খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Saturday, 11 October 2025 - 06:42 PM
শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫ - ০৬:৪২ অপরাহ্ণ

Amra Bangali : দিল্লি পুলিশের সার্কুলার ও অমিত মালব্যর মন্তব্যে দেশজুড়ে বিতর্ক*তীব্র প্রতিবাদ আমরা বাঙালির

Amra Bangali
1 minute read

Amra Bangali : বাংলা ভাষাকে “বাংলাদেশি ভাষা” হিসেবে উল্লেখ করে দিল্লি পুলিশের এক অভ্যন্তরীণ সার্কুলারে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে প্রবল প্রতিক্রিয়া। ভাষাগত পরিচিতি নিয়ে এমন সংবেদনশীল মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয় যখন বিজেপি’র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য দাবি করেন, “বাংলা নামে কোনও ভাষা নেই; বাঙালি একটি জাতির পরিচয়, ভাষার নয়।”

এই বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে এবং বহু রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, এটি নিছক অজ্ঞতা নয়, বরং বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতিসত্তার বিরুদ্ধে একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, বাঙালি পরিচয় রক্ষায় সোচ্চার ‘আমরা বাঙালি’ সংগঠন এক জরুরি সাংবাদিক সম্মেলন করে কড়া প্রতিবাদ জানায়।

সংগঠনের সভাপতি গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল বলেন,

“বিগত কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাঙালিদের ‘বাংলাদেশি’ কিংবা ‘রোহিঙ্গা’ আখ্যা দিয়ে পাকড়াও করা হচ্ছে। বৈধ কাগজপত্র দেখানোর পরেও বাঙালিদের উপর নির্মম অত্যাচার চালানো হচ্ছে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, অনেক জায়গায় বাংলা ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলা হচ্ছে এবং জোর করে বাঙালিদের পুশব্যাক করা হচ্ছে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়—বাংলা ভাষাকে “বিদেশি” বলে আখ্যা দেওয়া শুধু অজ্ঞানতা নয়, এটি বাঙালির আত্মপরিচয়ের উপর সরাসরি আঘাত।

প্রতিবাদকারীদের দাবি, বাংলা ভাষা শুধুমাত্র ভারতীয় ভাষা নয়, এটি ভারতের সংবিধান স্বীকৃত ধ্রুপদী ভাষা এবং জাতীয় সংগীতের ভাষাও বাংলা।

“বাংলা ভাষা নেই বলে মন্তব্য করা মানে জাতির আত্মপরিচয়কে অস্বীকার করা। যে জাতির ভাষা নেই, তার অস্তিত্বই বিপন্ন,”—বলেছেন দলের মুখপাত্র।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দিল্লি পুলিশের সার্কুলার ও অমিত মালব্যর মন্তব্য ভারতীয় রাজনীতির গভীর ভাষাগত বিভাজনের দিকেই ইঙ্গিত করে।
স্বাধীনতার পর থেকেই হিন্দি-হেজেমনির (Hindi hegemony) বিরুদ্ধে আঞ্চলিক ভাষাগুলি, বিশেষ করে বাংলা, ধারাবাহিক চাপে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের দাবি,
“এটি নিছক ভুল নয়; বরং একটি পরিকল্পিত ভাষার রাজনীতি, যার উদ্দেশ্য হল বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে কোণঠাসা করা।”

আমরা বাঙালি’ সংগঠন, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাণী উদ্ধৃত করে বলেন,
“বাঙালিকে তার ইতিহাস জানতে হবে। একতা ছাড়া জাতির অস্তিত্ব রক্ষা অসম্ভব।”

তারা দেশের সমস্ত বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয় রক্ষার জন্য সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

এই বিতর্ক নতুন নয়, তবে প্রতিবারই এটি বাঙালির আত্মপরিচয় প্রশ্নে নাড়া দেয়। বাংলা কেবল একটি ভাষা নয়, এটি একটি জীবন্ত সংস্কৃতি, যার শিকড় গভীরভাবে ভারতীয় ইতিহাসে প্রোথিত। বাংলা ভাষার অস্তিত্ব অস্বীকার করার যে কোনও প্রচেষ্টা শুধু ভুল নয়, এটি বিভাজনমূলক রাজনীতির ঝুঁকিপূর্ণ প্রকাশও বটে।

For All Latest Updates

ভিডিও