Human Rights Commission : রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রতিবাদে ১১ দফা দাবিপত্র নিয়ে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের দফতরে হাজির হয় প্রদেশ কংগ্রেসের আইনজীবী সেল। তাঁদের অভিযোগ—মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কমিশনের ভূমিকা সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়, যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও নাগরিক অধিকারের জন্য বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত তৈরি করছে।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কংগ্রেসের আইনজীবী সেলের নেতৃত্বরা বলেন, ২০১৮ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। তবু রাজ্য মানবাধিকার কমিশন তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, “কমিশনের নীরবতা ও উদাসীনতা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের আরও উৎসাহিত করছে।”
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ২০২৪-২৫ সালের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের ব্যর্থতার দিকটি স্পষ্ট করে তুলেছে।
দক্ষিণ ত্রিপুরার সবরুমে বাদল ত্রিপুরা নামে এক তরুণ আদিবাসী যুবকের পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, মৃত্যুর আগে বাদলকে নির্যাতন করা হয়েছিল, তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। কংগ্রেসের অভিযোগ—এটি একটি স্পষ্ট হত্যাকাণ্ড হলেও দোষীদের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এমনকি পরিবারের জন্য কোনও আর্থিক সহায়তাও ঘোষণা করা হয়নি।
আগরতলার জিবি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন মদন দাস। অভিযোগ, কর্তব্যরত কর্মীরা জরুরি চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করেন। পরে গণমাধ্যমের চাপের মুখে চিকিৎসা শুরু হলেও, পরদিনই তাঁর মৃত্যু ঘটে। কংগ্রেসের মতে, এটি চিকিৎসা-অধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন এবং প্রশাসনিক উদাসীনতার আরেকটি উদাহরণ।
এইসব ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রদেশ কংগ্রেস মানবাধিকার কমিশনের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছে—রাজ্যের সাম্প্রতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক, দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক, এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।তারা আরো বলেন, কমিশনের উচিত স্বাধীন ও কার্যকরী ভূমিকা নিয়ে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রমবর্ধমান অন্যায়, নির্যাতন ও প্রশাসনিক অবহেলার প্রেক্ষিতে এই দাবি আজ গভীর তাৎপর্য বহন করছে। মানবাধিকার রক্ষার লড়াই কেবল আইনি নয়, নৈতিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতারও প্রতীক।



