Asish Kumar Saha Congress : সুরমা বিধানসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক আশীষ দাসের রহস্যজনক হত্যাকাণ্ড ঘিরে গোটা রাজ্য জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। একসময়ের বিজেপি বিধায়ক ও পরে তৃণমূল কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ এই নেতার অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রদেশ কংগ্রেস হত্যাকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতি চাপ বাড়াতে শুরু করেছে।
সোমবার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহার নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই হত্যা মামলার যথাযথ তদন্তের স্বার্থে একজন অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ আইপিএস অফিসারের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করা অত্যন্ত জরুরি।
তাদের মতে, এই ঘটনাটি শুধুই একটি অপরাধমূলক ঘটনা নয়, বরং এর পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ছায়া স্পষ্ট। সেই কারণেই রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত তদন্ত নিশ্চিত করতে SIT গঠন জরুরি।
আশীষ সাহা এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আশিস কুমার সাহা বলেন, শাসক দলের আশ্রিত দুষ্কৃতিকারীরা প্রতিনিয়ত বিরোধী দলের নেতৃত্বদের উপর হামলা চালাচ্ছে।
অধিকাংশ ঘটনাতেই পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও তারা কার্যত নিষ্ক্রিয় থেকেছে। গোটা রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। আসলে বিজেপির পায়ের তলার মাটি সরে গেছে, জনগণ শাসকদলের প্রতি আস্থা হারিয়েছে। তাই তাঁরা সন্ত্রাসের পথ অবলম্বন করেছে।
এদিন তিনি আরও বলেন, দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর, মোটরবাইক ধ্বংস, সভা ভণ্ডুল ইত্যাদি ঘটনা প্রায় শোনা যায়। এমনকি এখন তো হামলা দিবালোকে পুলিশের সামনেই ঘটছে। অথচ পুলিশ কোনওরকম হস্তক্ষেপ করছে না, উলটো তাকিয়ে দেখছেন। পাশাপাশি, আশিস দাস হত্যাকান্ডের তদন্ত ধীর গতিতে চলছে বলে মৃতের পরিবারের অভিযোগ। ওই অভিযোগের মূলে পুলিশের মহানির্দেশকের নিকট চিঠি দিয়ে স্পেশাল ইনভেস্টিগেটর টিম গঠন করার জন্য দাবি জানিয়েছেন।
সারাদেশের মতো ত্রিপুরাতেও গণতন্ত্রের উপর ধারাবাহিক আক্রমণ চলছে। বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃত্বকে টার্গেট করে একের পর এক পরিকল্পিত আক্রমণ হচ্ছে। তাই তারা একজন দক্ষ ও নিরপেক্ষ আইপিএস অফিসারের নেতৃত্বে তদন্ত চাইছে।
বর্তমানে ত্রিপুরা রাজ্যের পরিস্থিতি বলতে গেলে “রাজ্যে আইনের শাসন বলে কিছুই নেই। শাসক দলের ছত্রছায়ায় অপরাধীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। এমন এক সময় যখন জনপ্রতিনিধিরাও নিরাপদ নন, তখন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।”
কংগ্রেসের দাবি, অবিলম্বে SIT গঠন করে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করতে হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে, কংগ্রেস বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন আশীষ সাহা।
এই ঘটনার জেরে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধী দলগুলির তরফে সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগা অব্যাহত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মৃত্যু এবং তার ঘিরে ওঠা প্রশ্নগুলি আগামী দিনে রাজ্যের রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।



