Charilam Sumit Saha death
খাদ্যনালীতে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়ার মৃত্যু,শোকস্তব্ধ চড়িলামের পরিবার
চড়িলাম প্রতিনিধি
অকালে ঝড়ে পড়লো তরতাজা প্রাণ। খাদ্যনালীতে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে ভারতরত্ন অটল বিহারী বাজপেয়ি চড়িলাম বিদ্যা জ্যোতি স্কুলের সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্রের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তার পরিবার সহ গোটা চড়িলাম। সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া সেই মৃত ছাত্রের নাম সুমিত সাহা। গতকাল রাত্রি বেলায় শিলচর ক্যান্সার কেয়ার হসপিটালে তার মৃত্যু হয়।তার মৃতদেহ মঙ্গলবার সকালে শিলচর থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়িতে আসে।। প্রাণের চেয়ে প্রিয় ছোট ভাইয়ের মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার সময় ভাই ভাই করে চিৎকার করতে করতে পেছন পেছন ছুটতে থাকে আগড়তলা এনআইটি কলেজে দ্বিতীয় সেমিস্টার পড়ুয়া বড় বোন তনুশ্রী সাহা।হৃদয় বিদারক এই দৃশ্য দেখে কাঁদছে গোটা চড়িলাম। ঘটনা মঙ্গলবার সকালে চড়িলাম পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় মিনি স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায়। এই এলাকার বাঁশ বেতের সামগ্রী বিক্রেতা বিশ্বজিৎ সাহার সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া ১২ বছরের ছেলে সুমিত সাহা গতকাল রাত ১১ টায় শিলচর ক্যান্সার কেয়ার হসপিটালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বেশ কয়েক মাস যাবৎ তার কাঁশি কম ছিল না। সে খেতে পারত না। আগরতলায় বহু চিকিৎসক দেখানোর পর নিয়ে যাওয়া হয় শিলচরে। ১৮ দিন ধরে শিলচর cancer কেয়ার হসপিটালে ভর্তি ছিল। গতকাল রাত্রি ১১ঃ০০ টায় পৃথিবীর সমস্ত মায়া মমতা ত্যাগ করে পরলোকে চলে যায়। মঙ্গলবার সকালে অ্যাম্বুলেন্সে করে তার দেহ আসে চড়িলাম পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় মিনি স্টেডিয়াম সংলগ্ন তার বাড়িতে। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তার বাবা বিশ্বজিৎ সাহা মা জয়শ্রী সাহা, প্রাণপ্রিয় বড় বোন তনুশ্রী সাহা আত্মীয় স্বজন পাড়া-প্রতিবেশী সহ গোটা গ্রামের মানুষ।। ভাই এবং বোন দুজনেই লেখাপড়ায় অত্যন্ত মেধাবী ছিল।সুমিতের বড় বোন তনুশ্রী মাধ্যমিকে টুয়েলভে টপ রেজাল্ট করে বর্তমানে আগরতলা এনআইটি কলেজে পড়াশোনা করছে। ছোট ভাইয়ের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ সে। যখন ভাইয়ের মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল পেছন পেছন ভাই _অ ভাই _ ভাই রে বলে চিৎকার করতে করতে ছুটছিল। তার মা জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিল বারবার। তার ঠাকুরমা ও বারবার হারিয়ে ফেলছে জ্ঞান। ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রতিটি মানুষের একটাই বক্তব্য ছিল হে ঈশ্বর এত ছোট্ট বয়সে শিশুটিকে তুমি কিভাবে কেড়ে নিলে?? তুমি এত পাষাণ কেন?? ছোট্ট শিশু সুমিতের মৃত্যু কাঁদিয়ে দিয়ে গেল গোটা গ্রামকে। এই মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি কেউ। কয়েক মাস ধরে সুমিত খেতে চাইলেও খেতে পারত না। সে তার মাকে বলতো মা ঈশ্বর তিন বেলা খেতে পারে। তিন বেলা ঈশ্বরকে পূজা দেওয়া হয় ফল দেওয়া হয় খাওয়ার জন্য। কিন্তু আমি এক বেলাও খেতে পারি না কেন?? ছেলের সেই কথাগুলো বলে কাঁদতে কাঁদতে ছেলের মৃতদেহের উপর বেশ কয়েকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মা জয়শ্রী সাহা.। তাকে সবাই সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তার বিলাপ থামছে না। মায়ের বুকফাটা আর্তনাদে ভারি চড়িলামের আকাশ বাতাস। হিন্দু ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসারে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় চড়িলাম নতুন মোটর স্ট্যান্ডের পেছনে রাঙ্গা পানিয়া নদীর তীরে মঙ্গলবার বিকেলে। প্রাণপ্রিয় ছোট ভাইয়ের মৃত্যুতে বড় বোন তনুশ্রীর বুকফাটা চিৎকার কেউ থামিয়ে রাখতে পারছে না। সে তার ছোট ভাইকে অসম্ভব ভালোবাসতো। ছোট ভাই ছিল তার প্রাণ। তার মৃত্যুতে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে এনআইটি পড়ুয়া বড় বোন তনুশ্রী সাহা।