Kanchanpur Subhash Nagar saranarthi
ভোটের তালিকায় নাম আছে,কিন্তু ভূমি নেই”।গভীর জঙ্গলে রাত কাটাচ্ছেন অসহায় ভূমিহীন পনেরোটি পরিবার।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উত্তর ত্রিপুরা জেলার কাঞ্চনপুর মহকুমার সুভাষ নগর সহ আশপাশ এলাকায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করতেন ভূমিহীন বেশ কিছু পরিবার।নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।তবুও অনেককেই সেখানে ভাড়া বাড়িতে থাকতে হতো।ভাড়া মিটিয়ে দিতে না পারায় সেখান থেকেও বের করে দেওয়া হয় অসহায় পরিবারগুলোকে।নিরুপায় হয়ে ইতিমধ্যে পানিসাগর মহাকুমাধীন জলেবাসা পেকুছড়া এলাকায় এসে বন দপ্তরের আওতাধীন ভূমিতে আশ্রয় নেন ভূমিহীন প্রায় পনেরোটি পরিবার। তাবু বানিয়ে ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে তারা কোনরকম মাথা গোজার ঠাঁই করেন পেকুছড়া গ্রামে।খবরটি যায় স্থানীয় বনদপ্তরের কাছে।শনিবার রাত আটটা নাগাদ স্থানীয় বনদপ্তরের কর্মীরা দলবল নিয়ে উপস্থিত হয় সেখানে।লাঞ্ছিত ভূমিহীনদের মাথা গোঁজার ঠাই টুকু ভেঙ্গে চুরমার করে দেয় বলে অভিযোগ।শুধু তাই নয় পুরুষ সহ মহিলাদের মারপিট করে সেখান থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।তাছাড়া কোন মহিলা কর্মী ছাড়াই এদিন অভিযান সংঘটিত করে বনদপ্তরের কর্মীরা।অসহায় উদ্বাস্তু পরিবারের মহিলারা জানান, রাতের অন্ধকারে বন বিভাগের মহিলা কর্মী ছাড়াই পুরুষ কর্মীরা তাদের গায়ে হাত দিয়ে ঠেলা ধাক্কা করতে থাকে।এতে বাঁধা দিতে গেলে বেধড়ক মারপিট করা হয় মহিলা পুরুষ সহ শিশুদেরও।বন দপ্তরের কর্মীরা ফিরে যাওয়ার সময় হুমকি-ধমকি দিয়ে যায় বলেও জানান ভূমিহীন পরিবারগুলো।বলা হয় পরের দিন যাতে ওই এলাকায় কেউ না থাকে।বনদপ্তরের এমন নির্মম অত্যাচারের পর অসহায় ওই পরিবারগুলোকে গভীর জঙ্গলে খোলা আকাশের নিচে শনিবার রাতভর থাকতে হয়েছে।
এদিন রাতেই স্থানীয় সংবাদকর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ভূমিহীনদের মধ্যে মতি মালা নাথ ও মাম্পি নাথ জানান,স্থানীয় পেকুছড়া গ্রামে তাদের আত্মীয়স্বজনদের কথায় কাঞ্চনপুর থেকে তারা সেখানে আসেন।তারা কখনো ভাবতেও পারেননি তাদের সাথে এমন ঘটনা হবে।ভূমিহীন পনেরোটি পরিবারে প্রায় পঞ্চাশ জন সদস্যদের মধ্যে অনেকেই ভোট দিয়ে আসছেন দীর্ঘ বছর বছর ধরে।কিন্তু তাদের কপালে আজও জোটেনি মাথা গোঁজার মতো এক টুকরো ভূমি।ভোট আসে ভোট যায় ভূমিহীনরা অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।এরমধ্যে অনেকেই কোলের শিশু নিয়ে অসহায়।তাদের দাবি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও খোঁজ রাখেন না তাদের।তাই তারা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দৃষ্টি গোচর করে আবেদন জানান যে,মাথা গোঁজার মতো সামান্য ভূমি যেন তাদেরকে দেওয়া হয়।কেননা মিজোরাম থেকে আসা শরণার্থীরা যদি সরকারের সবধরনের সুযোগ সুবিধা পায় তাহলে তারা কেন পাবেন না।এদিকে স্থানীয় বনদপ্তরের এমন কান্ডে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভূমিহীন পরিবারের সদস্যরা।রবিবার সকালে এবিষয়টি জানাজানি হতেই বন দপ্তরের ভূমিকায় গোটা পানিসাগর মহকুমা জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।