খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Thursday, 26 June 2025 - 09:45 PM
বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ - ০৯:৪৫ অপরাহ্ণ

Tripura CM Dr. Manik Saha : কমিউনিস্টদের মতে ভালো মানুষ মানে তাদের দলের খাতায় নাম লেখাতে হবে

Tripura CM Dr. Manik Saha
1 minute read

Tripura CM Dr. Manik Saha : আজ ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন জারিকৃত ভারতের জরুরি অবস্থার ৫০ বছর পূর্তি। এ উপলক্ষে বুধবার রাজধানীর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে এক বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা, সাংসদ বিপ্লব কুমার দেবসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেন।

মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বলেন, “জরুরি অবস্থার সময় সাধারণ মানুষের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল। তৎকালীন পরিস্থিতি এতটাই ভীতিকর ছিল যে বহু মানুষ ত্রিপুরা ছেড়ে কলকাতা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।” তিনি আরও বলেন, “সিপিআইএম দীর্ঘ ৩৫ বছর ত্রিপুরা রাজ্যে যে শাসন চালিয়েছে, সেটাও এক ধরনের ‘স্থায়ী জরুরি অবস্থা’র মতোই ছিল।”

কমিউনিস্টদের তীব্র সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওদের মতে ভালো মানুষ মানে দলের খাতায় নাম লেখানো। অন্যথায় আপনি ভালো মানুষ নন।” তিনি দাবি করেন, কংগ্রেস এবং কমিউনিস্ট শাসনকালে রাজ্যে হত্যা ও দমন-পীড়নের প্রতিযোগিতা চলত, যেখানে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার মানুষকে প্রকৃত গণতন্ত্র এবং সংবিধানের গুরুত্ব বুঝিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্র রক্ষায় দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একটি অভিভাবকের ভূমিকা পালন করছেন। সংবিধানকে মাথায় ঠেকিয়ে সম্মান জানানোর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।” উল্লেখ্য ভারত সরকার ২০২৪ সালের ১২ জুলাই ঘোষণা করে যে প্রতি বছর ২৫ জুন সংবিধান হত্যা দিবস বা সংবিধান হত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হবে । প্রসঙ্গত ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন তৎকালীন ইন্দিরা গান্ধী কংগ্রেস সরকার সংবিধানের ৩৫২ অনুচ্ছেদের অধীনে দেশে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করে , যা ২১ মাস স্থায়ী হয় ।

আজকের এই দিনে, ঠিক ৫০ বছর আগে, ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন, ভারত সরকার দেশজুড়ে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী-এর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়, যা পরবর্তী ২১ মাস ধরে দেশের রাজনৈতিক, সাংবিধানিক ও নাগরিক জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল।

এই জরুরি অবস্থার সূত্রপাত ঘটে ১২ জুন, ১৯৭৫, যখন এলাহাবাদ হাইকোর্ট ইন্দিরা গান্ধীর লোকসভা সদস্যপদ বাতিল করে দেয়। আদালতের রায়ে তাকে নির্বাচনী অনিয়মে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং পরবর্তী ছয় বছরের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। এই রায় দেশজুড়ে রাজনৈতিক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

জয়প্রকাশ নারায়ণ-এর নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলো ইন্দিরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে এবং তাকে পদত্যাগের দাবি জানায়। তিনি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে সরকারের ‘অনৈতিক’ আদেশ অমান্য করারও আহ্বান জানান।

এর প্রতিক্রিয়ায়, রাষ্ট্রপতি ফরকরুদ্দিন আলী আহমেদ ২৫ জুন রাতে সংবিধানের ৩৫২ অনুচ্ছেদ অনুসারে “অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা” দেখিয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। এই অবস্থায় নাগরিকদের মৌলিক অধিকার স্থগিত করা হয়, সংবাদপত্রের উপর সেন্সরশিপ জারি হয়, এবং বহু বিরোধী নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয় ২১ মার্চ ১৯৭৭, এবং এরপর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ইন্দিরা গান্ধীর কংগ্রেস দল পরাজিত হয়। জনতা পার্টি ক্ষমতায় আসে এবং মোরারাজি দেশাই ভারতের প্রথম অ-কংগ্রেসি প্রধানমন্ত্রী হন।

পরবর্তীতে, জরুরি অবস্থার অপব্যবহার রোধে ৪৪তম সংবিধান সংশোধনী আইন, ১৯৭৮ প্রণয়ন করা হয়। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় পরিবর্তন আনা হয়, জরুরি অবস্থার মেয়াদ সীমিত করা হয়, এবং মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করা হয়।

এই দিনটি এখনো ভারতের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে একটি সতর্কবার্তা হিসেবে স্মরণ করা হয়—কীভাবে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সাংবিধানিক কাঠামোর অপব্যবহার নাগরিক স্বাধীনতাকে চরমভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব. তিনি তার বক্তব্যে বলেন “রাহুল গান্ধী আজ সংবিধান বাঁচানোর কথা বলেন, অথচ সংবিধান বইয়ের পাতার সংখ্যাও জানেন না। যাঁরা অতীতে সংবিধান লঙ্ঘন করে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন, আজ তারাই সংবিধানের ধ্বজাধারী সেজেছেন। ইন্দিরা গান্ধী ব্যক্তিগত স্বার্থে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন।

এছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নেন সাংসদ কৃতি সিং দেববর্মণ, সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব জে.কে. সিনহা, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক ও আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার। অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য।

For All Latest Updates

ভিডিও