খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Tuesday, 15 July 2025 - 12:48 AM
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫ - ১২:৪৮ পূর্বাহ্ণ

Tripura Electricity Smart Meter : এক মসে বিল এলো ৮২ হাজার টাকা , বিদ্যুতের স্মার্ট মিটার স্মার্ট ভাবে পকেট কাটছে ভোক্তাদের

Tripura Electricity Smart Meter
1 minute read

Tripura Electricity Smart Meter : ভূতুরে স্মার্ট মিটারের আরও এক কামাল। সোনামুড়ার ঘটনার পর এবার ৮২ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দিয়ে তাক লাগানো খোয়াই বিদ্যুৎ দপ্তর। বিদ্যুৎ ভোক্তাদের মাথায় হাত। এদিকে বিদ্যুৎ এর স্মার্ট মিটার নিয়ে প্রশ্ন করতেই তেলে বেগুনে জ্বলে সাংবাদিক দের উপরেই চড়াও বিদ্যুৎ মন্ত্রী।

স্মার্ট মিটার কে কেন ভূতুরে মিটার বলা হচ্ছে তার আরও এক প্রমাণ পাওয়া গেল। তবে এবারের ঘটনা খোয়াই জেলায়। খোয়াই এর দুজন গ্রাহকের এক মাসের বিদ্যুৎ বিল দেখে রীতিমতো মাথায় বজ্রাঘাত। তার কারণ তাদের একজনের বিল এসেছে ৮২ হাজার ৫০০ টাকা এবং অন্য আরেকজনের বিল এসেছে ৩১০০০ টাকা। ঘটনা খোয়াই বনকর এলাকায় । বিল দেখে হতবাক বাড়ির মালিক অশোক দাস রায় এবং প্রমেশ বাবু।

রাজ্য ব্যাপি এই স্মার্ট মিটার নিয়ে জোর আন্দোলনে মুখর বিরোধীরা । আর শুধু বিরোধীরাই নন , রাজ্যের আম জনতাও এই স্মার্ট মিটার কে পরিত্যাগ করতে দফায় দফায় দাবী জানাচ্ছেন।

উল্লেখ্য গত জুন মাসের ২৬ তারিখে সোনামুড়া খেদাবারি এলাকাতেও এক গ্রাহক কে প্রায় ৯২ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দেওয়া হয় এই স্মার্ট মিটারের দৌলতে। এবার একই ঘটনা খোয়াই জেলায়। মাত্র এক মাস পূর্বে স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিস থেকে নাকি এই স্মার্ট মিটার গুলো লাগানো হয় অশোক ও প্রমেশ বাবুদের বাড়িতে।

রাজ্য সরকার নাকি বিদ্যুৎ অফিস গুলোকে নির্দেশ দিয়েছে যে এই স্মার্ট মিটার লাগানো একান্তই বাধ্যতামূলক। যদিও এধরণের কোনো নিয়ম সরকারি ভাবে জারি করা হয়েছে বলে কারো জানা নেই।
তবুও জোর করে গ্রাহক দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই স্মার্ট মিটার বসানো হচ্ছে বিদ্যুৎ নিগমের তরফে, তাও আবার রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তরের নির্দেশ মূলে।

এদিকে বিদ্যুৎ মন্ত্রী দফায় দফায় বৈঠক করে স্মার্ট মিটারের গুণাবলী তুলে ধরে স্মার্ট মিটার কে রাজ্য বাসীর কাছে গ্রহন যোগ্য করে তুলতে চাইছেন।

সম্প্রতি স্মার্ট মিটারের বিল এর সাথে সানড্রাই চার্জ এবং একাধিক চার্জ জড়িয়ে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠে এসেছে। মন্ত্রী দাবী করেছেন যে এই বিষয় গুলি নাকি রাজ্য বাসী কে আগেই অবগত করা হয়েছে। যদিও এর কোনো প্রমাণ আমাদের কাছে পৌছায় নি। রাজ্যের লক্ষাধিক গ্রাহক দের না জানিয়েই বিদ্যুৎ এর আসল বিল এর পরিমানের সাথে সানড্রাই সহ একাধিক চার্জ জুড়ে দেবার পরিপ্রেক্ষিতে ও জোর আন্দোলন চলছে। কিন্তু বিদ্যুৎ মন্ত্রী তাতে কর্ণপাত করছেন না।

সানড্রাই চার্জ কি , সেটাও অনেকেই জানেন না।

মূলত এই চার্জ ধার্য করা হচ্ছে

• বিদ্যুৎ বিলিং-এর জন্য মিটারিং ব্যবস্থা পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ
• বিদ্যুৎ সংস্থার কর্মচারী দের বেতন এবং অন্যান্য খরচ,
• এমনকি বিলিং প্রক্রিয়া, বিদ্যুৎ সংস্থার অফিসের রক্ষণাবেক্ষণ, প্রশাসনিক খরচ ইত্যাদি বিষয় গুলি বাবদ ।

গ্রাহক থেকে এই সমস্ত কারণেই এই বাড়তি টাকা নিচ্ছে বিদ্যুৎ দপ্তর। যা নিয়ে মোটেও অবগত নন ভোক্তারা।
সব চাইতে বড় বিষয় রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ এই স্মার্ট মিটার কে বয়কট করছেন। কিন্তু তার পরেও রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ দপ্তর জোর পূর্বক গ্রাহকদের ঘাড়ে বিশাল অঙ্কের বিদ্যুৎ বিলের বোঝা চাপিয়ে দিতে , স্মার্ট মিটার চাপিয়ে দিতে উঠে পরে লেগেছেন।

অতঃপর অনতিবিলম্বে স্মার্ট মিটার সরানোর দাবি জানাচ্ছেন খোয়াই এর এই দুই ভুক্তভোগী গ্রাহক। এদিকে স্মার্ট মিটারের এই ধরনের বিস্তর অভিযোগ কানে আসতেই লাপাতা হয়ে গেলেন খোয়াইয়ের বিদ্যুৎ দপ্তরের সিনিয়র ম্যানেজার দিবাকর নাথ। কোনভাবেই ওনাকে নাকি আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফোন করলে ফোন ধরছেন না। তিনি কোথায় কেউ জানেন না। সাধারণ মানুষ এখন পড়েছেন মহা সমস্যায়।

একই দিনে বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ সাংবাদিক বৈঠক ডেকে স্মার্ট মিটারের গুণাবলী নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা করলেও কেন গ্রাহক দের নামে এই বিশাল মাপের বিল আসছে তা নিয়ে টু শব্দ টি করছেন না তিনি। সাংবাদিকরা কোনো বাড়তি প্রশ্ন করলেই ক্ষেপে লাল হয়ে যাচ্ছেন রতন লাল নাথ বাবু ।

তবে কি এই প্রশ্ন গুলো তে ব্যাপক ভয় উনার ? স্মার্ট মিটারের আড়ালে যে বিশাল মাপের বাণিজ্যিক ফায়দা লুটার পরিকল্পনা রয়েছে সেটা ফাঁস হয়ে যাবার ভয় রয়েছে কি ? নাকি এর পেছনে রয়েছে আরও বড় কোনো বিষয় ?

যাই হোক , ত্রিপুরার মানুষ স্মার্ট মিটার কে চাইছে না। এটা যত তারাতারি সম্ভব রাজ্য সরকার যদি অনুভব করতে পারেন তাহলেই বোধয় উভয়ের জন্যেই সুবিধাজনক হবে।

For All Latest Updates

ভিডিও