Amtali PS News : সরসে তেই যখন ভূত তখন ভূত তাড়াতে আর কিসে ভরসা করা যায় ? সমাজে কোন ধরণের অপরাধ সংগঠিত হলে মানুষ সর্ব প্রথম পুলিশের দ্বারস্থ হন। আজ সেই পুলিশ প্রশাসনই অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। ক্রমশই মানুষের বিশ্বাস হারাচ্ছে আইন ব্যবস্থা। এমনই এক ঘটনার সাক্ষী আমতলী থানার অন্তর্গত ফুলতলী বাসী।
অভিযোগ, এক পুলিশ কনস্টেবল ফুলতলী মতিনগর এলাকার মানুষের কাছ থেকে দীর্ঘদিন যাবত তোল্লা আদায় করছে। পুলিশ সুপারের নাম বিকিয়েই চলছে তাঁর এই অবৈধ তোল্লা আদায়। তাঁর যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মতিনগর বাসী।
অভিযুক্ত কনস্টেবল আমতলী থানার অন্তর্গত ফুলতলী মতিনগর এলাকার কদম আলী ভূঁইয়ার ছেলে আমির ভূঁইয়া । সে ত্রিপুরা পুলিশের কনস্টবল পদে পশ্চিম জেলা পুলিশ সুপার অফিসে কর্মরত বলে জানা যায় ।
তার বিরুদ্ধে এলাকায় একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে। যার মধ্যে পশ্চিম জেলা পুলিশ সুপারের নাম করে তোল্লা আদায়, এলাকার সহজ সরল গরিব মানুষদের বিভিন্নভাবে পুলিশের ভয় দেখিয়ে মানুষের বৈধ সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করা সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে ।
এলাকাবাসী সূত্রে খবর সে ১০ বছর আগে ত্রিপুরা পুলিশ কনস্টেবলে ভর্তি হয় । আর এরই মধ্যে সে মতি নগর এলাকা সহ বক্সনগর এ দেড় কোটি টাকার বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করে নেয়। এক জন সাধারণ কনস্টেবলের পক্ষে যা এক প্রকার অসম্ভব। সে যতই সরকারি চাকরি করুক না কেন।
এই বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে যে টাকা ব্যয় হয়েছে সেই টাকার উৎস কোথা থেকে এসেছে তা নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হচ্ছে।
এরই মধ্যে মতি নগর এলাকার ১ বৃদ্ধ ব্যক্তির জায়গা জোরপূর্বক দখল করে ওই ব্যক্তির বাড়িতে তালা লাগিয়ে বাড়ির মালিককে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া ও হুমকি প্রদান করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এরপরেই নড়েচড়ে বসেন এলাকাবাসী।
রবিবারেই স্থানীয় এলাকাবাসীরা পুলিশ কনস্টেবল আমির ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে এলাকায় গ্রাম সভার আয়োজন করে। এই গ্রাম সভা চলাকালীন সময়ে এলাকার ব্যক্তিদের উপেক্ষা করে গায়ের জোর এবং প্রশাসনের দাপট দেখিয়ে গ্রাম সভায় উপস্থিত সকলের সাথে ঝগড়া-বিবাদে যুক্ত হয় সে। আমির ভূঁইয়া এলাকার বয়স্ক ব্যক্তিদের ধাক্কাধাক্কি শুরু করে এক সময়, এমনকি এলাকাবাসীদের হুমকি দেওয়া হয় রাতের মধ্যেই নাকি সকলকে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে সে ।
এই সমস্ত ঘটনার পর ভুক্তভোগী বৃদ্ধ সহ স্থানীয় এলাকাবাসীরা রবিবার দুপুরে আমতলী থানার দারস্ত হয়ে গুণধর পুলিশ কনস্টেবল আমির ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে আমতলী থানায় লিখিত আকারে মামলা দায়ের করে। পাশাপাশি স্থানীয় এলাকাবাসীদের পক্ষ থেকে এই পুলিশ কনস্টেবলের ঘটনাটি রাজ্য পুলিশের সদর দপ্তরকেও জানায়। রবিবার এলাকাবাসীদের অভিযোগ হাতে পেয়ে আমতলী থানার ওসি পরিতোষ দাস এলাকাবাসীদের আশ্বস্ত করেছেন খুব শীঘ্রই অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল আমির ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
তবে প্রশ্ন হচ্ছে, একই সংসারে থেকে কতটা ন্যায্য বিচার করবে পুলিশ ? প্রায়শই এধরণের ঘটনা মীমাংসার মধ্যে দিয়ে শেষ করে দেওয়া হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়না আইনী পদক্ষেপ, যাতে করে পুলিশ এর নাম কালিমালিপ্ত না হয়। যার ফলে দোষীরা আবারো ছাড়া পেয়ে পুনরায় একই ভাবে তাদের অপরাদ কারবার চালাতে থাকে।
এখন দেখার বিষয় এই অভিযুক্ত কনস্টেবল এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয় কিনা আমতলী থানার পুলিশ।



