া বছরই এই ফুলের চাষ করা সম্ভব। তবে ঠাণ্ডা মরশুমে উৎপাদন বেশি হয়ে থাকে। খুব অল্প খরচ এবং পরিশ্রমের প্রয়োজন হওয়ার কারণে ফুল চাষিরা এই ফুল চাষে আরও বেশি উৎসাহ দেখাচ্ছেন। রাসায়নিক সাড় হিসেবে ফসফেট ব্যবহার করে থাকেন কৃষকেরা। এছাড়া এই ফুলের উৎপাদন এর পরিমাণ ও বেশি। একটি গাছে কম করে হলেও ৩০ থেকে ৪০টি ফুল ফোঁটার সম্ভাবনা থাকে।

চেরি গোল্ড চাষে সফল কৃষক বিপ্লব সরকার

বিশালগড়ের পূর্ব লক্ষ্মী বিলের স্থায়ী বাসিন্দা বিপ্লব সরকার দীর্ঘ ২০ বছর যাবত জড়িত আছেন কৃষি কাজের সাথে। শাক সব্জির পাশাপাশি তিনি ফুলের চাষের সাথেও যুক্ত। নিজের জমিতেই প্রতি বছর ফুল চাষ করে লক্ষাধিক টাকা রোজগার করছেন তিনি। তার মধ্যে একটি হচ্ছে চেরি গাঁদা ফুল।
শুধুমাত্র চেরি গাঁদা ফুলই নয়। এর পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন রঙ বাহারি ডালিয়া ফুলের ও চাষ করেছেন। ডালিয়া ফুল চাষে যদিও খানিকটা বেশি স্রম দিতে হয়। সেখত্রে উৎপাদনের পরিমাণ পারিপার্শ্বিক আবহাওয়ার উপরে ও অনেকটাই নির্ভরশীল। পাশাপাশি ডালিয়া ফুলের বাজারজাত মুল্য ও চেরি গাদার তুলনায় একটু বেশিই হয়ে থাকে। তবে আকার ও সৌন্দর্যের দিক থেকে অন্য যে কোনো রঙ বাহারি ফুল কে ছাপিয়ে যেতে এই ফুলের তুলনা হয়না।

চেরি গোল্ড গাঁদা ফুল চাষে লাভ কত ?

চেরি গাঁদা চাষ করবেন কিনা ? চাষ করলে আদৌ লাভ হবে তো? এই প্রশ্ন গুলো প্রত্যেক কৃষকের মনেই আসবে , খুব স্বাভাবিক। সার্ভে করে দেখা যায় প্রতি বছর চেরি গাঁদা ফুলের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজারে প্রতিটি ফুল এক টাকা থেকে দেড় টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি দাম হিসেবে ও চাষিদের বেশ ভালই লাভ হচ্ছে। সোজা কথায়, ৫০ থেকে ৬০টি চারা রোপণ পরলেই নুন্যতম লক্ষাধিক টাকার ফুল বিক্রয়ের ভালো সম্ভাবনে রয়েছে। সুতরাং, যারাই চেরি গোল্ড ফুলের চাষে ইচ্ছুক তারা নির্দ্বিধায় এই ফুলের চাষ করতে পারেন এবং উপার্জন করে নিতে পারেন লক্ষ লক্ষ টাকা।

Leave A Reply