Sabroom Congress News : আজকের ভারতে আমরা দাঁড়িয়ে আছি এক রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে। একদিকে সাম্প্রদায়িক বিভাজন, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির ভারে ন্যুব্জ সাধারণ মানুষ। আর অন্যদিকে জাতীয় কংগ্রেসের এক নতুন প্রয়াস – “নফরত কে বাজার মে, মহব্বত কা দোকান”। এই বার্তা নিয়েই ত্রিপুরার প্রতিটি জেলা ও মহকুমায় চলছে কংগ্রেসের জন সংযোগ যাত্রা। উদ্দেশ্য একটাই – মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা, তাদের দুঃখ-কষ্ট শোনা, আর জানানো, গত ১১ বছরে দেশের কী ক্ষতি হয়েছে।
ত্রিপুরার রাজনৈতিক আঙিনায় ফের দেখা যাচ্ছে কংগ্রেসের সক্রিয়তা ও উদ্যম। কেন্দ্রীয় সরকারের এক দশকের শাসনে সাধারণ মানুষের যেসব প্রত্যাশা ছিল তা পূরণ না হওয়ায় মানুষ আজ প্রশ্ন তুলছে—কোথায় গেল সেই ‘আচ্ছে দিন’? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এবং জনগণের সাথে সরাসরি সংযোগ গড়ে তুলতেই কংগ্রেস শুরু করেছে রাজ্যজুড়ে ‘জন সংযোগ যাত্রা’।
ত্রিপুরার প্রতিটি জেলা ও মহকুমা ধরে এই যাত্রার অংশ হিসেবে রবিবার সাব্রুম শহরে বিশাল কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। নেতৃত্বে ছিলেন পিসিসি সহ মহকুমা কংগ্রেস সভাপতি শংকর মল্ল। ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষের অভাব-অভিযোগ শোনা, মোদী সরকারের গত ১১ বছরের শাসনের খতিয়ান তুলে ধরা এবং ১৮ দফা দাবিতে জনগণকে সচেতন করাই এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য।
২০১৪ সালে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসে বহু প্রতিশ্রুতি নিয়ে – “আচ্ছে দিন”, “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ”, “কালো টাকা ফেরত” ইত্যাদি। কিন্তু ১১ বছর পর, এই প্রতিশ্রুতি গুলি এখন শুধু পোস্টার ও বক্তৃতায় সীমাবদ্ধ। বাস্তব ছবিটা অনেক ভিন্ন। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত – নীরব থাকলে চলবে না। তাই রাজ্যের প্রতিটি কোণায় কোণায় ঘুরে জনগণের কাছে পৌঁছানোর প্রয়াস চলছে এই জন সংযোগ যাত্রা-এর মাধ্যমে।
এই যাত্রায় কংগ্রেসের কর্মীরা-
° বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রশ্ন করছেন – আপনি গত ১১ বছরে কী পেলেন?
° মানুষের অভিযোগ শুনছেন, documenting করছেন।
° ১৮ দফা দাবি তুলে ধরছেন সাধারণ মানুষের সামনে, যার মধ্যে রয়েছে:
° ন্যায্য রেশন,
° যুব সমাজের জন্য চাকরি,
° কৃষকদের ঋণ মুকুব,
° মহিলাদের সুরক্ষা ও কর্মসংস্থান।
° সংখ্যালঘু ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির অধিকারের সুরক্ষা।
কংগ্রেসের মতে, বর্তমান বিজেপি সরকার শুধু মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে—চাকরি নেই, মূল্যবৃদ্ধি লাগামছাড়া, কৃষকদের অবহেলা, শিক্ষার বেহাল দশা, এবং সংখ্যালঘুদের উপর লাগাতার আক্রমণ। তারা বলছে, “নফরত কে বাজার মে মহব্বত কা দোকান” খুলে কংগ্রেস সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে চায়—সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে। এই জন সংযোগ যাত্রা শুধুই রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং এটি একটি সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ, যেখানে কংগ্রেস জনগণের দুঃখ-দুর্দশার ভাগীদার হতে চাইছে, এবং বিকল্প রাজনীতির পথ দেখাতে চাইছে।
কংগ্রেসের এই সরাসরি জনসংযোগ কর্মসূচি রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষ এই প্রচারে কতটা সাড়া দেন এবং এর প্রভাব কী হয়, এখন সেটাই দেখার বিষয়। কংগ্রেসের এই প্রচারের মূল লক্ষ্য হলো বিজেপি সরকারের এগারো বছরের নানা ব্যর্থতা লিফলেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং অন্যান্য সমস্যাগুলো তুলে ধরা। ত্রিপুরার রাজনীতিতে এই জন সংযোগ যাত্রা কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময় বলবে, তবে কংগ্রেসের এই সক্রিয়তা বিজেপির জন্য যে এক বড় বার্তা—তা বলাই বাহুল্য।