খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Saturday, 11 October 2025 - 06:42 PM
শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫ - ০৬:৪২ অপরাহ্ণ

Amra Bangali Protest : বাঙালিদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে ‘আমরা বাঙালি’র রাজপথে বিক্ষোভ

Amra Bangali Protest
1 minute read

Amra Bangali Protest : দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাঙালিদের উপর ধারাবাহিক আক্রমণের প্রতিবাদে রবিবার ত্রিপুরায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করল ‘আমরা বাঙালি’ সংগঠন। সংগঠনের রাজ্য কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সভাপতি গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব ও সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা।

সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালিদের বিদেশি বা অনুপ্রবেশকারী তকমা দিয়ে পরিকল্পিতভাবে নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল জানান, “এই ভারতবর্ষই বাঙালিদের মাতৃ ও পিতৃভূমি। স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বে বাঙালিরাই ছিল। অথচ আজ, ভোটার লিস্ট থেকে নাম কেটে, দোকানপাট-ঘরবাড়ি ধ্বংস করে, পুলিশি জুলুম চালিয়ে আমাদের পশ্চিমবঙ্গে কিংবা বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “২০১৯ সালের এনআরসি তালিকায় আসামে প্রায় ২০ লক্ষ বাঙালির নাম বাদ পড়েছে। অথচ ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম-সহ বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ কাজ করছে, কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু বলছে না। কিন্তু বাঙালিরা যখন অন্য রাজ্যে কাজ করতে যায়, তখন তাঁদের বিদেশি আখ্যা দিয়ে টার্গেট করা হয়।”

সংগঠনের দাবি, গুজরাট, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও ওড়িশার মতো রাজ্যগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে বাঙালিদের উপর আক্রমণ বেড়েছে। অভিযোগ, তাদের বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও পুলিশি জুলুমের শিকার হতে হচ্ছে।

গৌরাঙ্গবাবু কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে বলেন, “এই পুরো প্রক্রিয়ার পেছনে রয়েছে একটি গভীর রাজনৈতিক চক্রান্ত। বিজেপি নেতা অমিত শাহ চার বছর আগেই বলেছিলেন, ভারতে দুই কোটির বেশি বাঙালি ‘বিদেশি’, এবং তাঁদের দেশ থেকে তাড়ানো হবে। আজ আমরা সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হতে দেখছি।”

তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, “আজ কোনও রাজনৈতিক দল আমাদের পাশে নেই—না কংগ্রেস, না বিজেপি, না বামপন্থীরা। সুতরাং, বাঙালিদের নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইটা নিজেদেরই লড়তে হবে।”

সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, এই ধরনের নির্যাতন ও চক্রান্ত বন্ধ না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে ‘আমরা বাঙালি’। তাঁদের বক্তব্য, “যেভাবে ইংরেজদের তাড়ানো হয়েছিল, প্রয়োজনে তেমন আন্দোলনেই নামতে হবে বাঙালিদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য।”

প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় সম্প্রতি বাঙালিদের “অনুপ্রবেশকারী” আখ্যা দিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তার বিরুদ্ধে সমাজ বিশ্লেষক গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল ঐতিহাসিক তথ্যসহ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরা কখনও কেবল উপজাতিদের ছিল না—এটা বাঙালিসহ সকলের।

তিনি জানিয়েছিলেন।
ত্রিপুরার প্রাচীন ইতিহাস বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত।
১৯৩১ সালেই বাঙালিরা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ।
উপজাতিরা আরাকান থেকে এসে পরবর্তীতে এখানে স্থায়ী হয়।

শহরাঞ্চল গড়ে ওঠে বাঙালিদের বসতিতে, প্রশাসন, ব্যবসা, শিক্ষায় তাদের ভূমিকা ছিল মুখ্য।

আজ উপজাতিরা উন্নয়ন পেয়েছে সরকারের সহায়তায়, এবং বাঙালিরা কখনও তার বিরোধিতা করেনি।

সাংস্কৃতিক নিদর্শন যেমন বৌদ্ধ মূর্তি, শিবলিঙ্গ ইত্যাদি বাঙালি হিন্দু-বৌদ্ধ ঐতিহ্যের অংশ।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইতিহাস বিকৃতি এবং জাতিগত বিদ্বেষ গ্রহণযোগ্য নয়। ত্রিপুরা সকলের—এই রাজ্যে বিভেদ নয়, ঐক্যই হোক পথ।

For All Latest Updates

ভিডিও