Agartala Smart City : রাজধানীজুড়ে স্মার্ট সিটি প্রকল্পের ড্রেন নির্মাণকাজ যেন জনদুর্ভোগের নতুন নাম হয়ে উঠেছে। পরিকল্পনাহীনভাবে রাস্তা খনন, দপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব, আর গুরুত্বপূর্ণ পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত—এসবই এখন নিত্যদিনের ঘটনা। এরই ধারাবাহিকতায় আজও শহরে দেখা দিল নতুন বিপত্তি।
মহিলা মহাবিদ্যালয়ের সামনে ড্রেন নির্মাণের জন্য ডোজার দিয়ে রাস্তা খনন করতে গিয়ে কেটে যায় গ্যাসের পাইপলাইন। মুহূর্তের মধ্যেই এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েন। গ্যাস পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পেয়ে টিএনজিসিএল–এর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছতে কিছুটা সময় নেন। তাদের দাবি, প্রতাপগড়ে জরুরি কাজ চলার কারণে দেরি হয়েছে।
অন্যদিকে, রাস্তা খননের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের প্রশ্ন করা হলে তারা জানান—এলাকায় গ্যাস পাইপলাইন রয়েছে এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে ছিল না। ফলে তাদের প্রস্তুতি ও দায়িত্ববোধ নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাস্তার নিচে থাকা পানি, গ্যাস বা অন্য গুরুত্বপূর্ণ পাইপলাইনের নকশা সংগ্রহ করেই যে কোনো খনন কাজ করার নিয়ম—কিন্তু বাস্তবে সেই নিয়ম কার্যত মানা হচ্ছে না।
শহরের বিভিন্ন এলাকায় এর আগেও ড্রেন নির্মাণের সময় পাইপলাইন কেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবারই সাধারণ নাগরিকদের দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়েছে। কোথাও জল সরবরাহ ব্যাহত, কোথাও গ্যাস সংযোগ দীর্ঘ সময় অচল—তবুও পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অনেক জায়গায় পাইপলাইন মেরামত হলেও পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি; কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন রয়ে গেছে।
গত গণেশ চতুর্থী পরেও লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়ি রোডে রাস্তা খননের সময় কাটা পড়েছিল পানীয় জলের পাইপলাইন। অস্থায়ীভাবে মেরামত করা হলেও এখনও সেই এলাকার বাসিন্দারা পর্যাপ্ত পানীয় জল পাচ্ছেন না। দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জানালেও দপ্তরের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের মধ্যে।
স্থানীয়দের বক্তব্য, স্মার্ট সিটি প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল নগর জীবনে স্বচ্ছতা, উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পরিকাঠামো গড়ে তোলা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র—যত্রতত্র খনন, যানজট, পাইপলাইন ক্ষতি, এবং অব্যবস্থাপনা। পরিকল্পনার ঘাটতি ও দপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের ফলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
শহরবাসীর দাবি, ড্রেন নির্মাণ অবশ্যই প্রয়োজন—তবে তা হোক সুপরিকল্পিতভাবে। দায়িত্বশীলতার সঙ্গে, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বয় রেখে, এবং নাগরিকদের সুবিধাকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করা উচিত। অন্যথায় উন্নয়নের নামে জনজীবন আরও বিপর্যস্তই হবে।



