খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Wednesday, 30 July 2025 - 09:52 PM
বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫ - ০৯:৫২ অপরাহ্ণ

Cm Manik Saha News : মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনে চালু হল ‘স্কুল কোয়ালিটি অ্যাসেসমেন্ট এন্ড এক্রিডিটেশন ফ্রেমওয়ার্ক

Cm Manik Saha News
1 minute read

Cm Manik Saha News : ত্রিপুরা রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করল রাজ্য সরকার। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহার হাতে উদ্বোধন হল ত্রিপুরা স্কুল কোয়ালিটি অ্যাসেসমেন্ট এন্ড এক্রিডিটেশন ফ্রেমওয়ার্ক।

এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে, যেখানে সমগ্র শিক্ষা মিশন এবং ত্রিপুরা এসসিইআরটি (SCERT)-এর যৌথ উদ্যোগে শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের রূপরেখা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। অনুষ্ঠানে রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষা আধিকারিক এবং বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে বোতাম টিপে নতুন ফ্রেমওয়ার্কটির সূচনা করেন। তিনি বলেন, “এটি ত্রিপুরার শিক্ষা ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন। রাজ্যের স্কুলগুলিকে উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এই ধরনের গঠনমূলক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, এতদিন ত্রিপুরা বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (TBSE)-এর নিজস্ব কারিকুলামে পড়াশোনা চললেও, তা সর্বভারতীয় পর্যায়ের উচ্চশিক্ষার মানদণ্ডে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। ফলে বহু ছাত্রছাত্রীকে রাজ্যের বাইরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কেন্দ্রের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ (NEP 2020) চালুর মাধ্যমে এখন সারা দেশে অভিন্ন কারিকুলাম এবং মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু হচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধাজনক হবে।

এই নতুন গুণমান মূল্যায়ন কাঠামোর (T-SQAAF) মূল লক্ষ্য হলো প্রতিটি বিদ্যালয়ের কার্যকারিতা, মান, শিক্ষাদানের পদ্ধতি, শিক্ষকদের যোগ্যতা এবং অবকাঠামোগত দিকগুলিকে পর্যালোচনা করা। এর মাধ্যমে বিদ্যালয়গুলিকে বিভিন্ন স্তরে স্বীকৃতি প্রদান করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই ফ্রেমওয়ার্কের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাঁদের শক্তি ও দুর্বলতা চিহ্নিত করতে পারবেন। বিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা বুঝে ভবিষ্যতে কোন কোন ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রয়োজন, তা নির্ধারণ করা যাবে। এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শুধু এখনই নয়, আগামী দিনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে।

মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে শিক্ষকদের প্রতি একটি বিশেষ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “শুধু বইয়ের সিলেবাস শেষ করলেই চলবে না। শিক্ষার্থীদের জীবনের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। তাদের মধ্যে নৈতিকতা, সামাজিক মূল্যবোধ ও জাতি গঠনের প্রেরণা জাগিয়ে তুলতে হবে।

তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানোর জন্য শুধু পাঠ্যপুস্তক নয়, বাস্তব জীবনের শিক্ষাও জরুরি। শিক্ষকদের নিজেদের মধ্যেই যদি মূল্যবোধ ও দায়বদ্ধতা না থাকে, তবে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও তা গড়ে উঠবে না।

এই উদ্যোগ রাজ্য সরকারের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি প্রগতিশীল ও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন. সি. শর্মা, শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব হেমেন্দ্র কুমার, সমগ্র শিক্ষা মিশনের প্রতিনিধিগণ, এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

শিক্ষাবিদদের মতে, এই প্রক্রিয়া চালু হওয়ার ফলে বিদ্যালয়গুলিতে সরকার আরও গভীর নজরদারি চালাতে পারবে। শিক্ষক প্রশিক্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়ন, এবং পাঠ্যবিষয়ের আধুনিকীকরণে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এই কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানসিক, নৈতিক ও জ্ঞানগত বিকাশে আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

For All Latest Updates

ভিডিও