Khowai BJP mandal flex
ফিল্মি কায়দায় মণ্ডলের ফ্লেক্স ছিঁড়ে গেল যুবক, কপালে জুটলো পাগলের তকমা
চোখে চশমা , হাতে হাঙ্ক বাইক। সিনেমার হিরোর মতো বাইক থেকে নেমে ফিল্মি কায়দায় বিজেপির পোস্টারে লাথি , তারপর ঘুশি । একেবারে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল সুশাসনের বেনার। এমনই এক ঘটনা ঘটে গেল এবার খোয়াই জেলার বুকে। রাজ্য বিজেপির উপর মানুষের তিতি বিরক্তি চরম পর্যায়ে । প্রত্যেকে মুহূর্তেই তার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে কোথাও না কোথাও। তার প্রমাণ আবারো মিলছে আজকের এই ঘটনায় ।
আপনাদের আজ শোনাবো এক মিথ্যে গল্পের উত্থান । এই গল্পে কোথাও আপনাদের হাসি পাবে আবার কোথাও আপনাদের হতে পারে রাগ। কেন এ কথা বলছি তা বুঝতে আজকের এই সম্পূর্ণ আলোচনা টি ভালো ভাবে শুনুন ।
খোয়াই জেলা, ত্রিপুরার অন্যতম একটি জেলা। যেখানে দিনের আলোতে এবার শাসক বিজেপির এক পোস্টারে বেপরোয়া হিরোর মতো এসে লাথি আর ঘুশি মেড়ে সান গ্লাস চোখে পরে বুক ফুলিয়ে বাইক নিয়ে চলে গেল এক যুবক। ভারতীয় জনতা পার্টি খোয়াই মন্ডল কার্যালয়ের সামনে ঘটেছে এই ঘটনা । কিভাবে এই ঘটনা ঘটাল যুবক তা ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায় যেটি আপনারা এই মুহূর্তে স্ক্রিনে দেখছেন।
ভিডিও টি সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত গুতিতে ভাইরাল হতেই নড়ে চোরে বসে খোয়াই মণ্ডল। প্রথম অবস্থায় এমনটাও চাউর হতে শুরু করে যে ঐ যুবক বিজেপি দলেরই এক কর্মী। কিন্তু গোটা ঘটনার মোড় ঘোড়াতে ব্যাতিব্যস্ত হয়ে পরে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব রা। বিজেপি মন্ডল কার্যালয়ে প্রবেশ করে দলীয় নেতৃত্বদের ফ্লেক্স ও ফেস্টুন সহ দলীয় পতাকা ছিড়ে ফেলে দেওয়া হল – এই ঘটনা যেন চরম লজ্জায় ফেলেছে খোয়াই বিজেপি কে। তাই ঘটনার মোড় গুড়িয়ে দিতে তড়িঘড়ি সাংবাদিক সন্মেলন ডেকে এক অসাধারন নাটক মঞ্চস্ত করলো খোয়াই মণ্ডল। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি খোয়াই জেলা সভাপতি বিনয় দেববর্মা, মন্ডল সভাপতি অনুকূল দাস সহ অন্যান্যরা। এমনকি ডেকে আনা হয় সেই যুবকের বাবা কে। যার বক্তব্যে মুহূর্তের জন্যে সকলেই বিশ্বাস করে নেবেন যে এই ঘটনার সাথে রাজনৈতিক সংঘাত কিংবা বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের কোনো সম্পরকই নেই। কারণ সেই যুবক কে আঁখেরে মানসিক ভারসাম্য হীন বলে পরিচয় করিয়েছে খোয়াই মণ্ডল।
উল্লেখ্য তার নাম রুপক দাস , বাড়ি রামচন্দ্র ঘাট এলাকায়।এদিনের সাংবাদিক সন্মেলনে তার বাবা নিজেই বক্তব্যে উল্লেখ করে বলছেন যে বিগত তিন বছর যাবত ছেলে রুপক দাস মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন তাই সে প্রায়শই এই ধরণের ঘটনা ঘটায়। রাজধানীর আইজিএম হাসপাতালের প্রেস্কিপ্সহান দেখিয়ে খোয়াই মণ্ডল এটা প্রমাণ ও করতে চায়।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে , মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী অরথোপেডিক ডাক্তারের কাছে কোন মানসিক রোগের চিকিৎসা করছিলো ? তাই চাইতে ও বড় কথা যদি ধরে নেওয়া হয় যে সে আসলেই মানসিক ভাবে অসুস্থ্য তবে তো তার কোন মানসিক চিকিৎসালয়ে হওয়া উচিৎ ছিল। একজন মানসিক ভারসাম্য হীন যুবকের তো সান গ্লাস চোখে পরে দামি বাইক নিয়ে , জ্যাকেট , জিন্স আর শু পরে হিরোর মত ঘুরে বেরানোর কথা নয়। ডিজিটাল ত্রিপুরায় তবে এটাই নতুন মানসিক রোগীর উদাহরণ।
যে প্রেস্কিপ্সহান দেখানো হয়েছে তা দেখে রুপক দাস কে মানসিক ভাবে অসুস্থ্য বলে সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস করা যায়না। তবে কি গোটা ঘটনার মোড় ঘোড়াতে ক্যামেরার সামনেই ডাহা মিথ্যে বলার চেষ্টা হয়েছে খোয়াই মণ্ডল এর পক্ষ থেকে ? সন্দেহ কিন্তু থাকছেই।
আর যদি ধরে নেওয়া যায় যে সে পাগল বা মানসিক ভাবে অসুস্থ্য একটা লোক , তবে কি আমরা এটা বলতে পাড়ি যে আজকাল সুস্থ্য মানুষ তো বটেই অসুস্থ্য কিংবা পাগল লোকেরা ও পছন্দ করছে না বিজেপি কে ?
যাই হোক । গোটা রাজ্য জুড়ে প্রতিদিন ঘটে চলা নানা ঘটনা প্রমাণ দিচ্ছে যে শাসক বিজেপি থেকে বহু মানুষের মন উবে গেছে। যে কারণে বিভিন্ন জেলা মহকুমা জুড়ে একদিকে চলছে গোষ্ঠী কোন্দল, চলছে দল বদল । এমন কি শরিক দল তিপ্রা মথা পর্যন্ত এখন আর গ্রহন করতে পারছে না গেঁড়ুয়া শাসন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে খোয়াই এ প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা শাসক দলের কাছে কতটা লজ্জা জনক হতে পারে সেটা ভেবেই হয়তো গোটা চিত্র কে উল্টে পাল্টে পরিবেশন করার একটা সুন্দর প্রচেষ্টা করা হয়েছে । কিন্তু এই প্রচেস্তা কতটা সফল হল, সেটা আপনারাই যাচাই করুন।