Boxanagar News : সোনামুড়া মধুবন এলাকার এক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে দেখা দিয়েছে এক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি। অভিযোগ উঠেছে, কেন্দ্রের নিযুক্ত হেল্পার সুমিতা আচার্যী নিয়মিত কাজে যোগ না দিয়েও বেতন পাচ্ছেন। অন্যদিকে দিদিমনি একাই কেন্দ্র চালাচ্ছেন—শিক্ষাদান থেকে শুরু করে রান্না পর্যন্ত সব দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। এমনকি কখনও কখনও এলাকার অভিভাবকরাও শিশুদের জন্য খিচুড়ি রান্নায় সাহায্য করছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সুমিতা দেবী শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে বহু নেতার সঙ্গে ওঠাবসা করেন। রাজনৈতিক প্রভাবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেই তিনি বছরের পর বছর কাজের জায়গায় অনুপস্থিত থেকেও নিশ্চিন্তে বেতন তুলছেন। দিদিমনি বারবার বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও, প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বরং কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ক্ষোভ আরও বেড়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে।
একজন অভিভাবক জানান, “আমাদের বাচ্চারা ঠিকমতো পড়াশোনা শিখবে না, নাকি শিক্ষকই রান্নাঘরে সময় কাটাবেন—এভাবে আর কতদিন চলবে?” স্থানীয়দের মতে, এই ধরনের উদাসীনতা শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতাই নয়, সমাজের শিক্ষাব্যবস্থার উপরও সরাসরি আঘাত।
জানা গেছে, দিদিমনি অসুস্থ থাকলেও তাঁর অনুপস্থিতিতে কেন্দ্র বন্ধ না রাখতে তিনি নিজেই অনেক সময় পরিবারের সদস্যদের অনুরোধ করে খিচুড়ি রান্নার ব্যবস্থা করেন। অন্যদিকে, হেল্পার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত সুমিতা আচার্যী দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রের কাজে যোগ দিচ্ছেন না। অভিযোগ অনুযায়ী, কেউ তাঁকে প্রশ্ন করলে তিনি শাসক দলের নাম টেনে হুমকি দেন এবং রাজনৈতিক সম্পর্কের জোরে সবসময় পার পেয়ে যান।
এলাকাবাসী দাবি তুলেছেন, দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তাঁদের বক্তব্য, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা ও পুষ্টির মূলভিত্তি। এখানে যদি এই ধরনের অবহেলা চলতে থাকে, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতি অনিবার্য।”
এদিকে, স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে তদন্ত শুরু হবে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত পদক্ষেপের খবর পাওয়া যায়নি।
মধুবন এলাকার এই ঘটনা প্রশাসনের কাছে যেমন একটি পরীক্ষা, তেমনি সমাজের কাছেও একটি প্রশ্নরাজনৈতিক ছত্রছায়া থাকলেই কি দায়িত্বজ্ঞানহীনতার লাইসেন্স পাওয়া যায়?
এলাকাবাসীর আশা, এবার অন্তত উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এবং দিদিমনির মতো নিষ্ঠাবান কর্মীদের মর্যাদা ফিরিয়ে দেবে।



