খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Tuesday, 9 September 2025 - 09:17 PM
মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ০৯:১৭ অপরাহ্ণ

Agartala Night Club : ড্রাগস এর পর যুব সমাজ কে ধ্বংস করতে নতুন সংস্করণ ত্রিপুরায়, নাম দেওয়া হয়েছে হ্যাপিয়েস্ট আওয়ার

Agartala Night Club
1 minute read

Agartala Night Club : পাশ্চাত্যের নেশায় বিভোর হয়ে পার্বত্য ত্রিপুরা কে পাশ্চাত্যের রঙ্গে রাঙ্গাতে গিয়ে যুব সমাজ কে নষ্টামির দিকে ঠেলে দেওয়ার নোংরা প্রচেষ্টা শুরু হয়ে গেছে। ২০১৮ এর পর থেকে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় যেমন একদিকে বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত অপরাধ, তেমনি বেড়েছে ড্রাগস জাতীয় নেশা বানিজ্য ও সেবনের পরিমাণ। বেড়েছে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা। বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা। আর এই সব কিছুতে সর্বাধিক প্রভাবিত রাজ্যের যুব সমাজ। যুব সমাজ কেই যেখানে পঙ্গু করে দিয়ে সব কিছু একাংশ স্বার্থান্বেষীরা একলা ভোগ করে নেওয়ার আশায় একের পর এক চক্রান্ত সাজিয়ে যাচ্ছে তাতে করে ত্রিপুরার ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই দুশ্চিন্তা বাড়ে।

তবে এবার যুব সমাজ কে নেশা কিংবা অপরাধ দিয়ে নয় , এবার এক অন্য উপায়ে এবং মডার্ন উপায়ে তাদের কে নষ্ট পথে অগ্রসর হতে বাধ্য করা হচ্ছে। যার নাম নাইট ক্লাব। সিনেমায় কিংবা বহিঃরাজ্যে নাইট ক্লাব দেখা এবং মাঝে মাঝে ঘুরতে গিয়ে নাইট ক্লাব এর স্বাদ নিতে ইচ্ছুক ত্রিপুরার একাংশ হয়তো কখনো ভাবেন নি যে ত্রিপুরার মতো একটি ছোট্ট রাজ্যেও এমন কিছু হতে পারে। কারণ বরাবরই আজো ত্রিপুরার মানুষ কিন্তু পাশ্চাত্যের চরম সীমা কে অতিক্রম করার মতো মানসিকতা ধারন করে না। কারণ এজ প্রাচ্য এবং সংস্কৃতির চাদরে নিজেদের মুরিয়ে রাখতে ভালবাসেন এখানকার বাঙ্গালিরা। কিন্তু তাতে এখন নাইট ক্লাবের বিষ ঢেলে দেওয়া হবে।

আশ্চর্যয়ের বিষয় এই নাইট ক্লাবের অবস্থান হয়েছে এমন একটি জায়গায় যেখানে ত্রিপুরা সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দফতর রয়েছে, যার পাশেই রয়েছে ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী কবিগুরু রবি ঠাকুরের নামে নির্মিত রবীন্দ্র ভবন। যা যুগ যুগান্তর ধরে সংস্কৃতির ধারক ও বাহক রূপে ঠায় দাঁড়িয়ে। সেই ভবনের পাশের বিল্ডিং এ এখন ছেলে মেয়েরা বিচ্ছিরী সব পোশাক আশাক পরিধান করে আকণ্ঠ মদ গিলে নোংরা নাচ নেচে বেড়াচ্ছে। যা সমাজের সভ্য শিক্ষিত অংশের মানুষের কাছে একটা তীব্র লজ্জার বিষয়।

প্রসঙ্গত গত দুদিন আগেই আগরতলা রবীন্দ্র ভবন সংলগ্ন ইউডি ভবনের একেবারে শীর্ষ তলে হ্যাপিয়েস্ট আওয়ার নামে একটি রেস্তোরাঁ খোলা হয়েছে। রেস্তোরাঁ বলা হলেও আসলে এটি হচ্ছে একটি নাইট ক্লাব। যেখানে আবার কেউ একা যেতে পারবেন না। সঙ্গে থাকতে হবে একজন সঙ্গী। অর্থাৎ হয় আপনি আপনার স্ত্রী অথবা প্রেমিকা কে নিয়ে যেতে পারবেন। সিঙ্গেল এন্ট্রি করা যাবে না। আর এই কারণ দর্শীয়েই ক্লাবের উদ্বোধনীর দিনে এক ব্যক্তি কে একা ভেতরে যেতে দেওয়া হয়নি। আর তার ঠিক কিছুক্ষণ বাদেই, ক্লাবের ভেতরে থাকা বারে আকণ্ঠ মদ্যপান করে যুবক যুবতী রা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি তে নৃত্য করা কালীন দু পক্ষের মাঝে বিবাদ লেগে যায়। সেই থেকেই দুদিন যাবত ব্যাপক আলোচনার কেন্দ্রে এই নাইট ক্লাব।

সাধারণ জনগণ, অটো চালক থেকে শুরু করে পথচারী সকলেই এই নাইট ক্লাব নির্মাণ কে নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করছেন। মেয়েরা ছোট ছোট পোশাক পরে রাতের আঁধারে ছেলে দের নিয়ে ঢুকছে এই ক্লাবে। মদ গিলছে, একে অপরের উপর ঢলানি খেয়ে পড়ছে। আর এসব দৃশ্য দেখে চোখে হাত দিয়ে লজ্জায় গুটি হয়ে যাচ্ছেন শহরের বুকে ভ্রাম্যমাণ সর্ব সাধারণ।

রাজধানীর রবীন্দ্র ভবন সংলগ্ন ইউডি ভবনের উপরে নাইট ক্লাব নির্মাণের মধ্যে দিয়ে রাজ্যের ঐতিহ্য সংস্কৃতি কে নষ্ট করে রাজ্য কে কালিমালিপ্ত করার চক্রান্ত করছে বিজেপি সরকার। তাদের মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে। তাই হয়তো শেষ সময়ে ত্রিপুরা কে সর্ব রকমে শেষ করে দিতে চাইছে তারা, এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এমনটাই অভিযোগ করছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।

উল্লেখ্য এই বিল্ডিং টি পূর্বতন সরকারের আমলে ছিল রোজ ভ্যালির বিল্ডিং । ২০১৮ সালের পর এই বিল্ডিং এ দখল নেয় নয়া রাজ্য সরকার। এই বিল্ডিং এর দোতলায় রয়েছে আগরতলা স্মার্ট সিটি প্রকল্পের মূল অফিস। আর তার ঠিক মাথার উপর একটি বার। যাতে বড় বড় অফিসার থেকে শুরু করে ছোট্ট পোশাকের মামনি সকলেই লাল নীল জলের নেশায় বুদ হয়ে থাকে। এই মন্তব্য গুলো করেছেন ক্ষোভ প্রত্যক্ষ দর্শী কিছু মানুষ। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এই নাইট ক্লাব প্রসঙ্গ তীব্র ভাবে সমালোচিত হচ্ছে। রাজ্যের যুব সমাজ কে ভালো কিছুর দিকে এগিয়ে যাবার চাইতে বরং অস্বাস্থ্যকর এবং অসামাজিক কার্যকলাপের দিকে ঝুঁকে পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এমনটাই মনে করেন।

এর প্রভাব যদিও ত্রিপুরার পরবর্তী সরকার নির্বাচনে পরবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

For All Latest Updates

ভিডিও