NCC PS News : ত্রিপুরায় বেআইনি মাদক ব্যবসা যেন দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। পুলিশের হাতে ধরা পড়েও অনেক কারবারির মুখে দেখা যায় অদ্ভুত নির্লজ্জ আত্মবিশ্বাস। তেমনই ঘটনা সামনে এসেছে গোয়াবস্তির কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী বাপ্পি সরকার ও তার সহযোগী রিংকু সরকার কে ঘিরে।
সম্প্রতি গোয়াবস্তি অঞ্চলে পুলিশ একটি বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। সেই সময় তিনজনকে মাদকসহ গ্রেফতার করা হলেও, বাপ্পি ও রিংকু ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় এবং দীর্ঘদিন পলাতক থাকে। অবশেষে ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে পুলিশ বাপ্পিকে জিবি বাজার এলাকা থেকে আটক করতে সক্ষম হয়। আদালত তাকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
রিমান্ড চলাকালে বাপ্পির জিজ্ঞাসাবাদ থেকে রিংকুর অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় পুলিশ। সেই সূত্র ধরেই পরদিন সন্ধ্যায় কৃষ্ণপাড়া এলাকা থেকে রিংকুকে গ্রেফতার করা হয়। দু’জনের বিরুদ্ধেই এনডিপিএস আইনের অধীনে পূর্ব থেকে মামলা ঝুলে ছিল। পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।
তবে যা সবচেয়ে বেশি বিস্ময় সৃষ্টি করেছে, তা হলো আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় বাপ্পির আচরণ। পুলিশের কঠোর ঘেরাওয়ের মধ্যেও তাকে দেখা যায় দাঁত বের করে হাসতে হাসতে হাঁটতে। যেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা আদালতের প্রতি তার বিন্দুমাত্র ভয় নেই। অনেকের প্রশ্ন—এই আত্মতৃপ্তির কারণ কি? কোনো ‘উপরের হাত’ বা গোপন ভরসা কি তাকে এতটা নিশ্চিন্ত করেছে?
এনসিসি থানার কর্মকর্তারা জানান, গোয়াবস্তিতে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে এই দুই কারবারিকে ধরতে পুলিশের বিশেষ দল নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছিল। অবশেষে উভয়ের গ্রেফতারের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের একটি চক্রকে ধরা সম্ভব হয়েছে। আজ রিমান্ড শেষে আবারও আদালতে তোলা হবে তাদের।
তবে এলাকাবাসীর বড় প্রশ্ন—এভাবে যদি মাদক কারবারিরা ধরা পড়েও অহংকারভরা চেহারা নিয়ে আদালতে যায়, তাহলে রাজ্যে মাদকমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা কতটা সম্ভব? পুলিশের ধারাবাহিক সাফল্য সত্ত্বেও মাদক ব্যবসার গভীর শিকড় নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে।



