Amra Bangali News : অসমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গান “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” গাওয়াকে রাষ্ট্রদ্রোহ আখ্যা দেওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ‘আমরা বাঙালী’ সংগঠন। দলের রাজ্য কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্রপাল বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বের সাহিত্য ও সংস্কৃতির গর্ব। তাঁর গান গাওয়াকে যদি রাষ্ট্রদ্রোহ বলা হয়, তবে তা বাঙালী জাতির সম্মানের উপর সরাসরি আঘাত।”
কিছুদিন আগে অসমের মুখ্যমন্ত্রী ড. হেমন্ত বিশ্বশর্মা ঘোষণা করেন, বাংলাদেশে জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃত হওয়ায় ভারতে “আমার সোনার বাংলা” গান গাওয়া উচিত নয়। এই মন্তব্যের পরেই রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রতিবাদে ‘আমরা বাঙালী’ জানায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টির কোনও সীমান্ত নেই—তাঁর সাহিত্য, সংগীত ও দর্শন ভারত-বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সহ বহু দেশে সমাদৃত।
গৌরাঙ্গ রুদ্রপাল বলেন, “১৯১৩ সালে নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের গর্বের প্রতীক। তাঁর লেখা গান বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হতেই পারে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা ভারতে সেই গান গাইতে পারব না।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিজেপি ও আরএসএস নেতৃত্ব ইচ্ছে করেই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে আক্রমণের মুখে ফেলছে।
সংগঠনের বক্তব্য অনুযায়ী, করিমগঞ্জ জেলার শ্রীভূমিতে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাঙালী শিল্পী বিধূ ভূষণ দাস ওই গানটি পরিবেশন করায় তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়েছে। ‘আমরা বাঙালী’র মতে, এটি শুধু একজন শিল্পীর উপর নয়, সমগ্র বাঙালী জাতির উপর অপমান।
দলটির প্রচার সচিব দুলাল ঘোষ বলেন, “বিজেপি সরকার একদিকে হিন্দুত্বের নামে দেশপ্রেমের কথা বলে, অন্যদিকে বাংলার কবি-সাহিত্যিকদের পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দিচ্ছে।” তিনি উল্লেখ করেন, এনসিইআরটি থেকে রবীন্দ্রনাথের লেখা বাদ দেওয়া, বাংলা ভাষাভাষীদের ‘বাংলাদেশী’ আখ্যা দেওয়া এবং ডিটেনশন ক্যাম্পে বাঙালীদের আটকে রাখা—এসবই একই রাজনীতির অংশ।
‘আমরা বাঙালী’ দলের দাবি,
অসম সরকারের মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। বাংলা ভাষা ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি অপমান বন্ধ করতে হবে।
বাঙালী জনগোষ্ঠীর নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সংগঠনের মতে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান কেবল একটি দেশের নয়, সমগ্র মানবতার সম্পদ। “আমার সোনার বাংলা” গাওয়া কোনও অপরাধ নয়, বরং এটি বাঙালীর সংস্কৃতি, মাটির প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ। ‘আমরা বাঙালী’ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—বাংলা ভাষা ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মর্যাদার প্রশ্নে তারা আপসহীন।



