ট্র্যাফিক পুলিশ হেনস্থার তিন দিন পর গ্রেফতার অভিযুক্ত যুবক

Khabare Pratibad
4 Min Read

ট্র্যাফিক পুলিশ হেনস্থার তিন দিন পর গ্রেফতার অভিযুক্ত যুবক

মানিক বাবুর সুশাসনের ত্রিপুরায় নির্যাতিত ট্র্যাফিক কর্মী। এর চাইতে বড় নিন্দনীয় ঘটনার সাক্ষী ত্রিপুরার মানুষ রয়েছেন কিনা আমাদের জানা নেই। পুলিশ প্রশাসন কে ফ্রি হ্যান্ড দেওয়ার এই নমুনা ? তাহলে তো আগের দিন গুলোই ভালো ছিল। আইনের শাসন নাকি ছিল না বাম আমলে। কিন্তু বাম আমলে কি শুনেছেন , কোনো বাইক বাহিনীর নাম ? বাইক বাহিনী গুণ্ডাদের দ্বারা শুনেছেন কখনো কোনো পুলিশ কর্মী কে হেনস্থা হতে ?
বিরল সব ঘটনার সাক্ষী বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার মানুষ। অবাক হতে হয়। এতো কিছু অগ্রাহ্য করে এক নেতা বুক ফুলিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে জোর গলায় দাবী করছেন রাজ্যে নাকি আইনের শাসন কায়েম আছে। আরে আইন নিজেই তো কোণঠাসা । তাহলে শাসন কায়েম কার ? বাইক বাহিনী নামধারী গুন্ডা দের !
গত ২রা অক্টোবর মহালয়ার প্রাতঃ পরিক্রমা শেষ করেই বোধয় ফিরছিল কতিপয় যুবকেরা। তখনই নেতাজী চৌমুহনী এলাকায় হেলমেট পরিধান কিংবা বেআইনি পারকিং সংক্রান্ত যে কোনো এক বিষয় কে কেন্দ্র করে উক্ত এলাকায় দায়িত্ব রত ট্র্যাফিক পুলিশ কর্মীর সাথে বাক বিতণ্ডা হয় তিন যুবকের। তাদের অভিযোগ পুলিশ বাবু নাকি তাদের একজনের গলা থেকে চেইন টেনে নিচ্ছিলেন। হাস্যকর !
অন্যদিকে সেই তিন যুবক ট্র্যাফিক পুলিশ বাবুর সাথে যা নয় তাই অভব্য ভাষায় গালি গালাজ ও সরাসরি প্রাণে মারার হুমকি অব্দি দেয়। উল্লেখ্য, ঐ ট্র্যাফিক কর্মী একজন তিপ্রাসা সম্প্রদায়ের লোক। যে ঘটনার ভিডিও টি ভাইরাল হয় মুহূর্তের মধ্যেই তাতে দেখা যায় ট্র্যাফিক কর্মীর জাত পাত তুলেও উনাকে গালি দিয়েছে ঐ তিন যুবক। ডিউটি সেরে বাড়ি যাবার সময় নাকি তাকে দেখে নেবে এরা, এমনটাও হুমকি দেয়।এছারা ও আরও বহু বিশ্রী গালি গালাজ করা হয় যা সভ্য সমাজে বলা দূর, শুনলে ও পাপ অনুভুতি জাগবে। যাই হোক। এই হচ্ছে সুশাসনের সরকারের আমলে পুলিশ কর্মীদের অবস্থান। যেখানে ঐ তিন যুবকের মনে এক মুহূর্তের জন্যে এই ভয়টাই কাজ করেনি যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে কিংবা তাদের সাজা হতে পারে একজন পুলিশ কর্মীর সাথে দুর্ব্যবহার করার ফলে। এতো আশকারা কোত্থেকে পাচ্ছে এরা ? এদের চোখে মুখে ভয়ের ছাপ টুকু অব্দি নেই। কার ক্ষমতায় বলিয়ান এরা ? জবাব একটাই, জোর যার মুলুক তার। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে এরা বাইক বাহিনী সংগঠনের নির্ভয় গুণ্ডার দল। যারা জানে , এদের কে পুলিশ ছুয়ে ও দেখবে না। কারণ মাথার উপর দাদার আশীর্বাদ আছে। কোন দাদা, আপনিই ভাবুন।
অন্যদিকে ঘটনার ৩ দিন পেড়িয়ে গেলে থানায় মামলা করা হয় । পূর্ব থানার পুলিশ মামলা হাতে নেয় কিন্তু শনিবার সন্ধে পর্যন্ত কাউকেই ধরতে পারেনি পুলিশ। অবশেষে একজন কে আটক করে নিয়ে আসা হয় থানায়। তার নাম দ্বীপ দত্ত , বাড়ি এডি নগর এলাকায় বলে জানান এসপি সাহেব। ১১৭, ১৩২ ও ৩৫১ বিএনএস এবং সেকশান ৩ এসসি , এসটি এই ধারায় মামলা নিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও যে দুজন কে ভিডিও তে দেখা গেছে তাদের কেউ খুঁজছে পুলিশ। অতিসত্বর তাদের ও গ্রেফতার করে জেলে ঢোকানো হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। তাতে আপাতত কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন মানুষ।
যাই হোক, সাধারণ মানুষ কিন্তু এগুলো দিনের পর দিন মেনে নেবেন না। বিগত কয়েক বছরে ত্রিপুরার অবস্থান যে জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে তার কিছুটা হলেও জবাব দিয়েছেন ২০২৩ এর বিধানসভা নির্বাচনে। এই তবীয়তে শুধার না এলে ২০২৮ এ যে শক্তি নিয়ে ভোট কেন্দ্রে জবাব দেবে জনতা , এটা কিন্তু মাথায় রাখতে হবে। তাই মুখে “ ফ্রি হ্যান্ড “ না বলে প্রকৃত অর্থেই প্রশাসন কে ফ্রি করা হোক। এটাই চায় মানুষ।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *