Agartala Book Fair 2026 : আগামী ২ জানুয়ারি থেকে আগরতলার হাপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে শুরু হতে চলেছে ৩৪তম আগরতলা বইমেলা। সেই উপলক্ষে বুধবার আগরতলা পুর নিগমের কনফারেন্স হলে স্টিয়ারিং কমিটির একটি বর্ধিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বইমেলার সামগ্রিক প্রস্তুতি, আয়োজনের অগ্রগতি ও সম্ভাব্য নতুন সংযোজন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, ডেপুটি মেয়র মনিকা দাস দত্ত, স্টেট কালচারাল ডেভেলপমেন্ট কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সবুজ চক্রবর্তী, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ডিরেক্টর ও আধিকারিকরা, বিভিন্ন সাব-কমিটির কনভেনার এবং একাধিক দপ্তরের প্রতিনিধিরা।
বৈঠকে মূলত বইমেলার প্রস্তুতি কতদূর এগিয়েছে, তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। পাশাপাশি, দর্শক ও প্রকাশকদের সুবিধার্থে কী কী পরিবর্তন বা নতুন পরিকল্পনা যুক্ত করা যেতে পারে, সেসব বিষয়েও মতবিনিময় হয়। মেলার সময়সূচি নিয়েও আলোচনা হয়। প্রকাশক ও বই বিক্রেতাদের পক্ষ থেকে সময়সূচি সামান্য এগিয়ে আনার প্রস্তাব উঠলেও, আপাতত দুপুর ১টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেলা চালু রাখার দিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে মেয়র দীপক মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, “আজকের আলোচনায় আমরা সার্বিকভাবে সন্তুষ্ট। প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বইমেলার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই কাজ এগোচ্ছে। তবুও যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে আবার সাব-কমিটি বা স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক ডাকা হবে।”
তিনি আরও বলেন, বাইরের রাজ্য থেকে খ্যাতনামা সাহিত্যিক ও শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানানোর প্রস্তাব এসেছে। যেহেতু বিষয়টি সরকারি স্তরের, তাই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পাশাপাশি, থিম প্যাভিলিয়ন, মণ্ডপসজ্জা, অফিসারদের নামফলক ও সামগ্রিক নকশা—সব ক্ষেত্রেই সমন্বিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মেয়র জানান, আগরতলা বইমেলা রাজ্যের একটি ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় আয়োজন। প্রতিবছরই এতে নতুনত্ব থাকে। বই কেনাবেচার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিসম্মেলন, আলোচনা সভা, কুইজ প্রতিযোগিতা এবং ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বইমেলাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
এবছর প্রকাশক ও স্টলের আবেদন সংখ্যাও অতীতের সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা। রাজ্যের বাইরে থেকেও বহু সংস্থা অংশগ্রহণে আগ্রহ দেখিয়েছে, যা বইমেলার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিরই ইঙ্গিত।
সব মিলিয়ে, আগামী দিনের আগরতলা বইমেলা আরও সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার লক্ষ্যেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজকদের আশা, এবারের বইমেলা রাজ্যের সংস্কৃতি ও সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
সব দিক বিবেচনা করে বলা যায়, আসন্ন ৩৪তম আগরতলা বইমেলাকে ঘিরে প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন দপ্তর ও সাব-কমিটির সক্রিয় অংশগ্রহণ বইমেলার সফল আয়োজনের প্রতি প্রশাসনের আন্তরিকতারই প্রতিফলন। নতুনত্ব, সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা এবং পাঠক-দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে নেওয়া পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়িত হলে এবারের আগরতলা বইমেলা আরও বেশি আকর্ষণীয় ও স্মরণীয় হয়ে উঠবে—এমনটাই প্রত্যাশা আয়োজকদের।



