খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Sunday, 21 December 2025 - 12:23 AM
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ - ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ

Amra Bangali News : ওড়িষ্যার মালকানগিরিতে বাঙালি বসতিতে হামলা নিয়ে আমরা বাঙালির তীব্র প্রতিবাদ

Amra Bangali News
1 minute read

Amra Bangali News : ওড়িষ্যা রাজ্যের মালকানগিরি জেলার বালীরিগাঁওয়ে সম্প্রতি সংঘটিত হামলার ঘটনায় অঞ্চলে চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বছরের শুরু থেকেই ওড়িষ্যাসহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ‘অনুপ্রবেশ’ ইস্যুকে কেন্দ্র করে বাঙালি সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠলেও, বালীরিগাঁওয়ের সাম্প্রতিক ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

বৈধ কাগজপত্রধারী, ভূমিপুত্র এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের অবদানকারী হওয়া সত্ত্বেও বাঙালিরা ধারাবাহিকভাবে হামলা-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। এর প্রতিবাদে সরব হয়েছে আমরা বাঙালি রাজ্য কমিটি।

আমরা বাঙালির সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল সাংবাদিকদের জানান, ৭ ডিসেম্বর রাতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের একদল লোক আকস্মিক হামলা চালায় বালীরিগাঁও এলাকায়। তাঁর দাবি অনুযায়ী, ওই হামলায় শতাধিক বাঙালি পরিবারের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং কোটি টাকার সম্পত্তি ধ্বংস হয়ে যায়।

লুটপাট ও তাণ্ডব চলে সারারাত। আরও অভিযোগ, পরদিন ৮ ডিসেম্বর পুলিশের উপস্থিতিতেই আবার অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে, কিন্তু পুলিশ কার্যত নীরব ভূমিকা পালন করে।

গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল আরও দাবি করেন, ওড়িষ্যায় বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাঙালি সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের হার বেড়েছে। একইসঙ্গে ৮ ডিসেম্বর বিধানসভায় চিত্রাকোন্ডার কংগ্রেস বিধায়ক মংগুখিলোর বাঙালিবিরোধী মন্তব্য পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে বলে অভিযোগ তোলা হয়।

ঐতিহাসিক তথ্য উল্লেখ করে তিনি জানান, ধর্মীয় সংখ্যালঘু বাঙালিরা ১৯৬৪ সালে মালকানগিরির বিভিন্ন এলাকায় বসতি স্থাপন করেন। পশ্চিমবঙ্গের লাগোয়া ময়ূরগঞ্জ, কেওড়গঞ্জসহ যে অঞ্চলগুলি একসময় বৃহত্তর বাংলার অংশ ছিল, সেই অঞ্চলেও যুগ যুগ ধরে বাঙালির বসবাসের প্রমাণ রয়েছে। তাই নিজেদের ভূমিপুত্র দাবি করছেন স্থানীয় বাঙালিরা।

মালকানগিরির এই নতুন হামলার ঘটনায় আমরা বাঙালি ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে—
১. হামলায় জড়িত সকল অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
২. ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালি পরিবারগুলোর পূর্ণ ক্ষতিপূরণ, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা।
৩. বাঙালিদের ভাষা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় সংবিধানের ৩ নং ধারা অনুযায়ী স্বয়ংসম্পূর্ণ সামাজিক–অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন।

ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে বাঙালি সম্প্রদায়।

মালকানগিরির বালীরিগাঁওয়ে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনা শুধু স্থানীয় বাঙালি সম্প্রদায় নয়, বরং সমগ্র অঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলার ওপর এক গভীর প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করেছে। বৈধ অধিকার ও দীর্ঘদিনের বসবাস সত্ত্বেও বাঙালিদের ওপর ধারাবাহিক আক্রমণ উদ্বেগজনক। পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে, যা দ্রুত তদন্ত ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি করে তুলেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতা ও পুনর্বাসন সংকটে ভুগছে। তাই তাদের ক্ষতিপূরণ, সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের দাবিগুলো মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অবিলম্বে বিবেচনা করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মাঝে শান্তি স্থাপন, ভুল তথ্য ও বিদ্বেষমূলক প্রচার রোধ এবং সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সক্রিয় ভূমিকা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

For All Latest Updates

ভিডিও