খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Sunday, 21 December 2025 - 07:18 AM
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ - ০৭:১৮ পূর্বাহ্ণ

Sonamura Farmer News : সীমান্তে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন লাইটে বিপর্যস্ত কৃষি—চরম সংকটে ভারত ভূখণ্ডের প্রান্তিক চাষিরা

Sonamura Farmer News
1 minute read

Sonamura Farmer News : ভারত–বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাঁটাতারের ঠিক ওপারের ভারতীয় ভূখণ্ডে বাস করা শত শত কৃষক এ বছর কৃষিকাজে নজিরবিহীন সঙ্কটের মুখে পড়েছেন। সীমান্তজুড়ে লাগানো উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এলআইডি লাইট রাতভর জ্বলে থাকার ফলে ধানের গাছ অস্বাভাবিকভাবে লম্বা হলেও ফলন প্রায় হয়নি বলেই অভিযোগ তুলেছেন চাষিরা।

কৃষকদের বক্তব্য—অধিক আলোর তেজে ধানের গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধিচক্র সম্পূর্ণ বিঘ্নিত হয়েছে। গাছের কান্ড বড় হলেও শস্য দানা তৈরি হয়নি; অনেক গাছ তো আলোর তাপে শুকিয়ে পর্যন্ত গেছে। ফলে হাজার হাজার টাকা বিনিয়োগ করে আমন মরশুমে যে সোনার ফসল ফলানোর আশা ছিল, তা পুরোপুরি ভেস্তে গেছে।

এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরেক নতুন সমস্যা। কাঁটাতার থেকে প্রায় পাঁচ মিটার দূরে মাটির সমতলে আরেকটি অতিরিক্ত কাঁটাতার বিছিয়ে রাখা হয়েছে নিরাপত্তার খাতিরে। ফলে মাঠে কাজ করতে গিয়ে কৃষক ও শ্রমিকদের পা ফেটে রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিনই। বহু চাষি এবং মজুর এই দুর্ভোগের কথা জানিয়েছেন।

সোনামুড়া মহকুমার দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তগ্রামগুলো—বিশেষত কাঠালিয়া ব্লক এলাকায়—এই সংকট আরও গভীর আকার নিয়েছে। স্থানীয়দের মতে, আগের কম-পাওয়ারের লাইটে কখনো এমন ক্ষতি হয়নি। কিন্তু গত এক বছরে ত্রিশ ফুট উচ্চতায় বসানো নতুন এলআইডি লাইটের তীব্রতা সব বদলে দিয়েছে।

উত্তর পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে দক্ষিণ ভবানীপুর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলেই একই চিত্র। নির্ভয়পুরের রহিম মিয়া, শৈলেন সরকার, হারাধন দে, নারায়ণ মজুমদারসহ অনেক কৃষক সংবাদমাধ্যমকে ডেকে তাদের দুঃখ-ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের প্রশ্ন—“ফসল নষ্ট হলে ক্ষতিপূরণ দেবে কে?”

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিএসএফের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও তারা বিষয়টি নিজেদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে দাবি করেছেন। ব্লক পঞ্চায়েত ও বিধায়কের কাছেও বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে, তবে এখনো আশ্বাসের বাইরে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

কৃষকদের আবেদন, কৃষিমন্ত্রী যেন বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করেন। কারণ পরিস্থিতি এমনভাবে রূপ নিচ্ছে যে সামনের দিনে সীমান্তের ভারতীয় ভূখণ্ডের বহু উর্বর জমি পতিত হয়ে পড়ে থাকতে পারে। চাষিদের বক্তব্য—“শ্রম, সময়, টাকা—সব খরচ করেও যদি ফসল না পাই, তাহলে আমরা চাষ করব কীভাবে?

উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সীমান্ত লাইট এবং অতিরিক্ত কাঁটাতারের কারণে সীমান্তবর্তী ভারতীয় কৃষকদের জীবন-জীবিকা আজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ধান চাষে বিপুল ক্ষতি, শারীরিক ঝুঁকি ও অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ তাঁদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলছে। কৃষকদের দাবি—সমস্যার দ্রুত সমাধান ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ছাড়া তারা আর কৃষিকাজ চালিয়ে যেতে পারবেন না। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো দ্রুত হস্তক্ষেপ না করলে দীর্ঘদিন উর্বর থাকা সীমান্তবর্তী বিস্তীর্ণ কৃষিজমি পতিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠছে।

For All Latest Updates

ভিডিও