Tripura News : কমলাসাগর বিধানসভার মধুপুরের জামচৌমুহনী এলাকায় স্বর্ণের চেইন প্রতারণার এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। অজ্ঞাত পরিচয়ের দুই যুবক নিজেদের ‘পিতল–রূপা পরিষ্কারকারী’ বলে পরিচয় দিয়ে স্থানীয় এক গৃহবধূর কাছ থেকে দুই ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন নিয়ে উধাও হয়ে যায়।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, উত্তম দেবনাথের অনুপস্থিতিতে তাঁর বাড়িতে ঢোকে দুই যুবক। গৃহবধূ অনিতা দেবনাথ প্রথমে ভেবেছিলেন, হয়তো ফাইন্যান্স সংস্থার কেউ এসেছে। পরে দু’জন জানায়, তারা নাকি পিতল ও রূপার জিনিস পরিষ্কার করতে চায়। বিশ্বাস করে অনিতা দেবনাথ তাঁর মেয়ের রূপোর সামগ্রী ও ঠাকুরঘরের একটি পিতলের থালা তাদের হাতে দেন। পাউডার লাগিয়ে পরিষ্কার দেখানোর পর মহিলার আস্থা আরও বেড়ে যায়।
সেই সময় অনিতা দেবনাথের গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন পরিষ্কার করার প্রস্তাব দেয় দুই যুবক। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তরল ধরনের পাউডারের গন্ধ ছড়িয়ে তাকে সাময়িক বিভ্রান্ত অবস্থায় ফেলে চেইনটি কাগজে মুড়িয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
প্রায় অর্ধ মিনিট পরে বিভ্রম কাটতেই অনিতা দেবনাথ বাইরে ছুটে যান এবং চিৎকার শুরু করেন। কিন্তু ততক্ষণে প্রতারকরা সটকে পড়ে। তবে তারা বুঝতেই পারেনি যে বাড়ির অধিকাংশ জায়গা সিসিটিভির আওতায়। পরে সেই ফুটেজ নিয়ে অনিতা দেবনাথ মধুপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এবং দুই অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি দাবি জানান। তাঁর অনুমান, চেইনটির বাজারমূল্য ২ লক্ষ টাকারও বেশি।
স্থানীয়দের দাবি, বাইরের রাজ্য থেকে এসে এভাবেই গ্রামের সরল মহিলাদের লক্ষ্য বানিয়ে প্রতারণার ঘটনা বাড়ছে। তবে পুলিশের সক্রিয় তদন্ত এবং সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্যে অভিযুক্তদের দ্রুত চিহ্নিত করা সম্ভব হবে বলে অনেকে আশা প্রকাশ করেছেন।
মধুপুরে স্বর্ণের চেইন প্রতারণার এই ঘটনা স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে গ্রামাঞ্চলেও এখন অপরাধীরা নতুন নতুন কৌশল নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সরল বিশ্বাসকে পুঁজি করে প্রতারকচক্র যেভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজেদের পরিচয় গোপন করে অপরাধ করছে, তা উদ্বেগজনক। তবে সিসিটিভি ফুটেজ ও পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপই অভিযুক্তদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারের প্রধান সহায়ক হতে পারে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি এবং সাধারণ মানুষের সচেতনতা—এই দুই মিলেই এমন অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব।



