Sheikh Hasina News : ছাত্র গণ অভ্যুত্থানের মুখে পরে বাংলাদেশের ক্ষমতা থেকে চ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন সে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যিনি ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর খুব ভালো বন্ধু ও বটে। ভারত বাংলার মাঝে মৈত্রী বন্ধন স্থাপনের ক্ষেত্রেই উভয়ের মাঝে যে মেল বন্ধন ছিল তা দুই দেশের কাছেই স্পষ্ট। বিপদ কালীন অবস্থায় হাসিনা কে ভারতে স্থান দিয়েছে সরকার।
অন্যদিকে সে দেশের অন্তর্বর্তী কালীন ইউনুস সরকার বরাবরই হাসিনা কে ফেরত চেয়ে চিঠি দিয়েছে ভারত সরকার কে। যদিও ফলাফল শূন্য। এদিকে গণ অভ্যুত্থানের জেরে যারা নিহত হয়েছেন তাদের মৃত্যুর জন্যে হাসিনা কে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা চলে। ট্রাইব্যুনাল গঠন করে হাসিনার নামে চলমান এই মামলার দীর্ঘ সুনানি চলছিল বছর ব্যাপি। তার সাথে ছিল আরও দুজনের নাম। যার মধ্যে একজন ইতিমধ্যেই রাজ সাক্ষী হয়ে দোষ স্বীকার করেছেন। অপর দুজন এর বিরুদ্ধে ১৭ই নভেম্বর সাঁজা ঘোষণার কথা ছিল।
নির্ধারিত দিন অনুযায়ী সোমবার, ১৭ই নভেম্বর হাসিনার মামলায় তাকে ও অপর অভিযুক্ত প্রাক্তন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যু দণ্ডে দণ্ডিত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আর এই ঘোষণা দিতেই বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের একাংশ আনন্দে আত্ম হারা হয়ে পরে। অন্যদিকে আইনজীবী রা জানায়, এটা ছাত্র আন্দোলনের আরও এক সাফল্যের দিন। কিন্তু এই সব কিছুর মাঝেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী তথা সাঁজা প্রাপ্ত শেখ হাসিনা তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
স্পষ্ট ভাষায় এই সাঁজা কে প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। ততসঙ্গে এই ঘোষণা কে বেআইনি এবং জালিয়াতি পূর্ণ বলেও আখ্যা দেন তিনি। একটি অন্তর্বর্তী কালীন সরকার যা কিনা জনগণের ভোট ছাড়াই দেশ পরিচালনা করছে তার অন্তর্নিহিত এই ট্রাইব্যুনাল এর কোনো ঘোষণাই বৈধ হতে পারে না। এছাড়াও তিনি বলেন, গণ আন্দোলনে নিহত দের ন্যায় পাইয়ে দেবার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নয়। বরং হাসিনা ও আওয়ামী লীগ কে দমিয়ে দেওয়া এবং চিরতরে মুছে দেওয়া টাই হচ্ছে মূল লক্ষ্য।
হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভাবে ভিত্তিহীন ও তার স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই বলেও উনি উল্লেখ করেছেন নিজের লিখিত বিবৃতি তে। সম্পূর্ণ ভাবে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যেই এই জালিয়াতি করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের মানুষ বোকা নয়। মানুষ এর জবাব দেবেন। আগামী বছর বাংলাদেশের নির্বাচনে যাতে মানুষ সঠিক ভাবে তার জবাব দেন এবং নির্বাচন যাতে স্বচ্ছ হয় সেই আহ্বান ও রাখেন হাসিনা।
এদিকে আইসিটি – র ঘোষণা প্রকাশ এর পর তা ভারত সরকারেও নজর কেড়েছে স্বাভাবিক ভাবেই। আর তা নিয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকেও একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। যেখানে লেখা হয়েছে –
“ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ঘোষিত রায় ভারত লক্ষ্য করেছে। ভারত , বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থ তথা শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সর্বদা সকল অংশীদারদের সাথে গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ত থাকব। “
এই বার্তার মধ্যে দিয়ে ভারত সরকার কি বোঝাতে চাইছেন ? সেটা আপাতত স্পষ্ট নয়।
তবে হাসিনা কে ফেরত চেয়ে ভারত সরকার কে পুনরায় চিঠি দেবে বাংলাদেশ এর অন্তর্বর্তী কালীন সরকার, এদিন এমনটাই জানিয়েছেন সেখানকার এক আইনজীবী। এবার ভারত কিভাবে তার জবাব দেবে সেদিকেই লক্ষ্য রাখছেন সকলে। বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার সুবাদে কি এবার বাংলাদেশ সরকারের দাবী মেনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে হাসিনা কে , নাকি হাসিনা ভারতে নিশ্চিন্তে অতিথি রূপে বিরাজ থাকবেন আগামী দিনেও সেটুকুই জানতে চায় উভয় পক্ষ সমেত গোটা বিশ্ব।



